ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি হতে চান সাবেক সাধারন সম্পাদক আব্দুল হামিদ। নিজের সক্ষমতা প্রমাণে ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতাদের দ্বারা চিঠি পাঠান বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুলের কাছে।
যোদিও বিএনপির গঠনতন্ত্রে এরকমভাবে প্রার্থী নির্ধারণের কোনো সুযোগ নেই। চিঠি আকারে এই আবেদন প্রদানের বিষয়টি নিয়ে জেলার রাজনৈতিক অঙ্গনে নানামুখী বিতর্কের সূত্রপাত হয়েছে।
জেলা বিএনপির সভাপতি/সাধারন সম্পাদক বরাবর লেখা চিঠিতে ছিলো ইউনিয়ন পর্যায়ের ৫১ জন নেতার স্বাক্ষর এবং সদর উপজেলার সাবেক সাধারন সম্পাদক আঃ হামিদকে সভাপতি করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এই চিঠি ফাস হবার পর থেকেই বিতর্কের মুখে পড়েছে আঃ হামিদ। জেলাজুড়ে শুরু হয়েছে আলোচনা সমালোচনা, অস্থিরতা ও ভাঙনের শুর।
বিএনপি নেতাদের মতে এই চিঠি নিয়ে বিতর্কের পিছনের রয়েছে আরও বড় কারন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা বিএনপির এক নেতা জানান, বার বার কমিটি গঠনের তারিখ পরিবর্তনের কারণে উপজেলা বিএনপির নেতারা বেশ উদ্বীগ্ন ও হতাশাগ্রস্ত। তারা মনে করছেন আঃ হামিদের চাপে খোদ বিএনপি মাহাসচিব যোগ্যা প্রার্থী নির্বাচন করতে পারছেনা। তাই বারবার তারিখ পরিবর্তন করছে। এতেকরে চিঠি ফাসের আগেই দলে ভাঙ্গনের সুর ছিলো। এখন এই চিঠি ফাস আগুনে তেল ঢালার কাজ করেছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত একাধিক নেতা এ বিষয়টি দুঃখজনক আখ্যা দিয়ে বলেন, ঠাকুরগাঁও ১ আসন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুলের নির্বাচনী এলাকা। জেলার কোনো পদে না থাকলেও জেলা উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত ফখরুল নিজেই নেন। তাই কমিটি নিয়ে বিতর্কের বিষয়টিতে সকলেই তাকে সংশ্লিষ্ট করছে। এই কারনে দলে ভাঙন হলে সারা দেশের বিএনপিতে একটা প্রভাব পরতে পারে। কারন এটা মহাসচিবের নিজের এলাকা।
জানাগেছে, ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা বিএনপি কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ায় গত ৩১ মার্চে বেশ জমকালোভাবে দ্বিবার্ষিক সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সম্মেলনে বিএনপির সহ আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিষ্টার রুমিন ফারহানা ও বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর উপস্থিত ছিলেন। সম্মেলনে ৩ সদস্য বিশিষ্ট নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়। ভোটের মাধম্যে নেতৃত্ব নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করা হয় ৯ এপ্রিল। তবে পরে তারিখ পিছিয়ে ১২ এপ্রিল করা হয়। এরপর আরও দু'বার তারিখ পিছিয়ে অবশেষে স্থগিত করা হয়। আর এই জটিলতার জন্যে আঃ হামিদের প্রভাব বিস্তারকে কারন হিসেবে দেখছে স্থানীয় নেতারা।
এই বিষয়ে আঃ হামিদের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি কিছু বলতে অস্বীকৃতি জানান।
ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির সহসভাপতি নম্র চৌধুরী জনান, দলের একটি বড় অংশ একে রাজনৈতিক স্ট্যানবাজি আখ্যা দিচ্ছে। এ ধরনের কাজ গঠনতন্ত্র পরিপন্থী। হামিদের চাপে পরে তাকেই সভাপতি করা হলে জেলা বিএনপি ও মহাসচিব আরও বিতর্কে পরবে। দলের একাধিক ত্যাগী নেতাও দল ছেড়ে দেওয়ার শঙ্কা উড়িয়ে দেয়া যায়না।
ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির সভাপতি তৈমুর রহমান বলেন, এরকম একটা আবেদন পেয়েছি। তবে এই আবেদনের মাধ্যমে চাপ সৃষ্টির কোনো সুযোগ নেই। এটা সম্পুর্ন রুপে গঠনতন্ত্র পরিপন্থী। পরবর্তি মিটিংয়ে আমি বিষয়টি উপস্থাপন করবো। এরকম ঘটনায় জবাবদিহি করা হবে।
এই বিষয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মুঠোফোনে জানান, কাউন্সিলের মাধম্যেই কমিটি নির্বাচিত করা হবে। এসকল আবেদন বা চিঠি নিয়ে বিচলিত হবার কোনো কারন নেই।
এই নিউজ পোর্টাল এর কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি ও দণ্ডনীয় অপরাধ।