বৃহস্পতিবার, ৩০ মার্চ ২০২৩, ১১:৪০ অপরাহ্ন

একাত্তরের জেনোসাইডকে স্বীকৃতি দিল ‘জেনোসাইড ওয়াচ’

কলমের বার্তা নিউজ ডেস্ক :
  • সময় কাল : শুক্রবার, ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২২
  • ৬০ বার পড়া হয়েছে।

বাংলাদেশে পাকিস্তানিদের ওই বর্বরতার ৫০ বছর পূর্তিতে জেনোসাইড ওয়াচের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি গ্রেগরী এইচ স্ট্যানটন বৃহম্পতিবার তাদের ওয়েবসাইটে এই ঘোষণা দেন। পাকিস্তানিদের শোষণ বঞ্চনার ইতিহাস এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাংলাদেশের মানুষের মুক্তি সংগ্রামের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে সেখানে বলা হয়, জেনোসাইড ওয়াচ এই স্বীকৃতি দিচ্ছে যে, পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় বাঙালিদের ওপর যেসব অপরাধ করেছে, তার মধ্যে ছিল ‘জোনোসাইড, মানবতাবিরোধী অপরাধ এবং যুদ্ধাপরাধ’।

সেসব অপরাধ ও জেনোসাইডের ঘটনাকে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকার করে নিতে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে প্রস্তাব পাসের আহ্বান জানিয়েছে জেনোসাইড ওয়াচ। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও পাকিস্তানসহ জাতিসংঘের সকল সদস্য দেশকে পাকিস্তানি বাহিনীর করা সেসব অপরাধকে ‘জোনোসাইড, মানবতাবিরোধী অপরাধ এবং যুদ্ধাপরাধ’ হিসেবে স্বীকার করে নিতে আহ্বান জানানো হয়েছে।

পাশাপাশি সেই জেনোসাইডে নেতৃত্বদাতাদের মধ্যে যারা এখনও জীবিত, তাদের বিচারের মুখোমুখি করতে জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলোর প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে জেনোসাইড ওয়াচের ঘোষণায়। ৫০ বছর আগের সেসব ঘটনার জন্য বাংলাদেশকে ক্ষতিপূরণ দিতে পাকিস্তান সরকারের প্রতি আহ্বান এসেছে সেখানে। শহীদ সাংবাদিক সিরাজুদ্দীন হোসেনের ছেলে তৌহীদ রেজা নূর এই স্বীকৃতির জন্য গত বছরের ডিসেম্বরে জেনোসাইড ওয়াচের কাছে আবেদন করেছিলেন। তার আবেদনের প্রেক্ষিতেই এ স্বীকৃতি এলো।

তৌহিদ রেজা নূর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের সময়ে সংঘটিত জেনোসাইডের এই আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আমাদের জাতির জন্য একটি বড় অর্জন। এর সাথে জড়িত থাকতে পেরে আমি সত্যিই গর্বিত।” স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে এই স্বীকৃতির মধ্য দিয়ে একাত্তরের পাকিস্তানিদের হত্যাযজ্ঞ আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জনের পথযাত্রায় আরেক ধাপ এগিয়ে গেল বলে মনে করেন তিনি।

“কোনো আন্তর্জাতিক সংস্থা আসলে হুট করে এ ধরনের স্বীকৃতি দেয় না, অনেক যাচাই-বাছাইয়ের পরে তারা এই বড় সিদ্ধান্তটি নিয়েছে। এজন্য নিয়মিত সংস্থাটি আমার সাথে যোগাযোগ করেছে, তাদের নানা ধরনের ম্যাটেরিয়াল, ডকুমেন্ট দিতে হয়েছে। দেশের এ ধরনেরর স্বীকৃতি অনেক আনন্দের।” বাঙালির মুক্তির আন্দোলনের শ্বাসরোধ করতে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে এ দেশের নিরস্ত্র মানুষের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী। ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নামের সেই অভিযানে কালরাতের প্রথম প্রহরে ঢাকায় চালানো হয় গণহত্যা।

২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে পাকিস্তানি বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হওয়ার আগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে যান; শুরু হয় বাঙালির প্রতিরোধ পর্ব। নয় মাসের যুদ্ধে ত্রিশ লাখ শহীদের আত্মদান, আড়াই লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমহানি এবং জাতির অসাধারণ ত্যাগের বিনিময়ে ১৬ ডিসেম্বর অর্জিত হয় চূড়ান্ত বিজয়। বিশ্বের মানচিত্রে বাংলাদেশ নামের একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রের অভ্যুদয় ঘটে।

পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সেই বর্বর হত্যাযজ্ঞে নিহতদের স্মরণে ২৫ মার্চ ‘গণহত্যা দিবস’ হিসেবে পালনের প্রস্তাব ২০১৭ সালে জাতীয় সংসদে গৃহীত হয়। তখন থেকেই এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির  দাবি জানিয়ে আসছে বাংলাদেশ। চলতি বছরের প্রথম দিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠান ‘লেমকিন ইনস্টিটিউট ফর জেনোসাইড প্রিভেনশন’ একাত্তরে বাংলাদেশিদের উপরে পাকিস্তানিদের নির্মম হত্যাযজ্ঞকে ‘জেনোসাইড’ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।

4
Spread the love

নিউজটি শেয়ার করুন....

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ বিভাগের আরোও খবর
এই নিউজ পোর্টাল এর কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি দণ্ডনীয় অপরাধ
Design & Developed by Freelancer Zone
themesba-lates1749691102