সিরাজগঞ্জের সলঙ্গায় অস্ত্রপচারের পর ভুল গ্রুপের রক্ত দেওয়ায় সবিতা খাতুন (২৪) নামে এক প্রসূতি মৃত্যু হয়েছে। সাখাওয়াত এইচ মেমোরিয়াল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের গাফিলতি ও রক্তের গ্রুপ নির্ণয়ে অদক্ষতার কারণে তার মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন পরিবারের সদস্যরা। রবিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) সকালে ওই গৃহবধূর পরিবারের লোকজন এমন অভিযোগ করেন। বুধবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার কিউর স্পেশালাইজড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
সবিতা সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার মালসিন গ্রামের মুকুল হোসেনের স্ত্রী এবং একই উপজেলার ভাদাস গ্রামের সুজাব আলীর মেয়ে। বাবা সুজাব আলী ও স্বামী মো. মুকুল হোসেন বলেন, গত ৯ ফেব্রুয়ারি বাচ্চা প্রসবের জন্যে সবিতাকে হাটিকুমরুল গোলচত্বর এলাকার সাখাওয়াত এইচ মেমোরিয়াল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
http://kolomerbatra.com/টিকা-না-নিলে-ব্যবসায়ীদে/
ওই দিনই অস্ত্রপচারের মাধ্যমে বাচ্চা প্রসবের কথা বলেন চিকিৎসক ডা. রবিউল আলম ও তার স্ত্রী ডা. জান্নাতুল মাওয়া। অস্ত্রপচারের আগে রক্তের গ্রুপ নির্ণয়সহ বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। এ সময় সবিতার রক্তের গ্রুপ এবি পজেটিভ আসে। ওই গ্রুপের রক্ত দেওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকতে বলা হয়। এরপর সফলভাবেই অপারেশন শেষ হয় এবং সুস্থ বাচ্চা প্রসব করে সবিতা। কিন্তু পরদিন তাকে রক্তের প্রয়োজন হলে এবি পজেটিভ গ্রুপের রক্ত দেওয়া হয়। এদিকে রক্ত দেওয়ার পর থেকেই রোগীর অবস্থা খারাপ হতে থাকে।
অবস্থার অবনতি দেখে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। সেখানে নেওয়ার পর রক্ত পরীক্ষা করলে রক্তের গ্রুপ ‘ও পজেটিভ’ শনাক্ত হয়। সেখানে ৫দিন চিকিৎসার পর তাকে ঢাকার কিউর স্পেশালাইজড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেও রক্তের গ্রুপ পরীক্ষা করলে ‘ও পজেটিভ’ শনাক্ত হয়। ওই হাসপাতালের আইসিইউতে ৪ দিন চিকিৎসার পর বুধবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) ভোরে মারা যায় সবিতা।
পরে মৃত্যুর কারণ হিসেবে ভুল রক্ত সঞ্চালনা করা হয়েছে বলে ডেথ সার্টিফিকেটে উল্লেখ করেন কিউর হাসপাতালের চিকিৎসক। এ বিষয়ে জানতে সাখাওয়াত এইচ মেমোরিয়াল হাসপাতালের জেনারেল ম্যানেজার জাকির হোসেনের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, আমি এমডি স্যারের সঙ্গে কথা বলে পরে কথা বলব।
সলঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাদের জিলানী বলেন, ঘটনাটি আমি শুনেছি। তবে ভিকটিমের পরিবার থানায় না এসে কোর্টের আশ্রয় নিয়েছে বলে জেনেছি।
উল্লেখ্য সাখাওয়াত এইচ মেমোরিয়াল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের উদাসিনতা, চিকিৎসক রবিউলের ভুল চিকিৎসা ও দায়িত্বের অবহেলায় শিশু চুরি এবং নবজাতকসহ প্রায়ই প্রসূতি মারা যাওয়ার ঘটনা ঘটছে।