শিরোনামঃ
সিরাজগঞ্জে বিশ্ব পরিবেশ দিবস উদযাপন উপলক্ষ্য  র‍্যালি প্রদর্শন পাঁচ বছরে বাংলাদেশে এসেছেন ২০ লাখ পর্যটক সুপারিশ নয়, যৌক্তিক দাবির ভিত্তিতে এই পরিবর্তন :ইসি গাজীপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান আজমত উল্লা খান আজ থেকে সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ বাংলাদেশের সঙ্গে বৃহত্তর সম্পর্ক গড়তে চায় জাপান: বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানি রাষ্ট্রদূত আজ থেকে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি বিদ্যুৎসহ সব কিছু ব্যবহারে সাশ্রয়ী হতে হবে আনসার-ভিডিপি’র বৃক্ষরোপণ অভিযানের উদ্বোধন প্রেমের টানে নিজ দেশ ছেড়ে এসে ভারতীয় তরুণী বিয়ে করলেন বাংলাদেশী তরুণকে কাজিপুরের বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহা আলী আর নেই, রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন সম্পন্ন গাউক এর চেয়ারম্যান হলেন আজমত উল্লা খান  তাড়াশে মেয়র পদে নির্বাচিত হলে পৌর পিতা নয়’ জনগণের সেবক হতে চান শাহিনুর আলম লাবু গোমস্তাপুরে কৃষক পুরুস্কার বিতরণ ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত বেড়ায় ৩ দিন ব্যাপী কৃষি প্রযুক্তি মেলার উদ্বোধন সলঙ্গায় ফেন্সিডিলসহ যুবক আটক বেতাগীতে নবাগত ইউএনও’র সাথে এনসিটিএফ সৌজন্যে সাক্ষাৎ দেশে ফিরলেন সৌদিতে নির্যাতনের শিকার ১২ গৃহকর্মী ৩০০ আসনের সীমানা চূড়ান্ত করে গেজেট প্রকাশ দেড় হাজার শয্যা সংস্থানে নতুন ১০ তলা ভবন নির্মাণের সিদ্ধান্ত

‘দেখলে মনে হয় বাংলাদেশের ভেতর আরেক বাংলাদেশ’

