শনিবার, ০১ এপ্রিল ২০২৩, ০৪:২৫ অপরাহ্ন

খাদ্য মজুদ ২০ লাখ টন ছাড়িয়েছে

কলমের বার্তা নিউজ ডেস্ক :
  • সময় কাল : মঙ্গলবার, ২৫ জানুয়ারি, ২০২২
  • ৯৪ বার পড়া হয়েছে।

সরকারের গুদামে রেকর্ড পরিমাণ খাদ্য মজুদ গড়ে উঠেছে। বর্তমানে মজুদের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২০ লাখ ৭ হাজার ৪৪৫ মেট্রিক টন। এই প্রথম সরকারী মজুদ ২০ লাখ টনের বেশি। এর আগে রেকর্ড মজুদ ছিল ২০১৯ সালের অক্টোবরে ১৯ লাখ ৭৫ হাজার ৬৩৮ মেট্রিক টন। বর্তমান মজুদ খাদ্য নিরাপত্তা বিষয়ে সরকারকে সুদৃঢ় অবস্থানে নিয়ে এসেছে।

স্বস্তিদায়ক মজুদ গড়ে উঠলেও বাজারে চালের দাম বেড়েই চলেছে। অসাধু ব্যবসায়ীদের কারসাঝিতে বাজারে চালের দাম বেড়েই চলেছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।এ বিষয়ে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার জনকণ্ঠকে বলেন, আমরা দেশের ১৬ কোটি মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য কাজ করে যাচ্ছি। এ লক্ষ্যে খাদ্য মজুদের পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে। এটি সরকারের নির্বাচনী অঙ্গীকার বাস্তবায়নের একটি প্রতিফলন। চালের বাজার নিয়ন্ত্রণের বিষয় তিনি বলেন, আমরা দ্রুত বেসরকারী পর্যায়ে চাল আমদানির অনুমতি দেব। এছাড়া চালের দাম বাড়ছে কেন? এ বিষয়ে কারা জড়িত সে বিষয়ে তদন্ত হচ্ছে। বাজার অস্থিতিশীল সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সব মিলিয়ে বর্তমানে খাদ্য মজুদের পরিমাণ ২০ লাখ ৭ হাজার ৪৪৫ মেট্রিক টন। এর মধ্যে গুদামে চাল রয়েছে ১৬ লাখ ৭৯ হাজার ৩৫৮মেট্রিক টন। আর গম মজুদের পরিমাণ ৩ লাখ ২৮ হাজার ৮৭ মেট্রিক টন। খাদ্য মজুদের এই পরিমাণ বাংলাদেশের ইতিহাসে নতুন রেকর্ড। এর আগে সর্বোচ্চ মুজদ ছিল ১৯ লাখ ৭৫ হাজার ৬৩৮ মেট্রিক টন। প্রত্যেকটি গুদাম প্রায় পূর্ণ। গত বছরের তুলনায় এখন মজুদ দুই লাখ টনের বেশি। ২০১৯ সালের এই মজুদ ছিল তখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ রেকর্ড। এই রেকর্ড ভেঙ্গে মজুদে এবার নতুন রেকর্ড তৈরি হয়েছে। এ প্রসঙ্গে মন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, দেশে খাদ্য পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে মজুদ বাড়ানো হয়েছে। আগামীতে বোরো মৌসুমে মজুদ আরও বাড়বে বলে আশা করি।

