চলমান চুক্তির বাইরে চলতি বছর কাতার থেকে আরও ১০ লাখ মেট্রিক টন এলএনজি (তরল প্রাকৃতিক গ্যাস) আমদানি করতে চায় বাংলাদেশ। এজন্য প্রয়োজনে একটি সাইট লেটার চুক্তি করা হবে।
মঙ্গলবার কাতারের দোহায় হোটেল শেরাটনে কাতারের জ্বালানি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী সা’দ শেরিদা আল কাবিরের সাথে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে এই আগ্রহের কথা জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
২০১১ সালের ১৬ জানুয়ারি কাতরের জ্বালানি ও শিল্প মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয়। সমঝোতা স্মারকের আলোকে ২০১৭ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর বার্ষিক ১৮ থেকে ২৫ লাখ টনএলএনজি সরবরাহের জন্য ১৫ বছর মেয়াদী চুক্তি স্বাক্ষর করে দুই দেশ।
২০২২ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত ১৩৭টি কার্গোতে ৮8 লাখ মেট্রিক টন এলএনজি ক্রয় করেছে পেট্রোবাংলা। কিন্তু সাইড লেটার চুক্তির মাধ্যমে কাতার থেকে বছরে আরও ১০ লাখ টন এলএনজি আমদানি করতে চায় বাংলাদেশ।
কাতারের জ্বালানি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী সা’দ শেরিদা আল কাবির বাংলাদেশের প্রস্তাব আন্তরিকতার সাথে গ্রহণ করেছেন। একইসঙ্গে কাতার গ্যাস ও কাতার এনার্জিকে পেট্টোবাংলার সাথে বসে প্রস্তাবিত বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করার নির্দেশ দেন। বুধবার এ সংক্রান্ত আলোচনা কাতারে অনুষ্ঠিত হবে।
দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে কাতারের পক্ষে নেতৃত্ব দেন কাতারের জ্বালানি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী সা’দ শেরিদা আল কাবির এবং বাংলাদেশের নেতৃত্ব দেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মাঝে কাতার গ্যাসের সিইও শেখ খালিদ বিন খলিফা আল-থানি, কাতার এনার্জির এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট (ইভিপি) জসিম আল মারজুকি, পেট্টোবাংলার চেয়ারম্যান নাজমুল আহসান ও রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাভেদ চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।
বর্তমানে দিনে গ্যাসের মোট চাহিদা ৩৭০ কোটি ঘনফুট। এর মধ্যে দেশে উৎপাদন হয় ২৩০ কোটি ঘনফুট। আর ঘাটতি থাকে প্রায় ১৪০ কোটি ঘনফুট গ্যাস। এ ঘাটতির পূরণ হচ্ছে আমদানি করা এলএনজির মাধ্যমে। দিনে ৮৫ থেকে ৯০ কোটি ঘনফুট গ্যাস এলএনজি থেকে পাওয়া যায়।
এলএনজি আমদানিতে সরকার দীর্ঘ মেয়াদে দুটি চুক্তি করে। একটি কাতারের সঙ্গে, অন্যটি ওমানের সঙ্গে। এই দুটি দেশ ছাড়াও খোলাবাজার থেকে এলএনজি ক্রয় করে বাংলাদেশ। আন্তর্জাতিক বাজারে দাম চড়া হওয়ায় কাতার ও ওমান চুক্তির সর্বনিম্ন হারে গ্যাস সরবরাহ করে। কারণ দীর্ঘ মেয়াদী চুক্তিতে দাম কিছুটা কম পড়ে। ফলে খোলা বাজার থেকেই বেশি করে গ্যাস কিনতে হচ্ছে বাংলাদেশকে। যাতে পেট্রোবাংলার লোকসান বাড়ছে। তাই বিভিন্ন দেশ থেকে দীর্ঘমেয়াদী চুক্তিতে গ্যাস সরবরাহের পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।