শনিবার, ০১ এপ্রিল ২০২৩, ০৪:৩১ অপরাহ্ন

প্রতিটি বিভাগে মেরিন একাডেমি স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে: প্রধানমন্ত্রী

কলমের বার্তা নিউজ ডেস্ক :
  • সময় কাল : সোমবার, ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২২
  • ৭৭ বার পড়া হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সরকারের দেশের প্রতিটি বিভাগে একটি করে মেরিন একাডেমি প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা রয়েছে। বাংলাদেশ মেরিন একাডেমিকে এমনভাবে মেরিনার তৈরির ব্যবস্থা নিতে হবে, যাতে তারা উচ্চ প্রযুক্তির সমুদ্র জাহাজ পরিচালনা করতে পারেন। আমার ইচ্ছা আছে প্রত্যেক বিভাগে একটি করে মেরিন একাডেমি চালু হবে। যেখানে আমাদের ছেলে-মেয়েরা কেবল প্রশিক্ষিতই হবে না, দেশে-বিদেশে তাদের ব্যাপক কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে এবং বেকার সমস্যা দূর হবে।

রোববার বাংলাদেশ মেরিন একাডেমির ৫৬তম ব্যাচের ক্যাডেটদের ‘মুজিববর্ষ গ্র্যাজুয়েশন প্যারেড’ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে চট্টগ্রামস্থ বাংলাদেশ মেরিন একাডেমি প্যারেড গ্রাউন্ডে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, বর্তমানে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে একাডেমির গ্রহণযোগ্যতা অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে, কর্মসংস্থানে সুযোগ হয়েছে এবং সমুদ্র-বিশ্বের চাহিদা অনুযায়ী আমরা এবছর অর্থাৎ ২০২২ এর জানুয়ারি থেকে পাবনা, বরিশাল, রংপুর ও সিলেটে আরও চারটি মেরিন একাডেমির কার্যক্রম চালু করেছি। আমি আশা করি বাংলাদেশ মেরিন একাডেমি আগামী দিনে উচ্চ প্রযুক্তির সামুদ্রিক জাহাজ পরিচালনার জন্য যথেষ্ট দক্ষ মেরিন ক্যাডেট তৈরি করতে যথাযথ ব্যবস্থা নেবে। শুধুমাত্র বাংলাদেশ মেরিন একাডেমির প্রায় ৫ হাজার প্রশিক্ষিত ক্যাডেট সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে সেবা প্রদানের মাধ্যমে প্রতি বছর আমাদের অর্থনীতিতে প্রায় ২৩০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার যুক্ত করে থাকেন। তাছাড়াও, প্রতিযোগিতামূলক আন্তর্জাতিক পরিসরে অত্যন্ত সুনামের সঙ্গে কাজ করে তাঁরা দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০১৩ সালে আমরা ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম ইউনিভার্সিটি’ প্রতিষ্ঠা করেছি। আগের ৩বছর মেয়াদী ব্যাচেলর অব মেরিটাইম সাইন্স পাস কোর্সকে ২০১৫ সালে চার বছর মেয়াদী অনার্স কোর্সে উন্নীত করেছি। ২০১৮ সালে ‘মাস্টার অব মেরিটাইম সাইন্স’ চালু করেছি। প্রশিক্ষণকে যুগোপযোগী করতে ক্যাপ্টেন জাকারিয়া মেরিন সিমুলেশন সেন্টারে ২০১৯ সালে ‘নেভিগেশন সিমুলেটর’ স্থাপন করেছি। এবছর ‘ইঞ্জিন কন্ট্রোল সিমুলেটর’ স্থাপন করব। বাংলাদেশ মেরিন একাডেমিকে বিশে^র নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অংশীদারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে উন্নীত করেছি।

তিনি বলেন, বিশ্ব বাণিজ্যের প্রায় ৮০ শতাংশ পণ্য পরিবহণ সমুদ্র পথেই হয়ে থাকে। আর আমাদের বে অব বেঙ্গল এজন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটা জায়গা। তাই, বিশ্ব অর্থনীতিকে গতিশীল রাখতে মেরিন ক্যাডেটদের ভূমিকা অপরিসীম। জীবন ধারণের জন্য খাদ্য, জীবন রক্ষাকারী ঔষধসহ শিল্পায়নের যন্ত্রপাতির মতো প্রয়োজনীয় পণ্যগুলোর পরিবহন বিঘ্নিত হলে গোটা বিশ্বই স্থবির হবে। এ সময়বৈশ্বিক মহামারির কারণে বহু সংখ্যক মেরিন অফিসার ও মেরিন ইঞ্জিনিয়ার সমুদ্রে আটকা পড়লেও মানসিকভাবে ভেঙ্গে না পড়ে যথাযথ দায়িত্ব পালন করেছেন। আমি তাদের সাধুবাদ জানাই। ।

