ধর্ষণ, হত্যা, চাঁদাবাজি, ছিনতাই, জমিদখল, চুরিসহ প্রায় ১৪টি ভয়ঙ্কর মামলার আসামি পিক রফিক অপরাধ জগতে এখনো সক্রিয় ।
তিনি একের পর এক গাজীপুরসহ বিভিন্ন জেলায় গিয়েও বার বার নানা ধরনের অপরাধ করে আসছে।
গেল ৭ মে পিক রফিক ও তার সহযোগী সামিউল হক টিপু মিলে গাজীপুর সদর থানাধীন মাধববাড়ি মোড় এলাকায় মীর আনোয়ার মঞ্জিল থেকে একটি পালসার মোটরবাইক চুরি করে নিয়ে যায়।
পরবর্তীতে বাইকের মালিক মোঃ নাদিম হাসান বিভিন্ন জায়গায় বাইকটি খোঁজাখুঁজি করেন। এক প্রকার সিসিটিভি ক্যামেরায় ধারনকৃত ভিডিও ফুটেজ দেখে চোর সনাক্ত করা হয়। এ ঘটনায় গাজীপুর মেট্রোপলিটন সদর থানায় মোঃ নাদিম হাসান বাদী হয়ে পিক রফিক ও সামিউল হক টিপুকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন।
নাদিম জানান, ভিডিও ফুটেজ দেখে চোর সনাক্ত করার পর ঠিকানা সংগ্রহ করে পিক রফিকের বাসায় গিয়ে মোটরবাইকটি ফেরত চাই। পরবর্তিতে বাইকটি ফেরত না দিয়ে বাপের টাকায় কেনা বলে মারমুখী আচরণ করে তারিয়ে দেয় পিক রফিক ।
এরপর গেল ১৫ জুলাই বিকেলে পিক রফিকের বাসায় গিয়ে মোটরবাইকটি উদ্ধার করে সদর থানা পুলিশ।
এ ব্যাপারে গাজীপুর মেট্রোপলিটন (জিএমপি) সদর থানার এসআই মোঃ তুহিন মিয়া ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, চুরি যাওয়া মোটরসাইকেলটি ১৫ জুলাই বিকেলে পিক রফিকের বাসায় থেকে থেকে উদ্ধার করা হয়েছে এবং আসামি দ্রুত গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
কে এই পিক রফিক, গাজীপুর মহানগরীর লোহাকৈর মাজার এলাকার সাচুন্নি মিয়ার ছেলে প্রায় ১৪টি ভয়ঙ্কর মামলার আসামি। মামলাগুলোর মধ্যে বেশিরভাগ ধর্ষণ, চাঁদাবাজি, ছিনতাই, চুরি, ডাকাতি, জমি দখল, মাদক ও হত্যা।
তবে বেশিরভাগ মামলা হয়েছে সাবেক জয়দেবপুর থানায়। স্বাক্ষীর অভাবে অনেক মামলাই খারিজ হয়ে গেছে বলে জানা গেছে।
তিনি ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের ছত্রছায়ায় দীর্ঘদিন ধরে এমন ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছে বলে সচেতন মহল মনে করেন।
জানা গেছে, ২০২১ সালের ৩রা মে বগুড়া জেলার শেরপুর থানাধীন গাঁড়ই বাস্ট্যান্ড কাশিয়াবালা হোটেল এন্ড রেষ্টুরেন্টে এর সামনে থেকে ৭০ বোতল ফেনসিডিল ও মাদক কাজে ব্যবহৃত একটি মোটরসাইকেলসহ আটক করা হয় পিক রফিক (৩২) ও আরিফ মোল্লা(৪১)।
বগুড়া জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপ-পরিদর্শক মোঃ রফিকুল ইসলাম জানান, তাদেরকে ৭০ বোতল ফেনসিডিল ও মাদক কাজে ব্যবহৃত একটি মোটরসাইকেলসহ (আরিফ মোল্লা (৪০) আসল নাম আরিফ (৪২) ও সানোয়ার হোসেনকে (৩৫) আসল নাম রফিক ওরফে পিক রফিকে (৩৮) আটক করা হয়। তিনি বলেন, তারা তাদের নাম ঠিকানা ভুল দিয়েছিল। পরবর্তীতে নাম ঠিকানা সংশোধনের জন্য আবেদন করা হয়েছে।
তৎকালিন শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুল ইসলাম জানান, তাদের বিরুদ্ধে শেরপুর থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা হয়েছে এবং তাদেরকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
এছাড়াও গাজীপুর মেট্রোপলিটন কোনাবাড়ি থানায় এলাকায় হাবিন খান নামের এক যুবকের মোটরসাইকেল নিয়ে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবী করেছিল পিক রফিক ও আরিফ।
গেল বছর এপ্রিল মাসে গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ি হরিণাচালা পারশ আলী রোড আমতলা নামক এলাকা থেকে পিক রফিককে ৩১ পিস ইয়াবাসহ আটক করে কোনাবাড়ি থানা পুলিশ। একই বছরে পিক রফিক ও তার আরেক বন্ধুর বিরুদ্ধে বিকাশ প্রতারণার অভিযোগে বিভিন্ন পত্রিকায় নিউজ প্রকাশ হয়। রফিকের বিরুদ্ধে জয়দেবপুর, কাশিমপুর,কোনাবাড়ি ও কালিয়াকৈর থানাসহ রয়েছে হত্যা, ধর্ষণ, ডাকাতি, চাঁদাবাজি, ভূমিদখলসহ ডর্জনখানেক মামলা।
এই নিউজ পোর্টাল এর কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি ও দণ্ডনীয় অপরাধ।