সূত্র জানায়, বর্তমানে দেশে মোট খাদ্য মজুদের ধারণ ক্ষমতা রয়েছে ২১ লাখ মেট্রিক টন। এছাড়া আরও কিছু গুদাম নির্মাণ করা হচ্ছে। এগুলোর নির্মাণ কাজ সমাপ্ত হলে ধারণ ক্ষমতা আরও এক লাখ মেট্রিক টন বাড়বে। সে ক্ষেত্রে দেশে খাদ্যশস্য ধারণের ক্ষমতা বেড়ে দাঁড়াবে ২১ লাখ মেট্রিক টনে। সরকারী হিসাব অনুযায়ী, বর্তমানে সরু চালের বাজার মূল্য কেজি প্রতি ৫০ টাকা থেকে ৫৫ টাকা, মাঝারি চাল কেজি প্রতি ৪০ টাকা থেকে ৪৮ টাকা এবং মোটা চাল ৩৫ থেকে ৪২ টাকা। বর্তমানে চালের বাজার স্থিতিশীল রয়েছে।রেকর্ড পরিমাণ মজুদের পর দেশের চালের বাজার স্থিতিশীল রয়েছে। চাল ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটও রয়েছে নীরব। সরকারের হাতে মজুদ কমে গেলে এরা বাজারকে অস্থিতিশীল করে তোলে। কিন্তু সরকারের হাতে মজুদ বেড়ে যাওয়ায় এরা কোন কারসাজি করার সুযোগ পাচ্ছে না বলে জানিয়েছে খুচরা বিক্রেতারা। খুচরা বিক্রেতাদের বক্তব্য, বাজার স্থিতিশীল থাকলে ক্রেতা-বিক্রেতা সকলের জন্য মঙ্গল।

জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) মতে, যে কোন রাষ্ট্রের নাগরিকদের খাদ্য নিরাপত্তায় সরকারীভাবে কমপক্ষে ৬০ দিনের খাদ্য মজুদ রাখা প্রয়োজন। আমাদের মোট জনগোষ্ঠীর এক দিনের খাদ্য চাহিদা প্রায় ৪৬ হাজার টন। সে হিসাবে ৬০ দিনের জন্য খাদ্য মজুদ রাখার কথা ২৭ লাখ টন। সেখানে সরকারের কাছে খাদ্য মজুদ রয়েছে ২০ লাখ ৭ হাজার টন। যা সাম্প্রতিক রেকর্ড পরিমাণ মজুদ। তবে বাংলাদেশের মানুষের ঘরে, মিল, বেসরকারী ব্যবস্থাপনায় খাদ্যপণ্য যথেষ্ট মজুদ রয়েছে বলে মনে করে সরকার। পৃথিবীর অনেক দেশেই এমন ব্যবস্থা নেই। যেটি বাংলাদেশের মানুষের ঘরে খাদ্য মজুদের ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু চিন্তার বিষয় হলো- বাজারে ৪৫ টাকা কেজির নিচে কোন চাল পাওয়া যায় না। গরিবের মোটা চালও এখন ৪৫ থেকে ৫০ টাকায় কিনতে হয়। আর মাঝারিমানের চিকন চালের (নাজিরশাইল) প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫২ থেকে ৫৫ টাকায়। এ ছাড়া তেল, চিনি, আটা, আদা, রসুন মাছ-মাংস সবকিছুর দামই চড়া। বিশেষ করে সয়াবিন তেলের দাম তো রেকর্ড পরিমাণ বেড়ে ১৪৩ টাকা লিটারে ঠেকেছে।

সরকারের মজুদে নতুন রেকর্ড তৈরি হলেও বাজারে চালের দাম কমছে না। বরং বাড়ছে। চালের বাজার অস্থিরতার পেছনে একই ব্যক্তিদের নাম আসছে বারবার। তারা সিন্ডিকেট করে চালের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ওই সিন্ডিকেট প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে নেয়া যাচ্ছে না কোন ধরনের আইনগত ব্যবস্থা। সারাদেশেই আছে তাদের সদস্য। এমনকি সিন্ডিকেটের সদস্যরা পাইকারি ও খুচরা বাজারের ব্যবসায়ীরাও। আর তাদের পেছনে কাজ করছে শক্তিশালী চক্র। সম্প্রতি সরকারের একটি সংস্থার একটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। এর আগেও একই ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন দিয়ে ব্যবস্থা নিতে বলা হলেও নেয়া হয়নি কোন ধরনের ব্যবস্থা। এমন পরিস্থিতিতে সঠিক তদন্ত করে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে গঠিত উচ্চ পর্যায়ের বিভিন্ন কমিটির কার্যক্রম ও মনিটরিং গতিশীল করার সুপারিশ করা হয়েছে ওই প্রতিবেদনে।

2
Spread the love

নিউজটি শেয়ার করুন....

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ বিভাগের আরোও খবর
এই নিউজ পোর্টাল এর কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি দণ্ডনীয় অপরাধ
Design & Developed by Freelancer Zone
themesba-lates1749691102