শেখ হাসিনা বলেন, আন্তর্জাতিক মেরিটাইম সংস্থা’র মহাসচিবের আহ্বানে সাড়া দিয়ে, আমরাও করোনাকালে অবিরাম দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে, মেরিন অফিসার-ইঞ্জিনিয়ারদের ‘কী-ওয়ার্কার’ হিসাবে স্বীকৃতি দিয়েছি। মনে রাখবে, তোমরা শুধু নির্ভিক সমুদ্রচারী নও, তোমরা বাংলাদেশের প্রতিনিধি। তোমাদের দেশপ্রেম, সততা, আত্মবিশ্বাস ও পেশাদারিত্বের সঙ্গে কাজ করবে। যখন এক দেশের পণ্য আরেক দেশে জাহাজে বয়ে নিয়ে যাবে, তোমরা বাংলাদেশের হাজার বছরের সভ্যতা ও সংস্কৃতি তুলে ধরবে। তোমাদের সততা, দক্ষতা ও কর্তব্যনিষ্ঠা ভবিষ্যত ক্যাডেটদের জন্য পাথেয় হয়ে থাকবে। সম্প্রতি আন্তর্জাতিক মেরিটাইম সংস্থা উদ্ভাবনী গবেষণার মাধ্যমে মেরিটাইম খাতের উন্নয়নের উপর গুরুত্বারোপ করেছে। কেননা, বৈশ্বিক বেস্ট প্রাক্টিসেস, সম্পদের সহজলভ্যতা এবং প্রযুক্তিজ্ঞানের বিনিময়ের মাধ্যমেই এই খাতকে বর্তমান অবস্থা থেকে একটি সবুজতর ও টেকসই ভবিষ্যতের দিকে নিয়ে যাওয়া সম্ভব। তাই, সংস্থাটি সবুজতর শিপিং এর জন্য নব নব প্রযুক্তির সন্নিবেশ ঘটানোর উপর গুরুত্বারোপ করেছে।

তিনি বলেন, আগামীতে আমাদের মেরিন ক্যাডেটদের প্রশিক্ষণে উৎকর্ষতা অর্জন, কর্মক্ষেত্র সম্প্রসারণ এবং সাইন-অন ও সাইন-অফ সুবিধা ত্বরান্বিত করার ক্ষেত্রে দেশি-বিদেশি সংশ্লিষ্ট সব সংস্থা আমাদের পাশে থাকবে। ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পরপরই সব কোর্সকে যুগোপযোগী করি। একাডেমিতে ই-লার্নিং, কম্পিউটার প্রযুক্তি, প্রশিক্ষণ জাহাজ, ইঞ্জিন সিম্যুলেটর ইত্যাদি অন্তর্ভূক্ত করি। ২০১২ সালে এই একাডেমিতে নারী ক্যাডেট ভর্তি শুরু করি। এ পর্যন্ত, প্রায় ১০০ জন প্রশিক্ষিত নারী ক্যাডেটের অধিকাংশই আন্তর্জাতিক সমুদ্রগামী জাহাজে সংশ্লিষ্ট কর্মক্ষেত্রে দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছে।

এ অনুষ্ঠানে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এবং নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ মেসবাহ উদ্দিন চৌধুরী বক্তব্য রাখেন। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী কৃতী ক্যাডেটদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন। সিনিয়র ক্যাডেট ক্যাপ্টেন নাদিম আহমেদ সব বিষয়ে কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের জন্য রাষ্ট্রপতি স্বর্ণপদক লাভ করেন। একাডেমি কমান্ডেন্ট ড. সাজিদ হুসেইন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীন পক্ষে ৫৬ ব্যাচের ক্যাডেটদের গ্রাজুয়েট ঘোষণা করেন। প্রধানমন্ত্রী পাসিং আউট ক্যডেটদের মনোজ্ঞ কুচকাওয়াজ প্রত্যক্ষ করেন তাঁকে ক্যাডেটরা রাষ্ট্রীয় সালাম জানায়।

3
Spread the love

নিউজটি শেয়ার করুন....

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ বিভাগের আরোও খবর
এই নিউজ পোর্টাল এর কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি দণ্ডনীয় অপরাধ
Design & Developed by Freelancer Zone
themesba-lates1749691102