লালমনিরহাটের মোগলহাট স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের পরিদর্শীকা লতিফা বেগমের বিরুদ্ধে অফিস ফাঁকি সহ গ্রাম এলাকার নারীদের সাথে খারাপ আচারণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ফলে ওই ইউনিয়নের অনেক নারী স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হয়ে পড়েছে। অপরদিকে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ শুনতে শুনতে ক্ষুব্ধ খোদ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা।
জানা গেছে, সরকার গ্রাম গঞ্জের অবহেলীত মানুষের চিকিৎসা সেবার মান বাড়াতে ১৯৯৫ সালে সদর উপজেলার মোগলহাট ইউনিয়নের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রটি গড়ে তুলেন। কিন্তু ওই ইউনিয়নের নারীদের স্বাস্থ্য সেবার জন্য পরিদর্শীকা হিসেবে লতিফা বেগম যোগদান করেন। তিনি যোগদানের পর থেকে ওই ইউনিয়নের নারীদের মনগড়া সেবা দিচ্ছেন। তার ইচ্ছামত তিনি অফিস করছেন।
প্রতি সপ্তাহে রোববার ও বুধবার একজন পরিদর্শীকা সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করার কথা থাকলেও তা লতিফা বেগম মানছেন না। তিনি সপ্তাহে রোববার ও বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় মোগলহাট স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে যান। আর বাড়ি ফিরেন দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে ১টায় মধ্যে।
পরিদর্শীকা লতিফা বেগমের অপেক্ষায় গ্রাম গঞ্জের অবহেলীত নারীরা চিকিৎসা নিতে এসে অপেক্ষায় থাকতে থাকতে বাড়ি ফিরত যান। কেউ কোন কিছু বলতে গেলে তাদের সাথে খারাপ আচারণ করেন। তার এসব আচারণে কারণে অনেকেই স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে আসতে চান না। ফলে অনেক নারীরা চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হয়ে পড়েছে।
তাছাড়াও সপ্তাহের বাকী ৩দিন সোমবার, মঙ্গলবার ও বৃহষ্পতিবার মাঠ পর্যায়ে কাজ করার নিয়ম থাকলেও লতিফা বেগম মাঠে যান না। তিনি বাড়িতেই বসে মোবাইলে অফিসের সব কাজ পার করেন।
ওই ইউনিয়নের কহিনুর বেওয়া (৬০) বলেন, ব্যাহে গত রোববার সকাল ৯টায় সময় এখানে (স্বাস্থ্য কেন্দ্রে) এসেছি। কিন্তু লতিফা আপার দেখা পাইনি। দেড় থেকে দুই ঘন্টা অপেক্ষা করে, শরীরে অনেক জ্বর ছিল, তাই বাধ্য হয়ে বাজারের দোকান থেকে ঔষধ নিয়ে বাড়ি গেছি। এর আগে একদিন দেখা আপার সাথে দেখা হয়েছে কিন্তু তার ব্যবহারও ভাল না। আমরা গ্রামের গরীব মানুষ, তাই তিনি আমাদেরকে মানুষ ভাবে না।
এ বিষয়ে পরিদর্শীকা লতিফা বেগমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি খারাপ আচারণের কথা অস্বীকার করে বলেন, আমার শরীরে ফোড়া উঠেছে। তাই কেন্দ্রে যেতে বিলম্ব হয়। আমার উপজেলা অফিসের সব স্যাররা জানেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ গোলাম নবী বলেন, পরিদর্শীকা লতিফা বেগমের বিরুদ্ধে অভিযোগের ঘটনাটি সম্পূর্ণ সত্য। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ শুনতে শুনতে আমরা ক্ষুব্ধ। অনেকবার তাকে সর্তক করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি। তাই পদক্ষেপ নিতে পারিনি। তার বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ হলে সেই সুত্র ধরে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
এই নিউজ পোর্টাল এর কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি ও দণ্ডনীয় অপরাধ।