বৃদ্ধা মাকে নিয়ে ৩দিন ধরে খোলা আকাশের নিচে বাস করছেন লালমনিরহাটের সংবাদপত্র বিক্রেতা সোহেল রহমান ভুট্টু। গত শুক্রবার দুপুরে হাঠাৎ বয়ে যাওয়া ঝড়বাতাসে মা ও ছেলের মাথা গোঁজার একমাত্র একচালা টিনের ঘরটি দুমড়ে মুড়ছে যায়।
গত শনিবার বিকালে ঘটনা স্থান পরির্দন করে ঘর মেরামতের আশ্বাস দিয়েছেন জেলা প্রশাসক আবু জাফর। সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, শহরের বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার রাস্তার পাশে ভাঙ্গা বাড়িটির চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে ঘরের টিন ও বাশেঁর খুঁটি। খোলা আকাশের নিচে খালি চকিতে বসে চোখের পানি ফেলছেন ষাঠোর্ধ বৃদ্ধা। তিনি হলেন সংবাদপত্র বিক্রেতা ভুট্টুর মা নূরজাহান বেওয়া।
এসময় ছেলে ভুট্টু বলেন, অভাবের সংসার প্রতিদিন সকাল হলেই যেতে হয় পেপার বিক্রি করতে। পেপার বিক্রির টাকায় চলে মা ও অবিবাহিত ছেলের সংসার। জানাগেছে, দির্ঘদিন থেকে অন্যের জমিতে আশ্রিত হিসেবে একটি এক চালা ঘর তৈরি করে মা ও ছেলে বসবাস করে আসছেন। ছেলে পত্রিকা বিক্রি করে যে সামান্য আয় করেন তাই দিয়ে দুবেলা ডাল ভাত হয়। কিন্ত শুক্রবার দুপুরে ঝড়বাতাসে থাকার ঘরটি তচনচ হয়ে যায়। দিনভর বৃষ্টি থাকায় রাতে অন্যের বাড়িতে কোনও রকম রাত কাটালেও এখন খোলা আকাশের নিচে বাস করছেন তারা। এসময় হাতে টাকা পয়সা না থাকায় ঘরটি মেরামত করতে পাচ্ছেন না জানিয়ে কেঁদে ফেলেন বৃদ্ধা মা। মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে সংবাদপত্র বিক্রেতা সোহেল রহমান ভুট্টু বলেন, সে পেপার নিয়ে রেলস্টেশনে আছেন।
আকাশ খারাপ, ক্রেতা তেমন নেই অন্যদিকে বাড়িতে ঘর ভেঙ্গে যাওয়ার কারনে রান্নার ব্যবস্থাও নেই। চরম এক হতাশার মধ্যে থাকার কথা জানিয়ে ভুট্টু বলেন, সে টাকার অভাবে বাড়িটি মেরামত করতে পারছেন না।
এদিকে জেলা শহরের মধ্যে দুদিন ধরে চরম মানবেতর অবস্থায় থাকলেও সংবাদপত্রসেবী ভুট্টুর খোঁজ নেয়নি স্থানীয় কাউন্সিলররা। গত শুক্রবার বিকালে লালমনিরহাট প্রেসক্লাবের সাধারন সম্পাদক আশিকুর রহমান সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক’এ বিষয়টি তুলে ধরলে জেলা প্রশাসক আবু জাফরের দৃষ্টিগোচর হয়। তিনি তাৎক্ষণিক চাল, ডাল, তেল, চিড়া নিয়ে সংবাদপত্র বিক্রেতা ভুট্টুর বাড়িতে ছুটে যান। এসময় জেলা প্রশাসক দ্রুত ঘর মেরামতের আশ্বাস দেন।