• শুক্রবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:৫১ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
বিজয়ের মাসে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা কর্মসূচি প্রযুক্তি সুবিধাও অন্তর্ভুক্তিমূলক হওয়া আবশ্যক -উপাচার্য ড. মশিউর রহমান  জগন্নাথ বিশ্বিবদ্যালয়ের নবনিযুক্ত উপাচার্যকে  জাতীয় বিশ্বিবদ্যালয় উপাচার্যের অভিনন্দন পাবনায় এই প্রথম অ্যামেচার রেডিও’র লাইসেন্স পেল গোলাম রাব্বি আওয়ামী লীগ মনোনীত মনোনয়ন জমা দিয়েছেন আ.স.ম ফিরোজ,স্বতন্ত্র ভাবে হাসিব আলম তালুকদার কাজিপুরে মেয়র- কাউন্সিলর সংঘর্ষে দুজনেই মারাত্মক আহত সিরাজগঞ্জ-১ এমপি হতে চায় ৭ জন রায়গঞ্জে সরকারী ভাবে ধান চাল সংগ্রহ কার্যক্রমের শুভ উদ্বোধন  সিরাজগঞ্জ-৬ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিলেন চয়ন ইসলাম সিরাজগঞ্জ সদরে দিনব্যাপী  পাট উৎপাদন কারী চাষীদের প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত কাজিপুরে ৪ হাজার কৃষকের মাঝে কৃষি প্রণোদনা বিতরণ শুরু কুড়িগ্রাম সদর উপজেলায় ইএসডিও সীড্স প্রকল্পের সমাপনী সভা অনুষ্ঠিত বেতাগীতে বিভাগীয় কমিশনারের মতবিনিময় ও মডেল মসজিদ পরিদর্শন উল্লাপাড়ায় ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক  কৃষকদের মাঝে ধান বীজ ও সার বিতরণ উল্লাপাড়ায় আ’লীগ মনোনীত এমপি প্রার্থী শফি’কে শুভেচ্ছা জানাতে মানুষের ঢল শাহজাদপুরে ফুলেল শুভেচ্ছায় সিক্ত চয়ন ইসলাম সিরাজগঞ্জ-২ আসনে  হেনরীর মনোনয়নে ২ মণ মিষ্টি বিতরণ করেন আঃলীগনেতা  হাজী মোঃ আব্দুস সাত্তার  রাজশাহী-১ ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হচ্ছেন: মাহিয়া মাহি উল্লাপাড়ায় বাসের নিচে চাপা পড়ে মোটরসাইকেল চালকের মৃত্যু  সিরাজগঞ্জে ব্র্যাকের সংযোগ ওয়েবসাইটের  পরিচিতি  ও ব্যবহার বিষয়ক আলোচনা  অনুষ্ঠিত 

আশরাফুল হক, লালমনিরহাট:

ঈদ আনন্দ নেই তিস্তাপাড়ের বানভাসি মানুষের!

কলমের বার্তা / ১৮০ বার পড়া হয়েছে।
সময় কাল : মঙ্গলবার, ৩ মে, ২০২২

চৈত মাসের বান(বন্যা) আর বৈশাখের হুড়কা(ঝড়) বাতাসে খাইলো হামার এবারকার (এ বছরের) ঈদ। চৈত মাসের বান ও বৈশাখে হুড়কা বাতাস আর এত বড় বড় শিলাবৃষ্টি জীবনে কোন দিন দেখং নাই বাহে। ঈদের প্রস্তুতি কেমন জানতে চাইলে লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা ইউনিয়নের গোবর্দ্ধন গ্রামের কৃষক মোক্তার আলী(৭০) এসব কথা বলেন।

মোক্তার আলী জানান, তিস্তার বাম তীরে বসবাস করা প্রতিটি পরিবার একাধিকবার তিস্তা নদী ভাঙনের শিকার হয়েছেন। বসতভিটার সাথে বিলিন হয়েছে ফসলি জমি। শুস্কমৌসুমে তিস্তার বুকে জেগে উঠা বালু চরে কঠোর পরিশ্রম করে ধান, আলু, তামাক, পিয়াজ, রসুন, ভুট্টা, বাদামসহ নানান জাতের ফসল বুনেন চরাঞ্চলের কৃষকরা। শুস্ক মৌসুমের এ ফসল থেকে বন্যাসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগের জন্য সঞ্চয় করেন তারা। শুধু তাই নয়, মেয়ের বিবাহ ও সকল উৎসব চলে এই ফসলে। মুলত শুস্ক মৌসুমের ৩/৪ মাসের ফসলে চলে তাদের পুরো বছর। তাই সর্বস্য বিনিয়োগ করে শুস্ক মৌসুমে ফসল বুনেন তিস্তা চরাঞ্চলের মানুষ।

