সিরাজগঞ্জের কামারখন্দে বেড়েছে বিদ্যুতের মিটার চুরি। গত শনিবার ( ১ জানুয়ারি ) রাতে কামারখন্দ থানার ৫শ’ মিটার এলাকার মধ্যেই চুরি হয়েছে ১৩টি মিটার অন্য ৪টি চর ধোপাকান্দি এলাকায়। চুরি যাওয়া ১৭টি মিটারই চালকলের। চাল কলগুলোর মিটার চুরি হওয়ায় বন্ধ রয়েছে বিদ্যুৎ সংযোগ। এতে ধান সিদ্ধ করা থেকে শুরু করে চাল তৈরীর সকল প্রক্রিয়া বন্ধ রয়েছে। এতে বিপাকে পড়েছেন চালকল মালিকরা।
চালকল মালিক সাগর আলী জানান, গত দেড় বছর আগে মিটার চুরি হয়েছিল। আবারও হঠাৎ করে মিটার চুরি বেড়েছে। মিটার চুরি করে নেয়ার পর চোর চক্র মিটার ফ্রেমে টোকেনে একটি বিকাশ নম্বর রেখে যায়। সেই নম্বরে চুরি যাওয়ার পরদিন সকালে যোগাযোগ করা হলে চক্রের এক সদস্য জানান তারা এখন ঘুমাচ্ছেন বিকেলে ফোন দিতে বলেন। তিনি আরও জানান, বিকেলে ফোন করা হলে আমার তিনটি মিটারের জন্য মিটার প্রতি ৬ হাজার টাকা দাবি করেন। পরে প্রতিটি মিটারে ৩ হাজার করে ৯ হাজার টাকা দিলে চালকলের পাশের একটি বাড়ীর পাশে বালুর ভিতরে মিটারগুলো রাখা আছে বলে জানায় চোর চক্রের সদস্য। পরে সেখান মিটার উদ্ধার করা হলেও বিদ্যুতের সংযোগ না পেয়ে বিদ্যুৎ অফিসে ঘুরতে হচ্ছে।
মেসার্স আজাহার চালকলের ম্যানেজার মো. জিন্নাহ জানান, বিদ্যুতের লাইন চালু থাকা অবস্থায় সাধারণ মানুষের পক্ষে মিটার চুরি করা সম্ভব নয়। পল্লী বিদ্যুতের লাইনম্যানদের সাথে বাহিরের শ্রমিক যারা কাজ করেন তারা মিটার চুরির সাথে সম্পৃৃক্ত থাকতে পারে বলে ধারণ করা হচ্ছে। বিদ্যুৎ না থাকায় ধান থেকে চাল তৈরী করার সকল প্রক্রিয়া বন্ধ রয়েছে। এতে চাল তৈরী করতে না পেরে বিপাকে পড়েছি।
কর্ণসূতি গ্রামের চালকল মালিক রফিকুল ইসলাম জানান, এর আগেও মিটার চুরি হয়েছে। আবারও শুরু হয়েছে মিটার চুরি। যদিও আমার মিটার অক্ষত আছে তবুও আতঙ্কে আছি কখন যেন আমার মিটার চুরি হয়ে যায়। মিটার চুরি ঠেকাতে সারা রাত পাহাড়া দেয়।
কামারখন্দ সার্কেলের সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার শাহীনুর কবীর জানান, মিটার চুরির বিষয়টি নতুন কিছু নয়। এর আগেও মিটার চোর চক্রের চারজন সদস্যকে ঢাকার সাভার থেকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের গ্রেফতার করার পর এই এলাকায় গত প্রায় দুই বছরে মিটার চুরির কোন ঘটনা ঘটেনি। সাম্প্রতিক মিটার চুরির অভিযোগ পেয়েছি। পূর্বের মত এবারও আধুনিক পদ্ধতি ব্যবহার করে চোর চক্রের সদস্যদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। ধারণা করা হচ্ছে খুব অল্প সময়ের মধ্যে তাদের গ্রেফতার করতে পারবো।
সিরাজগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) অখীল কুমার সাহা জানান, কামারখন্দের ১৭টি মিটার চুরির ঘটনায় থানায় এফ আই আর দায়ের করা হয়েছে। মিটার চুরির বিষয়টি খতিয়ে দেখতে পুলিশকে অনুরোধ জানানো হয়েছে। পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির পক্ষ থেকে মিটার চুরি রোধে মাইকিং করা সহ লিফলেট বিতরণ ও গ্রাহকদের মিটার পাহাড়া দেয়ার জন্য বলা হচ্ছে।