রাজাপুর প্রতিনিধি:
ঝালকাঠির রাজাপুরে মন্দিরের নামে রেকডিও জমিতে নির্মিত মন্দিরে হামলার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে। উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি নাসির উদ্দিন মৃধা ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ করেন উপজেলা হিন্দু-বৌদ্ধ-খৃষ্টান ঐক্য পরিষদের নেতারা।
মঙ্গলবার (১৩ অক্টোবর) রাত ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। উপজেলার নারায়ন চন্দ্র দে কবিরাজ বাড়ী শ্রী শ্রী কেন্দ্রীয় সার্বজনীন দূর্গা মন্দিরের সম্পত্বি রক্ষার্থে ও হামলা কারীদের বিচারের দাবীতে বুধবার (১৪ অক্টোবর) বেলা ১১টায় রাজাপুর প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। হামলার প্রতিবাদ জানিয়ে ও হামলাকারীদের বিচারের দাবিতে প্রশাসনের নিকট স্বারকলিপিও প্রদান করেছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।
মানববন্ধনে দেওয়া বক্তব্যে ঐক্য পরিষদ ও পুজা উৎযাপন পরিষদের নেতারা অভিযোগ করেন, রাজাপুর সদরে প্রায় দেড়’শ বছর আগের পুরাতন নারায়ন চন্দ্র দে ও শরৎ চন্দ্র দে কবিরাজ বাড়ী শ্রী শ্রী কেন্দ্রীয় সার্বজনীন দূর্গা মন্দিরের নামে এস এ ১৮৪৬ নং খতিয়ানের এস এ ৪৯৬৮ নং দাগে ৭ শতাংশ দেবত্তোর সম্পত্তির উপর অবস্থিত একটি টিন সেট ঘরে সরস্বতি ও বিশ্বকর্মা প্রতিমা বিরাজমান রয়েছে।
আসন্ন স্বারদীয় দূর্গোৎসব পালনের আয়োজন চলছিল উপজেলা সদরের জেলখানা সড়কের কবিরাজ বাড়ির দুর্গা মন্দিরে। এ সময় মন্দিরের পাশে বিবাদমান জমিতে টিনসেট মন্দির ঘরে আলোচনায় বসেছিলেন মন্দির কমিটির সভাপতি হিমাংশু শেখর দাসসহ কয়েকজন।
রাত ৯টার দিকে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা নাসির উদ্দিন মৃধা কয়েকজন সহযোগী নিয়ে এসে জমিটি নিজেদের দাবি করে হামলা চালিয়ে সবাইকে মন্দিরঘর থেকে বের করে দেয়। হামলার প্রধান নায়ক গোলাম ফারুকের নেতৃত্বে নাসির উদ্দিন মৃধাসহ আরো ১০-১২ জন লোকের হাতে লাঞ্চিত হয় মন্দিরের সভাপতি ও ভক্তবৃন্দরা।
এক পর্যায়ে মন্দিরের ভক্তবৃন্দদেও লাঠি সোটা নিয়ে ধাওয়া করে ফারুক বাহিনি। এরপরে মন্দিরের ভিতরে থাকা ভক্তবৃন্দদের অকথ্য ভাষায় গাল মন্দ করেন ঐ বাহিনি।
এদিকে উপজেলা হিন্দু-বৌদ্ধ-খৃষ্টান ঐক্য পরিষদের মানববন্ধন শেষে দুপুরের দিকে আত্মপক্ষ সমর্থন করে স্থানীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন অভিযুক্ত নাসির উদ্দিন মৃধা ও নজরুল ইসলাম স্বপন তালুকদারসহ জমির ক্রেতা ঠিকাদার ফারুক খান। লিখিত বক্তব্যে জানান, মন্দিরের নাম ব্যবহার করে আমাদের ক্রয়কৃত জমি দখলের চেষ্টা করছে হিমু দাসসহ কিছু দুস্কৃতিকারী।
জমির বৈধ কাগজপত্র ও আদালতের রায় আমাদের পক্ষে রয়েছে। গতকাল রাতে ১৪৪ ধারা ভঙ্গকরে সেখানে কাজ করছিল মন্দির কর্তৃপক্ষ। আমরা শুধু তার প্রতিবাদ করেছি। সেখানে কোন ধরণের হামলার ঘটনা ঘটেনি। এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট।
রাজাপুর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, গতকাল রাতে উভয়পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি। বিষয়টি যেহেতু আদালতে বিচারাধীন সেহেতু উভয় পক্ষকেই আদালত অথবা স্থানীয়ভাবে মিমাংসা করার জন্য পরামর্শ দিয়েছি।