সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা থানার ধুবিল মেহমানশাহীর ভিতর দিয়ে প্রবাহিত গারুদহ নদী পারাপারের একমাত্র ভরসা বাঁশের সাঁকো। এই সাঁকো দিয়েই প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নদী পারাপার হয়ে থাকেন ধুবিল মেহমানশাহীসহ কয়েকটি গ্রামের প্রায় কয়েক হাজার মানুষ। স্বাধীনতার ৫০ বছর পেরিয়ে গেলেও ধুবিল মেহমানশাহীসহ পার্শ্ববর্তী কয়েকটি গ্রামের প্রায় কয়েক হাজার মানুষের নদী পারাপারের জন্য আজও কোনো ব্রিজ নির্মাণ করা হয়নি। ফলে বাঁশের সাঁকো দিয়েই প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসার শিক্ষার্থীসহ নানা শ্রেণি পেশার মানুষ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়,সলঙ্গা থানা সদর থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে ধুবিল মেহমানশাহী নামক স্থানে একটি ব্রিজের অভাবে হাজার হাজার মানুষ দুর্ভোগে রয়েছে।বিশেষ করে নদীর পুর্বপাড়ে উচ্চ বিদ্যালয়, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র অবস্থিত হওয়ায় স্কুলগামী নদীর পশ্চিম পাড়ের শিক্ষার্থীসহ দুর্ভোগ আর দুর্গতির মধ্যদিয়ে বাঁশের সাঁকো পাড়ি দিতে হচ্ছে। অপরদিকে নদীর পশ্চিম পাড়ে কবরস্থান স্থাপিত কবরে মৃত্যুদেহ দাফন করতে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয় পুর্বপাড়ের বাসিন্দাদের। অবহেলিত এ অঞ্চলের মানুষের সরাসরি যোগাযোগের জন্য একটি ব্রিজ নির্মাণের দাবি দীর্ঘ দিনের।কিন্তু আদৌ তাদের এ দাবি পুরণ হয়নি।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান,আওয়ামীলী একাধারে তিন বার রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসীন আর ক্ষমতাসীন সেই দলের মুল সংগঠন আওয়ামীলীগ ধুবিল ইউনিয়ন শাখার সভাপতির বাড়ী এই গ্রামেই। অথচ সে বদৌলতেও আজ পর্যন্ত এ ব্রিজের দাবী পুরণ হয়নি এ অঞ্চলের মানুষের।
এ ব্যাপারে ধুবিল মেহমানশাহী গ্রামের মো: হায়দার বিন জামাল ও মেজবাউর রহমান খোকন জানান,আমরা যুগ যুগ ধরে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে শুকনো মৌসুমে বাঁশের সাঁকো ও বর্ষার মৌসুমে নৌকা দিয়ে নদী পারাপার হতাম কিন্তু নৌকা পারাপারে বেশী ঝুঁকিপুর্ণ হওয়ায় সারা বছরই এখন বাঁশের সাঁকো দিয়ে নদী পারাপার হয়ে থাকি।তবে ধুবিল মেহমানশাহী গ্রামটি বিশাল বড় হওয়ায় পার্শ্ববর্তী নদীর উভয় পাড়ের দু’টি স্থানে বাঁশের সাঁকো স্থাপন করা হয়েছে। এরমধ্যে একটি সাঁকো গ্রামের দক্ষিন প্রান্তে,আরেকটি গ্রামের মধ্যস্থল উত্তর প্রান্তে অবস্থিত। স্বাধীনের পর থেকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনসহ এ যাবতকাল যতগুলো জাতীয় সংসদ নির্বাচন হয়েছে ততগুলো নির্বাচের সময়ই ভোটের স্বার্থে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা তাদেরকে ব্রিজ নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।কিন্তু পরে যে দলই রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় যায় না কেন তখন সেই ক্ষমতাসীন দলের নেতারা সেই প্রতিশ্রুতির কথা ভুলে যান।
এব্যাপারে জাতীয় সংসদ সদস্য ডা.আব্দুল আজিজসহ সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের অধীনস্থ রায়গঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী জানান, জনগুরত্বপুর্ণ ধুবিল মেহমানশাহী নামক স্থানে নদী পারাপারের জন্য একটি ব্রিজ নির্মাণের দাবি অত্যন্ত গ্রহণযোগ্য।এ দাবীর সফল বাস্তবায়ন করতে সংশ্লিষ্ট বিভাগের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট লিখিত প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে।
এই নিউজ পোর্টাল এর কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি ও দণ্ডনীয় অপরাধ।