কলমের বার্তা / ১২২ বার পড়া হয়েছে।
সময় কাল : মঙ্গলবার, ২২ ফেব্রুয়ারী, ২০২২

নোয়াখালীর দক্ষিণাঞ্চলীয় মেঘনায় নতুন নতুন বিশাল চর জাগছে। ইতোমধ্যে জেগে ওঠা অন্তত এক হাজার বর্গকিলোমিটার চরাঞ্চলে মানববসতি গড়ে উঠেছে । আগামী পাঁচ বছরে আরো বিশাল চর জেগে ওঠার উজ্জ্বল সম্ভবনা দেখা দিয়েছে। মেঘনায় যে হারে চর জাগছে, তাতে জেগে ওঠা চরের আয়তন হবে কয়েকটি উপজেলার সমান। এতে এক দিকে দেশের হাজার হাজার নদী ভাঙা অসহায় ভূমিহীন মানুষেরা জেগে উঠা চর আবাদ করে জীবিকা নির্বাহ করবে। অন্য দিকে এ সব চরে পরিকল্পিতভাবে চাষাবাদ বৃক্ষ রোপণ মৎস্য প্রজেক্টসহ বাস্তবমুখী পদক্ষেপ নিলে জাতীয় অর্থনৈতিক অগ্রগতির দ্বার উন্মোচিত হওয়ার উজ্জ্বল সম্ভবনা দেখা দিয়েছে । নোয়াখালীর সদর মূল ভূখণ্ড থেকে দক্ষিণে বিশাল বয়ারচর, পূর্ব ও পূর্ব-দক্ষিণে মাইলের পর মাইল ধু-ধু চর আর চর। নলেরচরের দক্ষিণ-পূর্ব দিকে সন্দ্বীপের কাছাকাছি সাগরের বুক চিরে আরো অনেকগুলো চর জাগছে। তার পাশে সোনাদিয়া গ্যাস ফিল্ড থেকে কক্সবাজার হাতিয়ার সাথে যুক্ত হওয়া সময়ের ব্যাপার মাত্র। সদরের চর ক্লার্ক পূর্ব পাশে সন্দ্বীপের উরিরচরের সাথে জেলা সদরের ভূখণ্ডের দূরত্ব মাত্র অর্ধকিলোমিটার । এ ছাড়া চরমজিদ স্টিমার ঘাট থেকে ২৮ কিলোমিটার দূরত্ব। হাতিয়া দ্বীপের মধ্যবর্তী নদী পথে অসংখ্য ডুবোচর সৃষ্টি হয়েছে এগুলো অচিরে মূল চরে রূপান্তরিত হবে। নলের চর থেকে চেয়ারম্যান ঘাট পর্যন্ত ৭০০-৮০০ একর মেঘনার নতুন চর জাগছে এবং এতে মানব বসতি বৃক্ষ রোপণ শুরু হয়ে গেছে। হাতিয়া দ্বীপের উত্তর-পশ্চিমে জেগে ওঠা ৮ বর্গকিলোমিটার আয়তনের মৌলভীচরে চাষাবাদ চলছে। এ ছাড়া তার আশপাশে অনেকগুলো নতুন চর জাগছে।
এগুলোতে চাষবাদ ও মানববসতি চলছে পুরোদমে। হাতিয়ার তমরউদ্দিনের পশ্চিমে যে হারে চর জাগছে, ভোলার মনপুরার সাথে দূরত্ব মাত্র পাঁচ-ছয় কিলোমিটার। তাতে করে আগামী দু-এক বছরের মধ্যে ভোলার মনপুরার সাথে হাতিয়া দ্বীপের মূল ভূখণ্ড মিশে গেলে অবাক হওয়ার কিছু নেই। বুড়ির ইউনিয়নের লালচরসহ নিমতলী হয়ে বিশাল চর জাগছে। চর অলি নামের বিশাল চর হাতিয়াদ্বীপের দক্ষিণ-পূর্ব প্রান্তে রহমত বাজারের পূর্বে ২০-২৫ বর্গকিলোমিটার ডুবোচর আগামী ৮-১০ বছরের মধ্যে গৌচারণ ভূমিতে পরিণত হয়েছে । এ দিকে হাতিয়ার রহমত বাজারের বেড়িবাঁধ থেকে ২০ কিলোমিটার পশ্চিমে জাহাজ মারা বাজার পর্যন্ত ভেড়িবাঁধের বাইরে আবার বিশাল চর জেগে উঠেছে। তার মধ্যে অন্তত ১৫ কিলোমিটার বনবাগান ২০ বর্গকিলোমিটার মানব বসতি, ৩০ কিলোমিটার আবাদি জমি ও ২৫ কিলোমিটার গৌচারণ ভূমি রয়েছে। এ ছাড়া দক্ষিণে প্রায় প্রতি বছর ২০-২৫ কিলোমিটার আয়তনের চর জাগছে। এ ছাড়া জাহাজমারা নিঝুমদ্বীপের পাশে অনেকগুলো চর জাগছে। এসব চরে মানববসতি শুরু না হলেও কবিরার চরসহ এ সব চরে বনবিভাগ গাছ লাগাচ্ছে। অন্য দিকে নিঝুমদ্বীপের দক্ষিণে গভীর সমুদ্রে মৎস্য শিকারি জেলেদের থেকে আরো চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে। তারা জানায় হাতিয়া মূল ভূখণ্ড থেকে দক্ষিণে ৮-১০ ঘন্টা টলারে যাওয়ার পর ও নদীর গভীরতা দুই থেকে আড়াই মিটারে এসে দাঁড়িয়েছে। অর্থাৎ হাতিয়া জাহাজ মারা থেকে দক্ষিণে আরো ৬০-৭০ মাইল নদী পথের পর গভীরতা দু-তিন মিটার। নিঝুমদ্বীপের পশ্চিমে চর কমলা, বদনার চর, চর কালাম, দমার চরের পাশে চর মিজান নামে বিশাল নতুন চর। কিন্তু সেখানে এখনো মানববসতি স্থাপন শুরু হয়নি। কারণ ওখানে জলদস্যু ও ভূমিদস্যুদের হাঙ্গামার ভয়ে। কিন্তু বনায়নের কাজ চলছে পুরো দমে।
