হোসেন বলেন, ‘মেলার শুরুর দিন থেকেই ক্রমান্বয়ে বিক্রি ও পাঠক সমাগম বাড়ছে। বিক্রি ভালো হচ্ছে। আমরা আশাবাদী, মেলার যত সময় গড়াবে, বিক্রি তত বাড়বে। সব পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসছে। স্কুল-কলেজ খুলে দিলে মেলায় পাঠকদের আরও উপচে পড়া ভিড় দেখতে পাবো। সঙ্গে বিক্রিও বাড়বে।’
চাঁদপুর থেকে বইমেলায় ঘুরতে এসেছেন এক শিক্ষার্থী মিনহাজ আহমেদ। তরুণ লেখকদের প্রতি তার ঝোক বেশি। এছাড়াও নামকরা লেখকরাও তার পছন্দের তালিকার শীর্ষে। তিনি বলেন, ‘বইমেলার প্রতি আমার ছোটবেলা থেকেই টান। গতবছর মেলার সময়টাতে গাড়ি বন্ধ থাকায় আসতে পারিনি। এবার আসতে পেরে ভালোই লাগছে। মেলার এবারের স্টল বিন্যাসও বেশ ভালো লাগছে। ঘুরে ঘুরে দেখছি। বই পছন্দ করছি, কিনছি। আজ দুইটা বই কিনলাম। আরও কিছুদিন ঢাকায় থাকবো। মেলায় আসবো। আরও কয়েকটা বই কিনবো।’
করোনার কারণে বইমেলা কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা ছিল, স্বাস্থ্যবিধি মেনে অংশ নিতে হবে দর্শনার্থীদের। আর বই বিক্রেতার জন্য বাধ্যতামূলক মাস্ক পরিধান, টিকা সনদ যাচাইয়ের নির্দেশনা দিয়েছিল মেলা কর্তৃপক্ষ। মেলায় প্রবেশের সময় সবার মুখে মাস্ক থাকলেও ভেতরে প্রবেশের পর অনেকেই মাস্ক খুলে নিচ্ছেন হাতে, পকেটে, থুতনিতে। মেলায় শতভাগ স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে নির্বাহী মাজিস্ট্রেট মনীষা রানী কর্মকারের নেতৃত্বে অভিযান চালায় ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ সময় বেশ কয়েকজন দর্শনার্থী, বিক্রয়কর্মী ও প্রকাশনা সংস্থাকে জরিমানা করেন তিনি। অপরাধের ধরণ বুঝে ২০০ থেকে ১০০০ টাকা পর্যন্ত জরিমানা করা হয়।
মেলায় আলোচনা অনুষ্ঠান
বইমেলার মূলমঞ্চে শনিবার বিকাল ৪টায় অনুষ্ঠিত হয় ‘স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী: উন্নয়নে নারী’ শীর্ষক আলাচনা অনুষ্ঠান।
অনুষ্ঠানে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগে শিক্ষক জোবাইদা নাসরীন। প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে তিনি বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধে নারীদের শুধু বীরের স্বীকৃতি প্রদানই নয়; যুদ্ধবিধস্ত স্বাধীন দেশে এই বীর-নারীদের পুনর্বাসন করার জন্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল নারী পুনর্বাসন কেদ্র। শুধু বীর নারীর মর্যাদার মধ্যেই সীমাবদ্ধ হয়ে যায়নি। ১৯৭২ সালে রচিত সংবিধানে নারীর মানবাধিকার ও স্বাধীনতা নিশ্চিত করা হয়েছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছরে কর্মক্ষেত্রে নারীদের ইতিবাচক অগ্রগতি আমাদর অনেকটাই আশার জায়গা তৈরি করেছে। এর বিপরীত নারীর নিপীড়ন এবং নির্যাতনের চিত্রটিও কম ভয়াবহ নয়। নারীর জন্য নিরাপদ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করতে পারলে তা বাংলাদেশের টেকসই অগ্রগতিকে সুনিশ্চিত করবে।’
সভাপতির বক্তব্যে নাছিমা বেগম এনডিসি বলন, ‘নারী ও পুরুষকে ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে না দেখে যেদিন মানুষ হিসবে দেখা হবে, সেদিনই বাংলাদশ তার কাঙ্ক্ষিত সমতার সমাজ তৈরি করত সক্ষম হবে। নারীকে তার অধিকার আদায়ে সোচ্চার হতে হবে। পাশাপাশি পরিবার থেকেই শিশুকে নৈতিক মূল্যবোধ শিক্ষা দিতে হবে এবং নারীর প্রতি সম্মানজনক দৃষ্টিভঙ্গি লালনের মনোভাব গড়ে তুলতে হবে।’
এই দিন বইমেলায় নতুন বই এসেছে ১৪৩টি।