সদ্য কারামুক্ত মাওলানা মহিবুল্লাহ বলেন, ফ্যাসিবাদ সরকার থেকে আমাকে দুই বছর পর মুক্তি দান করেছেন। কিন্তু ফ্যাসিবাদের প্রেতাত্মারা এখনো সব জায়গায় রয়ে গেছে। আমার ঘটনাই প্রমাণ করে ফ্যাসিবাদরা এখনো নির্মূল হয়নি।
সন্ত্রাস বিরোধী মামলায় দীর্ঘ দুই বছর কারাভোগের পর আজ মঙ্গলবার বিকেল চারটার সময় কারামুক্তি হয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, আমার সঙ্গে কি কি করা হয়েছে পরবর্তীতে বিস্তারিত জানাবো? আমার জন্য আমার পরিবারের সদস্যদের জন্য সবাই দোয়া করবেন। এসময় তিনি বলেন, বৈষম্যহীন কারামুক্তি আন্দোলনের সঙ্গে আমি আছি এবং থাকবো ইনশাআল্লাহ।
জানাযায় ২০২৩ সালের মার্চ মাসের ২৩ তারিখে বিলাইছড়ি থানার সন্ত্রাস বিরোধী মামলায় গ্রেফতার হন তিনি। উক্ত মামালয় গেল ৩০ জানুয়ারী হাইকোর্ট থেকে জামিন পান। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে ডেমরা থানা ও বিলিলাইছড়ি থানায় আরো দুইটি সন্ত্রাসবিরোধী মামলা ছিলো। ওই দুই মামলায় আগেই জামিনে ছিলেন তিনি।
মাওলানা মহিবুল্লাহ ভোলা জেলার সদর থানার চরসিফলি গ্রামের মৃত আব্দুর রব মাস্টারের ছেলে। তিনি আব্দুল মালেক ইসলামি কমপ্লেক্স ভোলা সদর মাদ্রাসায় আরবি শিক্ষক ছিলেন।
তার মুক্তির দাবিতে আজ সকাল ১১ টার সময় গাজীপুরের কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেন বৈষম্যহীন কারামুক্তি আন্দোলন নামে একটি সংগঠন।
বৈষম্যহীন কারামুক্তি আন্দলোনের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মোঃ আলতাফ হোসাইন বলেন,তার জামিনের কাগজ পত্র গেল ৫ দিন আগে কারাগারে আসলেও বিভিন্ন অজুহাতে তার মুক্তির বিষয়টি নিয়ে তালবাহানা করে হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার ও জেলার।
পরে আজ সকাল ১১ টার সময় কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারের সামনে মাওলানা মহিবুল্লার মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করা হয়। বাধ্য হয়ে বিকেল চারটা সময় তাকে কারামুক্তি দেওয়া হয়। এ সময় কারাগারের সামনে অবস্থানরত বৈষম্যহীন কারামুক্তি আন্দোলনের নেতাকর্মীরা মাওলানা মহিবুল্লাহ কে দেখে নারায়ে তাকবীর আল্লাহু আকবার ধ্বনিতে প্রকম্পিত করে তুলেন। অনেকে আবার তার মুক্তি হওয়ায় আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া আদায় করে দুই রাকাত নফল নামাজ আদায় করেন। মাওলানা মহিবুল্লাকে দেখে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন উপস্থিত নেতাকর্মীরা।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন,উচ্চ আদালত কর্তৃক জামিন দেওয়ার পরেও বন্দিদের আটক রাখা জেলার ও জেল সুপার কর্তৃক আদালতের রায় অবমাননার সামিল। আন্দোলনের এক পর্যারে
মাওলানা মহিবুল্লাকে কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়।
মানববন্ধনে বৈষম্যহীন কারামুক্তি আন্দলোনের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান বিক্রমপুরী বলেন,হাইকোর্ট থেকে জামিন দেওয়া হয়েছে। তার জামিনের কাগজ পত্র গুলো বিগত ৫ দিন আগে কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারে পৌছায়। তিনি বলেন, আমরা বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সাথে কথা বলেছি তারা বলে এটা আমাদের কাজ না। তিনি আরো বলেন, জামিনের কাগজপত্র কারাগারে পৌছার পরে তাকে ২৪ ঘণ্টার বেশি আটকে রাখার সুযোগ নেই।
মানববন্ধন ও বিক্ষোভ চলাকালীন সময়ে প্রিজন ভ্যান,এম্বুলেন্স, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ও স্টাফদের প্রবেশে বাধা দেয় বিক্ষোভ কারিরা । কারাগারের মুল ফটকের সামনেই তারা যোহরের নামাজ আদায় করেন। প্রিজন ভ্যান কারাগারের ভিতর প্রবেশ করতে না দেওয়ায় এক আসামিকে কারাগারের পকেট গেট দিয়ে হাঁটিয়ে ভেতরে নিতে
দেখা যায়।
বিকেল তিনটার সময় আন্দোলনরত নেতাকর্মীদের উপর কারাগারের ভিতর থেকে ঢিল ছুড়তে দেখা যায়। এ সময় উত্তপ্ত হয়ে পড়েন কারাগারের মূল ফুটকের অবস্থানরত বিক্ষোভকারীরা ।
এ বিষয়ে জানতে কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মো. আব্দুল্লাহ আল মামুনের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দিলেও ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
এই নিউজ পোর্টাল এর কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি ও দণ্ডনীয় অপরাধ।