মেরুন রঙের কোট পরা এক ব্যক্তি অদ্ভুত অদ্ভুত কাণ্ড ঘটান। সেসব কাণ্ড দেখতে তার পেছনে পেছনে ঘুরছেন শিশু থেকে বৃদ্ধরাও। তার কর্মকাণ্ড দেখে হাসিতে লুটিয়ে পড়ছেন শিশুরা। তার সঙ্গে সেলফি তুলছেন সব বয়সী মানুষ। হাতে ছোট একটি পান্ডা পুতুল—তার সঙ্গেই ভাব জমিয়ে গল্প জুড়েছেন। উত্তরের জেলা লালমনিরহাটের প্রাণ কেন্দ্র মিশন মোড়ে অবস্থিত শিবরাম আদর্শ পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজের মাঠ প্রাঙ্গনে ঘুরে বেড়াচ্ছেন মেরুন রঙের কোট পরা ব্যক্তিটি। বিদ্যালয়ের প্রধান ফটক থেকে উঁকি মেরে সামনে গিয়ে দেখা যায়, জনপ্রিয় কমেডিয়ান ‘বাংলার মিস্টার বিন’।
প্রখ্যাত বৃটিশ কমেডিয়ান মিস্টার বিন নন তিনি। তার নাম রাশেদ শিকদার। তিনি একজন জাদুশিল্পী। কিন্তু চেহারা, গড়ন, হাসি ও আচরণে রাশেদ শিকদার হয়ে উঠেছেন ‘মিস্টার বিন’।
শনিবার (১৫ জানুয়ারি) সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, প্রতিটি শ্রেণিক্ষে হাঁটি হাঁটি পাপা করে গিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করছেন ‘বাংলার মিস্টার বিন’। মুখের সেই চাহনি আর অঙ্গ ভঙ্গির মাধ্যমে ছোট্ট সোনামণিদের বিনোদন মুখর করে তোলেন তিনি। সব শেষে শিক্ষার্থীদের মাঝে জাদু প্রদর্শন করেন রাশেদ শিকদার।
এসময় উত্তরের বিখ্যাত ম্যাজিশিয়ান রাশেদুল ইসলাম রাশেদসহ শিবরাম আদর্শ পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক রাশেদুল ইসলাম রাশেদ, অন্যান্য শিক্ষক মন্ডলী ও অভিভাবক উপস্থিত ছিলেন। বাংলার মিস্টার বিন হওয়ার গল্প শুনিয়ে রাশেদ শিকদার বলেন,‘মি. বিনকে অনুকরণের কথা কখনো আমার মাথায় ছিল না।
আমার শ্রদ্ধেয় জাদুশিল্পী এম রহমান আমাকে একদিন বললেন—রাশেদ, তুমি তো জাদুশিল্পী। কিন্তু তোমার চেহারার সাথে মি. বিনের চেহারার মিল আছে। তুমি যদি চেষ্টা করো, তাহলে বাংলার মি. বিন হতে পারবে। তারপর থেকেই চেষ্টা করে যাচ্ছি। তবে এটাকে অনুকরণ বলবো না। তার প্রতি শ্রদ্ধা রেখে গত এক বছর ধরে আমি তাকে অনুসরণ করছি।’ ছোটবেলায় রাশেদকে দেখে অনেকে মিস্টার বিন বলতো। আর এতে রেগে যেতেন তিনি।
স্মৃতিচারণ করে রাশেদ বলেন, ‘আমি বাংলার মি. বিন হিসেবে নিজেকে প্রকাশ করার আগে থেকেই লোকে বলতো, আপনাকে দেখতে মি. বিনের মতো লাগে। যারা আমার সম্পর্কে কিছুই জানেন না; তারাও প্রথম দেখাতে মি. বিন বলে আখ্যায়িত করতেন। তবে ছোটবেলায় কেউ যদি আমায় মি. বিন বলতো, আমার খুব রাগ হতো। এখন সৃষ্টিকর্তার কাছে কৃতজ্ঞতা জানাই, বিশ্বখ্যাত এমন একজন মানুষের চেহারার সাথে আমার চেহারার মিল রেখেছেন।’
রাশেদ শিকদারের জন্ম ১৯৯৮ সালের ৫ অক্টোবর পাবনা জেলার আমিনপুর উপজেলার (বেড়া) খানপুরা গ্রামে। বাবা মো. আব্দুল মান্নান শিকদার ও মা মোছা. আসমা বেগম। সমাজের নানাবিধ কল্যাণকর কাজ করার স্বপ্নসহ সকলকে সুস্থ বিনোদন উপহার দিতে চান তিনি।