হাতিয়ার বাংলা বাজারের পূর্ব দিকে বিশাল চর জাগছে। জেলার মূল ভূখণ্ড চর মজিদ স্টিমারঘাট থেকে চেয়ারম্যান ঘাট পর্যন্ত বিশাল। সেখানে মানববসতি শুরু হয়ে গেছে আরো অনেক আগ থেকে। আবার হাতিয়ার নলচিরা ঘাট রুটে বেশ কিছু ডুবোচর দেখা দিয়েছে। এতে সিট্রাক চলাচল বন্ধ হয়ে যায় । সম্প্রতি সোজা যে পথ রয়েছে, সেখানে অসংখ্য ডুরো চর দেখা দেয়ায় সে রুটে সি-ট্রাক চলাচল করতে পারছে না। এতে নলের ঘুরে হাতিয়ার নলচিরা ঘাটে এক ঘণ্টা সময় বেশি লাগে । এ ছাড়া আগামী দু-এক বছরের মধ্যে চট্টগ্রামের সন্দ্বীপের চর ইসলামের সাথে মিশে যাবে ধারণা করা হচ্ছে। এ ছাড়া অনেক চরে মানববসতির পাশাপাশি জমিন আবাদ হচ্ছে এবং অনেকগুলো চরে বৃক্ষ রোপণ কর্মসূচির আওতায় আনা হচ্ছে। হাতিয়ায় যে হারে চর জাগছে এতে করে আগামী চার-পাঁচ বছরে এখানকার ভূমির পরিমাণ হবে কয়েকটি উপজেলার সমান । এ ছাড়া আরো অনেকগুলো ডুবোচরগুলো এখন ভেসে উঠছে। হাতিয়া নিঝুমদ্বীপ ও তার আশপাশে যে হারে চর জাগছে, তাতে পরিকল্পিতভাবে বিভিন্ন এলাকার লাখ লাখ নদীভাঙা অসহায় মানুষের পুনর্বাসন ও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হবে। হাতিয়া চরাঞ্চলের অধিবাসীরা জানান জেগে ওঠা চরগুলোতে পলি মাটির কারণে ফসলে সার ও কীটনাশকের তেমন প্রয়োজন হয় না। শুধু তাই নয়, ফসলের তেমন পরিচর্চার প্রয়োজন হয় না। ভূমিহীনরা আরো জানান তারা জল ও বনদস্যুদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। তাদের কষ্টে অর্জিত ফসলের উপর বাহিনীর চাঁদা দিতে হয়। হাতিয়া এলাকায় যে হারে চর জাগছে এবং মেঘনা নদী ও সাগরের পলি মাটির যে উর্বরতা এখানে বেড়িবাঁধ নির্মাণ করে পরিকল্পিতভাবে কৃষি প্রজেক্ট করা হলে এখানে যে ফসল হবে তা পুরো জেলায় খাদ্যের চাহিদা মিটিয়ে বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা সম্ভব হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তার পাশাপাশি নদীভাঙাদের পুনর্বাসন, কৃষি প্রজেক্ট মৎস্য প্রকল্প, বনায়ন, পর্যটক শিল্প গড়ে তোলাসহ অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির লক্ষ্যে জলদস্যুদের উৎপাত বন্ধ হলে এবং বাস্তবমুখী ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করা হলে সরকারের যে পরিমাণ আয় হবে, তাতে জাতীয় বাজেটের উল্লেখ্যযোগ্য একটি অংশ নোয়াখালী থেকে জোগান দেয়া সম্ভব হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে । হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: সেলিম হোসেন জেগে ওঠা চরগুলোকে আবাদের ব্যাপারে সরকারি পৃষ্ঠপোষকথা আছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নতুন জেগে ওঠা চরগুলোতে আবাসনের ব্যবস্থা চলছে ।তার পাশাপাশি সরকারিভাবে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি চলছে।

26
Spread the love


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর