প্রিন্ট এর তারিখঃ ফেব্রুয়ারী ৮, ২০২৫, ৪:০৬ পি.এম || প্রকাশের তারিখঃ সেপ্টেম্বর ৩, ২০২৩, ৭:৩৮ অপরাহ্ণ
চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত বৈষম্য কমিয়ে আনা -উপাচার্য ড. মশিউর রহমান
চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত বৈষম্য কমিয়ে আনা বলে উল্লেখ করেছেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমান। তিনি বলেন, 'বিশ্বব্যবস্থায় আমরা চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের কথা বলি। প্রতিটি শিল্পবিপ্লবে নতুন কিছু এসেছে। তার মানে কি পৃথিবী থেকে আমাদের সকল বিভেদ, বৈষম্য সব উবে গেছে? আমরা যে সাম্যের ও সমতার সমাজ চাই সেটি কি চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের পথ ধরে নিশ্চিত করতে পারবো? চতুর্থ শিল্প বিপ্লব সমতা ও সাম্যের পৃথিবী নিশ্চিত করতে পারবে সেটি নিশ্চিত করে বলা যায় না। তবে বৈষম্য কমিয়ে আনাই হবে প্রধান লক্ষ্য। যতদিন পর্যন্ত প্রতিটি মানুষ একে অন্যের মধ্যে অংশীদারত্ব নিশ্চিত করতে না পারবে ততদিন পর্যন্ত আমাদের এই বিবাদমান ধারা চলমান থাকবে।'
গত শনিবার রাতে (২ সেপ্টেম্বর) ঢাকার উত্তরা ক্লাবে রোটারি ক্লাব অব আবহানিকুঞ্জ ঢাকা আয়োজিত ১২তম ইনস্টালেশন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন উপাচার্য ড. মশিউর রহমান।
দেশের প্রথিতযশা এই সমাজবিজ্ঞানী বলেন, 'মানবিক এবং মূল্যবোধসম্পন্ন একটি সমাজ গড়াই আমাদের লক্ষ্য। এ লক্ষ্য পূরণে আমাদের সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে। প্রত্যেকের মধ্যে সর্বোচ্চ সুন্দরের বহিঃপ্রকাশ ঘটাতে হবে। এ ক্ষেত্রে রোটারিয়ানদের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তারা সমাজ বদলে দেয়ার জন্য যে কাজ করছেন সেটি প্রশংসনীয়।' তাদের ইতিবাচক কার্যক্রম ভবিষ্যতে আরও জোরালো হবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন উপাচার্য ড. মশিউর রহমান।
উপাচার্য ড. মশিউর রহমান আরো বলেন, 'আমরা পরিবর্তনের কথা বলি। গোটা বিশ্বব্যবস্থাকে আমরা নানা সময়ে নানাভাবে দেখি। সমাজতাত্ত্বিকদের মধ্যে এই বিশ্বব্যবস্থাকে দেখার বিষয় নিয়ে এক ধরনের মতবিরোধ রয়েছে। টেন্ডার্ড পার্সন নামে একজন সমাজবিজ্ঞানী হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন শিক্ষকতা করেছেন। তিনি বিশ্বব্যবস্থাকে দেখবার জন্য একটি মনোভঙ্গির কথা বলেছেন- সমাজ সব সময় একটা স্টাবিলিটির মধ্যদিয়ে এগোয়। এর মধ্যে একটা কনসেনসাস তৈরি হয়। অধিকাংশ মানুষ একমত পোষণ করে। সমাজ যেটিকে চায় সেটি সেভাবেই চলমান থাকে। তার মধ্যে পরিবার যেমন থাকে, ধর্ম থাকে। আবার অনিয়ম আর দুর্নীতিও থাকে। এভাবে সমাজ এগিয়ে যায়। এটিকে সমাজবিজ্ঞানের ভাষায় ফাংশনালিজম বা ক্রিয়াবাদ তত্ত্ব বলা হয়। এই সমাজ এবং রাষ্ট্রে কিছু বিষয় থাকে লেটেন্ট। যেটিকে আমরা সামনে আনি না। কিন্তু সেটির মধ্যদিয়ে পরিবার, রাষ্ট্র, এবং সমাজের মধ্যে কিছু ডিজ অর্ডার থেকে যায়। সেকারণে সমাজের মধ্যে অনেক রকমের বিচ্যুতি দেখা যায়। তবু এর মধ্যদিয়েই সমাজ ফাংশনাল থাকে। সব সমাজতাত্ত্বিক একইভাবে দেখেন না। সেকারণেই মার্কসের ব্যাখ্যা ভিন্ন। তিনি বলেছেন, সমাজ একটা কনটিনিউয়াস প্রসেস। এর মধ্যদিয়ে সমাজে স্ট্রাগাল, কনফ্লিক্ট থেকেছে, আছে এবং থাকবে। একটি সংঘাতময় পরিস্থিতির মধ্যদিয়ে এর বিকাশ হয় এবং একটি পর্যায়ে দু'পক্ষের কনফ্লিক্টে যারা জয়ী হয় তারা নতুন সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তোলে।'
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য বলেন, 'অধিকাংশ মানুষ মিলে যা চায় তা হয়। আমরা চাই না যুদ্ধ হোক। আমরা সবাই ভালোবাসার পৃথিবী চাই। আমরা সবাই সুন্দরের অভিলাষী। আগামী প্রজন্মের জন্য সুন্দর বাসযোগ্য পৃথিবী গড়াই আমাদের লক্ষ্য। আসুন সবাই মিলে নতুন প্রজন্মের জন্য উন্নত, মানবিক ও আত্মমর্যাদশীল।
এই নিউজ পোর্টাল এর কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি ও দণ্ডনীয় অপরাধ।
Copyright © 2025 কলমের বার্তা. All rights reserved.