সিরাজগঞ্জের সলঙ্গায় শহীদ মিনারে ফুল দেওয়াকে কেন্দ্র করে বিএনপির দু’গ্রুপের হতাহাতির ঘটনাসহ ফুলের তোড়া ছিড়ে ফেলে পদ-দলিত করার অভিযোগ উঠেছে। এঘটনাকে কেন্দ্র করে বিএনপির দু’গ্রপের কর্মী সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ায় তড়িঘড়ি করে মিনারে ফুল দিয়ে মিনার ত্যাগ করেছেন উভয় গ্রুপের নেতা-কর্মীরা।
এদিকে থানা বিএনপির পক্ষ থেকে তৈরিকরা ফুলের তোড়া টেনে ছিড়ে ফেলার ফলে বিএনপির পক্ষ থেকে মিনারে তোড়া নিয়ে শ্রদ্ধাঞ্জলি জানাতে না পারায় বিএনপি নেতা-কর্মীরা ক্ষুব্ধ হয়ে পড়েছেন। অপরদিকে এঘটনার জেরধরে সলঙ্গা বাজারের ধানহাটায় থানা বিএনপির আহ্বায়কের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বিএনপির অস্থায়ী অফিসে ২য় দফায় হট্রগোল হয়েছে।
এসময় থানা বিএনপির আহ্বায়ক আলহাজ্ব দেলোয়ার হোসেন খান অঙ্গ সংগঠনের এক নেতার রোসানলের শিকার হয়েছেন। এঘটনায় সলঙ্গা থানা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য হেদায়েতুল হক আইয়ুবকে আহ্বায়ক করে ৫সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
সলঙ্গা থানা বিএনপির একটি সুত্রে জানাগেছে,মহান ভাষা আন্দোলনে আত্মদানকারী ভাষা শহীদদের স্মরণে ২১ ফেব্রুয়ারী সকালে সলঙ্গা ডিগ্রী কলেজ চ্ত্বরের শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে যায় থানা বিএনপিসহ অঙ্গ এবং সহযোগি সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। এসময় শহীদ মিনারে নেতা-কর্মীদের নিয়ে ফুলের শ্রদ্ধাঞ্জলি জানাতে দাঁড়িয়ে ছিলেন সলঙ্গা থানা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ন-আহ্বায়ক ও জেলা বিএনপির শিল্প ও বাণিজ্যিক বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল আলীম সরকার আর কলেজ মাঠের ভিতরে ফুলের তোড়া নিয়ে অন্যান্য নেতা-কর্মীকে নিয়ে দাঁড়িয়ে থেকে সেলফিসহ নানাভাবে ছবি তুলতে ব্যস্ত ছিলেন থানা বিএনপির সদস্য সচিব আব্দুল আলীম শেখ। এদিকে ভীড় এড়াতে অসুস্থ আব্দুল আলীম সরকারকে দিয়ে মিনারে শ্রদ্ধাঞ্জলি জানানোর সুযোগ করে দিতে মাঠের ভিতর ফুলের তোড়া নিয়ে অবস্থানরত সদস্য সচিব আব্দুল আলীম শেখের নিকট থেকে তোড়াটি আনতে যায় থানা বিএনপির সিনিয়র যুগ্নআহ্বায়ক আব্দুল আলীম সরকারের একনিষ্ঠকর্মী ও শুভাকাঙ্খী থানা শ্রমিকদলের দপ্তর সম্পাদক আব্দুল মালেক।
কিন্তু তাকে ওই নেতা ও তার কর্মীরা ফুলের তোড়া না দেওয়ায় উভয়ের মধ্যে টানাহেঁচড়া শুরু হয়। একপর্যায়ে উভয় পক্ষের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এসময় উভয় পক্ষের উত্তেজিত কর্মীরা টানাহেচড়া করে ফুলের তোড়া ছিড়ে ফেলে পদ-দলিত করেছে। পরে স্পর্শকাতর এবিষয়টি যাতে জনসম্মুখে ছড়িয়ে না পড়ে সে ব্যাপারে থানা বিএনপি’র একটি অংশ ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য চেষ্টা করে কিন্তু তারা চাপা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় ঘটনাটি তাৎক্ষনিকভাবে সলঙ্গায় ছড়িয়ে পড়ে। এদিকে ভাষা শহীদদের সম্মানে থানা বিএনপির পক্ষ থেকে তৈরি করা ফুলের তোড়া এভাবে ছিড়ে পদ-দলিত করায় ভাষা শহীদদের অসম্মান করা হয়েছে বলে দাবী করে বিএনপির একটি অংশ এঘটনার সঠিক তদন্তসহ ঘটনার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী জানিয়েছেন।
অপরদিকে বিএনপির আরেকটি অংশ দাবী করছেন থানা বিএনপির আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সিনিয়র যুগ্ন-আহ্বায়ক আব্দুল আলীম সরকার ও সদস্য সচিব আব্দুল আলীম শেখের মধ্যে অনেক দিন ধরে ভিতরে ভিতরে দ্বন্দ্ব বিরাজ করলেও তা প্রকাশ পায়নি কিন্তু বর্তমান এঘটনার মধ্যদিয়ে তাদের দ্বন্দ্বের বিষয়টি এখন প্রকাশ্যে রুপ নিয়েছে। থানা বিএনপির নেতৃত্ব ও কর্তৃত্ব তারা উভয় দু’জনই নিতে মরিয়া হয়ে ওঠায় এমন স্পর্শকাতর ঘটনাটির উদভব ঘটেছে বলে ধারণা করছেন সলঙ্গা থানা বিএনপির প্রবীণ নেতারা। আবার থানা বিএনপির আরেকটি অংশ বলছেন আগামীর নেতৃত্ব নিয়ে কাড়াকাড়ির বিষয়টিও থানা বিএনপির সিনিয়র নেতাদের জন্যও লজ্জাজনক। তবে সলঙ্গার অতি উৎসাহিত কিছু নেতা-কর্মীর কারণেই আজ এসকল নেতারা থানা বিএনপির সিনিয়র নেতাদের পাশ কাটিয়ে নেতৃত্ব গ্রহণের আস্ফলন দিচ্ছেন।
এটা সলঙ্গা থানা বিএনপির ভবিষ্যৎ নেতৃত্বকে ক্ষতির সংকেত জানান দিচ্ছে। এব্যাপারে থানা বিএনপির আহ্বায়ক আলহাজ্ব দেলোয়ার হোসেন খান বলেন,ঘটনা সত্য তবে এব্যাপারটি যেন সংবাদপত্রে না আসে সে বিষয়ে তিনি অনুরোধ করেন।
থানা বিএনপির নেতা ও তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক হেদায়েতুল হক আইয়ুব এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান। এব্যাপারে সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান বাচ্চু এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন বিষয়টি আমার জানানেই। তবে আমি আপনার মাধ্যমে অবগত হলাম তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।