প্রতি বছর শুস্ক মৌসুমের এসব ফসল বর্ষার আগেই ঘরে তুলেন চাষিরা। কিন্তু এ বছর চৈত্রি মাসে হঠাৎ বৃষ্টি আর উজানের পাহাড়ি ঢলে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেয়ে অসময়ে বন্যার সৃষ্ঠি করে। অসময়ের এ বন্যার পানিতে ডুবে নষ্ট হয় কৃষকদের সর্বস্য বিনিয়োগে উৎতি ফসল। এতেই শেষ নয়, বৈশাখ মাসের শুরু থেকে প্রায় প্রতি দিনই বৃষ্টি হচ্ছে তিস্তা পাড়ে। এ মাসেই কয়েক দফায় আঘাত হেনেছে কালবৈশাখী ঝড়। এ ঝড়ে লন্ডভন্ড হয়েছে বন্যার রেখে যাওয়া উচ্ছিষ্ট ফসল। লন্ডভন্ড হয়েছে ঘর বাড়ি। এক দিকে ফসলহানী অন্যদিকে কালবৈশাখীর ছোবলে ভেঙেছে আশ্রয়স্থল। সব মিলে নিদারুন কষ্টে চলছে তিস্তা চরাবাসীর জীবন জিবিকা।

প্রকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলোতে নেই ঈদের কোন আমেজ। তাদের মাঝে শুধু হতাশা আর হাহাকার। ঈদ উৎযাপন নয় বরংচ আসন্ন বন্যা মোকাবেলা নিয়ে দারুন চিন্তিত তিস্তা পাড়ের মানুষ। প্রতি বছর বন্যার জন্য যা সঞ্চিত থাকে। তা এ বছর বন্যাই নষ্ট করেছে।

ঈদ প্রস্তুতি কেমন জানতে চাইলে গোবর্দ্ধন গ্রামের মোক্তার আলী বলেন, হামার এবারকার ঈদ খাইছে হুড়কা আর বানে। সব কিছু বিক্রি করি ধান,তামাক, ভুট্টা আর পিয়াজ-রসুন আবাদ করেছি। পাকা পাকা অবস্থায় চৈত মাসের বানে ডুবি সব নষ্ট হইছে। যেটুকু ছিল তা শিলাবৃষ্টি আর হুড়কাতে শেষ। এখন যে খামো তার বুদ্ধি নাই। ফির যে বান আসিবার নাগছে তখন কি খামো। এগুলো চিন্তায় এবার ঈদ হামার এত্তি নাই বাহে। সরকারী ভাবেও কোন খোজ খবর নেয় না কেউ। কোন সহায়তাও হামরা পাই নাই।

তার কথার সাথে যুক্ত হয়ে মফিজ উদ্দিন বলেন, উচু জমির আবাদের চেয়ে চরাঞ্চলের জমির ফলন ভাল হয়। দ্বিগুন উৎপাদন হয়। একবারের আবাদ দিয়ে সারা বছর চলি। এই আবাদে বিয়াও বাদি(বিয়ে সাদি), ঈদ, রোজা সউগ চলে বাহে। সেই আবাদ এবার বানের পানিতে ডুবি গেইছে। তখনে হামার ঈদও মাটি(নষ্ট) হইছে বাহে।

শুক্রবার(২৯ এপ্রিল) রাতে লালমনিরহাট জেলায় আঘাত হানে কালবৈশাখী ঝড়। এতে ৫টি উপজেলায় ক্ষতিগ্রস্থ হয়। ৪টি উপজেলায় তালিকা অনুযায়ী ক্ষতিগ্রস্থের মাঝে সরকারী ভাবে ত্রাণ বিতরন করেন জেলা প্রশাসক আবু জাফর। শুধু মাত্র আদিতমারী উপজেলায় জনপ্রতিনিধিরা তালিকা না দেয়ায় ক্ষতিগ্রস্থদের সরকারী ভাবে সহায়তা দিতে পারেনি উপজেলা প্রশাসন।

আদিতমারীর সারপুকুর ইউনিয়নের পাঠানটারী গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে রিক্সাচালক রেয়াজুলের একমাত্র ঘরটি ভেঙে গেলে খোলা আকাশ র নিচেই মানবেতর জীবন যাপন করছেন। একই গ্রামের মনিরের ছেলে হাকিমের দুই ঘর লন্ডভন্ড হয়েছে কালবৈশাখীর ছোবলে। তারাও তিন দিন ধরে খোলা আকাশের নিচে। সহায়তা তো দুরের কথা কেউ দেখতেও আসেনি তাদের।

ক্ষতিগ্রস্থ আব্দুল হাকিম বলেন, হামার আরও ঈদ আছে ভাই। থাকার দুইটা ঘর। দুইটাই ভাঙ্গি গেছে। তিন দিন ধরে এভাবে পড়ে আছি। সাহায্য তো দুরের কথা কেউ দেখতেও আসলো না ভাই।

আদিতমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও) জি আর সারোয়ার বলেন, ক্ষতিগ্রস্থদের ছবিসহ তালিকা করতে চেয়ারম্যানদেরকে বলা হয়েছে। কিন্তু তারা তালিকা না দেয়ায় ঈদের আগে সহায়তা দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। জেলার বাকী উপজেলাগুলোতে বিগত দিনের তালিকা ও বরাদ্ধ থেকে সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

52
Spread the love


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর