বিশেষ প্রতিবেদন,ঢাকা: দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের (DDM) এক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গুরুতর দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে, যার মধ্যে ঘুষ গ্রহণ, নিয়োগ জালিয়াতি, অবৈধ সম্পদ অর্জন এবং সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার মতো অভিযোগ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
অভিযোগে বলা হয়েছে, মোঃ কামাল হোসেন, যিনি অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের ব্যক্তিগত সহকারীর দায়িত্বে আছেন, তার বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের মাধ্যমে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়ে ওঠার অভিযোগ রয়েছে। তার বিরুদ্ধে প্রথম উল্লেখযোগ্য অভিযোগ হলো অধিদপ্তরের গাড়ি বর্ষ ভাড়ার টেন্ডারে ঘুষ গ্রহণের মাধ্যমে টেন্ডার প্রদান করা। জানা যায়, তিনি প্রথমে ৩ লাখ টাকা ঘুষ নিয়ে এম এইচ এন্টারপ্রাইজের মালিক মোঃ মাসুদ রানা কর্তৃক বৈধভাবে কাজ পাওয়ার পরও সুকৌশলে ফাইল আটকিয়ে রাখেন এবং পরে প্রতি মাসে ১০ হাজার টাকা না দিলে টেন্ডার বাতিল করার হুমকি দেন।
এছাড়া, ২০২১ সালে অধিদপ্তরে কর্মচারী নিয়োগের সময়ও কামাল হোসেনের বিরুদ্ধে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগ অনুযায়ী, তিনি তার ছোট ভাই রবিনকে নিয়োগ পাইয়ে দিতে মোটা টাকার বিনিময়ে অন্য একজনকে লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করানোর ব্যবস্থা করেন। পরবর্তীতে নিয়োগ বোর্ডের সদস্যরা ভূয়া পরীক্ষার্থীর বিষয়টি বুঝতে পেরে তদন্তে নেমে রবিনকে পুলিশে সোপর্দ করেন। তবে কামাল হোসেন তার ভাই রবিনকে মিথ্যা তথ্য দিয়ে নিয়োগ পেতে সহায়তা করেন এবং পরে তাকে বিভিন্ন প্রকল্পে চাকরি পাইয়ে দেন।
এরপরও তার বিরুদ্ধে আরও গুরুতর অভিযোগ রয়েছে, যার মধ্যে সরকারি প্রকল্পের ঠিকাদারদের কাছে রেইট কোড ও গোপনীয় তথ্য সরবরাহ করে কোটি কোটি টাকা উপার্জন করার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত। তার বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ, তিনি মধুপুর, টাঙ্গাইলে বিপুল পরিমাণ ব্যবসা গড়ে তুলেছেন এবং ঢাকায় একাধিক ফ্ল্যাট, প্লট ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ক্রয় করেছেন।
এছাড়া, কামাল হোসেন মহাপরিচালকের ব্যক্তিগত সহকারীর পদে থাকাকালীন সময়ে, তিনি একাধিক ক্ষেত্রে মহাপরিচালকের নাম ভাঙিয়ে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের কাছ থেকে অবৈধ অর্থ গ্রহণ করেছেন। একাধিক কর্মকর্তার বদলি এবং অন্যান্য কাজে তিনি অযাচিত সুবিধা গ্রহণ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
এতসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে সাধারণ জনগণ এবং অধিদপ্তরের কর্মীরা আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছেন। যদিও অভিযোগের পরও তার বিরুদ্ধে এখনও কোনো কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি, এতে করে প্রশ্ন উঠেছে, সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো কীভাবে এই ধরনের দুর্নীতি মোকাবিলা করছে।
দুর্নীতি দমন কমিশন (ACC) এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে যাতে তারা এই ব্যাপক দুর্নীতির তদন্ত শুরু করে এবং দোষীদের শাস্তির আওতায় আনে।
এই নিউজ পোর্টাল এর কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি ও দণ্ডনীয় অপরাধ।