মহাসড়ককে নিরাপদ যাতায়াত, যানজট ও অপরাধমুক্ত রাখার জন্য তৎপরতা শুরু করছে প্রশাসন। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক যাতে ঈদযাত্রায় যানজটমুক্ত থাকে সে জন্য নারায়ণগঞ্জ জেলা ও পুলিশ প্রশাসন কাজ শুরু করেছে।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইলে দ্রুতগতির লেনে ঢাকাগামী দূরপাল্লার গাড়ি দাঁড় করিয়ে যাত্রী নামানোর কারণে গত ১১ দিনে ১৫৪টি বাসের নামে মামলা করা হয়েছে। সেইসাথে ১০টি বাসের কাগজপত্রে ত্রুটি থাকায় আটক করেছেন হাইওয়ে পুলিশ শিমরাইল ফাঁড়ির সদস্যরা। এদিকে ঈদকেন্দ্রিক ঢাকা-চট্টগ্রাম ও সিলেট মহাসড়কের নারায়ণগঞ্জের সীমানা এলাকায় যানজটের জন্য ২৯ স্থান ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে হাইওয়ে পুলিশ।
জানা গেছে, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের শিমরাইলে দ্রুতগতির লেনে বাস দাঁড়িয়ে যাত্রী নামানো অব্যাহত রেখেছেন চালকরা। মহাসড়কের মধ্যে যাত্রীরা নেমে ৫ ফুট উঁচু সড়ক বিভাজক ডিঙিয়ে পার হচ্ছেন। তাদের থামানো যাচ্ছে না।
এদিকে, মহাসড়কের গুরুত্বপূর্ণ শিমরাইল মোড়ে দুপুরে হাইওয়ে পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি নাবিলা জাফরিন এবং নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো: মাহমুদুল হক, জেলা পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল, র্যাব-১১ এর সিইও লেফটেন্যান্ট কর্নেল সৈয়দ তানভির মাহমুদ পাশা এবং নারায়ণগঞ্জ সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী শাহানা ফেরদৌস, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দেদারুল ইসলাম সরেজমিন লেন সমস্যার চিত্র দেখতে আসেন। আসন্ন ঈদুল ফিতরের সময় মহাসড়কে ঘরমুখো মানুষের যাতে দুর্ভোগ পোহাতে না হয় সে বিষয়টি নিয়েও আলোচনা হয়।
এ সময় সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি আবু বক্কর সিদ্দিক, জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ওসি আমিনুল ইসলাম ও শিমরাইল হাইওয়ে পুলিশের টিআই এ কে এম শরীফুদ্দিনসহ অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। জনসাধারণের জানমালের নিরাপত্তার স্বার্থে এবং ভোগান্তি কমাতে মহাসড়কের সড়ক বিভাজকের ওপর কাঁটাতারের বেড়া দেয়ার জন্য হাইওয়ে পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি নাবিলা জাফরিন নারায়ণগঞ্জ সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী শাহানা ফেরদৌসকে অবহিত করেন।
হাইওয়ে পুলিশের শিমরাইলের ইনচার্জ এ কে এম শরফুদ্দিন বলেন, মহাসড়কের সড়ক বিভাজকে জনস্বার্থে এবং যাত্রীসাধারণের জানমালের নিরাপত্তার স্বার্থে কাঁটাতরের বেড়া দিয়ে আটকিয়ে দেয়ার জন্য গত ১৭ মার্চ লিখিত একটি চিঠি দিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ সড়ক অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী শাহানা ফেরদৌসকে।
হাইওয়ে পুলিশের শিমরাইল ক্যাম্পের ইনচার্জ টিআই এ কে এম শরফুদ্দিন বলেন, জনসাধারণের জানমালের নিরাপত্তা স্বার্থে দ্রুতগতির লেনে কোনো বাস থামিয়ে যাত্রী যাতে নামাতে না পারে সে জন্য আমরা সজাগ রয়েছি। গত ১১ মার্চ থেকে আমরা অভিযান চালাচ্ছি। গত ১১ দিনে ১৫০টি বাসের নামে মামলা করেছি এবং কয়েটি গাড়ির কাগজপত্র না থাকায় আটক করেছি।
এ অভিযান অব্যাহত থাকবে জানিয়ে তিনি আরো বলেন, লোকাল লেন সম্পূর্ণ পরিষ্কার রেখেছি যাতে ঢাকাগামী দূরপাল্লাগামী বাস শিমরাইলে এসে লোকাল লেনে যাত্রীদের নিরাপদে নামাতে পারে সে ব্যবস্থা করেছি। এদিকে ঈদে যানজটের জন্য মহাসড়কগুলোর ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ৪৮, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে ৪১ স্পট ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে পুলিশ। এর মধ্যে নারায়ণগঞ্জের ঢাকা-সিলেট, ঢাকা- চট্টগ্রাম মহাসড়কের যে অংশটুকু যানজটের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ চিহ্নিত করা হয়েছে সেগুলোতে কিভাবে যানজট মোকাবেলা করা হবে সে ব্যাপারে ইতোমধ্যে জেলা ট্রাফিক বিভাগ কাজ শুরু করেছে। নারায়ণগঞ্জ জেলার এই দু’টি মহাসড়কের অংশে ২৯টি স্পট ঝুঁকিপূর্ণ চিহ্নিত করেছে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রণালয়ের নথি বলছে, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের নারায়ণগঞ্জে যানজটের সম্ভাব্য জায়গা হলো নারায়ণগঞ্জে কাঁচপুর ব্রিজের পূর্ব ঢাল, গ্রিন লাইন ইউ টার্ন, মদনপুর মোড়, কেওডালা ইউ টার্ন, কনকা ইউ টার্ন, মোগড়াপাড়া, মেঘনা টোল প্লাজা, সাইনবোর্ড বাসস্ট্যান্ড, সানারপাড় ইউ টার্ন, মৌচাক স্ট্যান্ড, দশতলা ভবন, শিমরাইল বাসস্ট্যান্ড, আদমজী রোড।
ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের কাঁচপুর মোড় ও পশ্চিম ঢাল, যাত্রামুড়া ব্রিজ, তারাব বাসস্ট্যান্ড, বরাব বাসস্ট্যান্ড, সুলতানা কামাল ব্রিজ, রূপসী বাসস্ট্যান্ড, বরপা বাসস্ট্যান্ড, পাকিস্তানি (এসিএস) গার্মেন্টস, রবিন টেক্স গার্মেন্টস, ভুলতা মোড়, গোলাকান্দাইল মোড়, বান্টি বাজার, পাঁচরুখী, হুনপাড়া, পুরিন্দা বাজার।
সূত্র: নয়া দিগন্ত
এই নিউজ পোর্টাল এর কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি ও দণ্ডনীয় অপরাধ।