কাজিপুর (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধিঃকাজিপুর উপজেলার সোনামুখী পূর্ব পাড়ায় স্থাপিত আশ্রায়ন প্রকল্পের একটি ঘরে সোনামুখী ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামের আমির হোসেনের ছেলে নূরুল ইসলাম (৬০) নামে বরাদ্দ দেয় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। বিধিবহির্ভূতভাবে বরাদ্দ পাওয়া ঘরে তিনি
পরিবার নিয়ে না থাকলেও হর হামেশাই বাইরের লোকজনের উপস্থিতি টের পান আশ্রায়ণের বাসিন্দারা।
গত শনিবার পহেলা জুন সকাল দশটায় অসামাজিক কার্যকলাপে লিপ্ত গোপালপুর গ্রামের মৃত বিক্রম আলীর ছেলে আব্দুস সাত্তার (৪৫) এবং একই গ্ৰামের সালেহাকে(ছদ্মনাম) (৩৫) হাতেনাতে ধরে ফেলে আশেপাশের লোকজন। বিষয়টি ধামাচাপা দিতে ইউপি চেয়ারম্যান শাজাহান আলী ও তার লোকজন এসে ভয়ভীতি এবং বিচারের কথা বলে তাদেরকে ছাড়িয়ে নিয়ে যায়। এই সময় কাজিপুর থানার এসআই এনামুল সিভিল ড্রেসে সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
প্রত্যক্ষদর্শী মুন্নাফ, দুদুমিয়া, আবু তাহের, রুবেল ইসলাম, আল মাহমুদ জানান, নূরুল ইসলাম একজন অবস্থাশালী লোক, গুচ্ছ গ্ৰামে ঘর পাওয়ার নিয়মের মধ্যে আসেনা, এখানে সে থাকেনা। সেই ঘরে দীর্ঘদিন ধরে প্রভাব বিস্তার করে যা তা করে আসছে। আমরা যারা এখানে ছেলে মেয়ে নিয়ে বসবাস করি, সবাই ভূমিহীন ও দরিদ্র পরিবার। এখানকার পরিবেশ নষ্ট হওয়ার চরম পর্যায়ে যাওয়ায় ঐদিন তাদেরকে ধরে ফেলি এবং ঘরে আটকে রেখে থানা ও সোনামুখী ইউপি চেয়ারম্যান শাহজাহান আলীকে জানাই। বিকেলের দিকে চেয়ারম্যান ও তার লোকজন এসে আমাদেরকে গালমন্দ করে শাসিয়ে ছেলে এবং মেয়েকে নিয়ে যায়। ইতোপূর্বে একটি ঘরে সোনামুখীর তারিকুল নামের একজন পশু চিকিৎসক অসামাজিক কার্যকলাপ অবস্থায় ধরা পড়েছিল, চেয়ারম্যান বিচার করার কথা বলে ছাড়িয়ে নিয়ে যায়, আজও কোন বিচার পাই নাই।
এই বিষয়ে সোনামুখী ইউপি চেয়ারম্যান শাহজাহান আলী ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে অভিযুক্ত দুই জনকে আমার হেফাজতে নিয়ে আসি, আগামী দুই একদিনের মধ্যেই জনসম্মুখে বিচার করা হবে, ঘরে তালা দেয়া হয়েছে। ঘর মালিক নুরুল ইসলাম বলেন, সাত্তার ঘটনার আগের দিন আমার কাছ থেকে চাবি নেয়, ঘটনার খবর পেয়ে এসে দেখি ঘরে মহিলাসহ সাত্তারকে আটকে রেখেছে।
আশ্রায়ণের বাসিন্দা রুবেল জানান, থানায় বিষয়টি নিয়ে ফোন দিলে পরবর্তীতে এসআই এনামুল আমাকে ফোন দিয়ে ভয়ভীতি দেখায় এবং বিকেলে চেয়ারম্যানের সাথে উপস্থিত ছিল। অভিযোগ অস্বীকার করে এসআই এনামুল বলেন, রুবেলকে আমি ফোন দেয় নাই এবং ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়েছিলাম অনেক পরে। থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম বলেন, ৯৯৯ ফোন করেছিল একজন, লোক পাঠিয়ে ছিলাম, ঘটনা চেয়ারম্যান সাহেব মিমাংসার দায়িত্ব নেয়ায় অভিযোগ, জিডি, মামলা কিছুই করা হয়নি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন বলেন, বিষয়টি অবগত আছি, আশ্রায়ন প্রকল্প মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর একটি মহৎ প্রকল্প। এখানে কোন প্রকার অসামাজিক কার্যকলাপ বরদাস্ত করা হবে না।
এই নিউজ পোর্টাল এর কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি ও দণ্ডনীয় অপরাধ।