হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনাল উন্নয়নের কাজের জন্য আমদানি করা মালামাল পড়ে আছে বিভিন্ন বন্দরে। ট্যাক্স-ভ্যাট পরিশোধ করতে না পারায় এসব মালামাল খালাস করা যাচ্ছে না। বিল বকেয়া থাকায় ঠিকাদাররাও যথাসময়ে মালামাল দিচ্ছেন না। এ অবস্থায় আগামী অক্টোবরে উদ্বোধনের কথা থাকলেও তা নিয়ে সংশয় দেখা দেয়। অবশেষে এই অর্থ সংকট কাটিয়ে গতিশীল হতে চলেছে থার্ড টার্মিনাল উন্নয়নের কাজ। জানা গেছে, এ ব্যাপারে চলতি সপ্তাহেই ১৫০ কোটি টাকা ঋণ দিচ্ছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)।
গতকাল বেবিচকের বোর্ড সভায় টার্মিনাল কর্তৃপক্ষকে জরুরি ভিত্তিতে ঋণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সব কিছু ঠিক থাকলে চলতি সপ্তাহেই ১৫০ কোটি টাকা পাবে টার্মিনাল কর্তৃপক্ষ। এই অর্থ ছাড় পাওয়ায় আগামী অক্টোবর মাসে থার্ড টার্মিনালের কার্যক্রম শুরুর বিষয়ে আশাবাদী বেবিচক।
জানা গেছে, চলতি মাসের ১ জুলাই টার্মিনালের প্রকল্প পরিচালক একেএম মাকসুদুল ইসলাম চিঠি পাঠান বেবিচককে। তাতে উল্লেখ করা হয়, প্রকল্প কাজের স্বার্থে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাজেট বরাদ্দের বিপরীতে জিওবি খাতে বরাদ্দকৃত তহবিল পাওয়ার আগ পর্যন্ত সময়ে প্রকল্পের আয়কর ও ভ্যাট এবং আমদানিকৃত মালামালের কাস্টম ডিউটি পরিশোধের জন্য ১৫০ কোটি টাকা ঋণ প্রয়োজন। কর্তৃপক্ষের নিজস্ব তহবিল থেকে এই ঋণ প্রদানের জন্য তিনি চিঠিটি দেন।
এ বিষয়ে বেবিচকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, গতকাল বেবিচকের সদর দপ্তরে বোর্ড মিটিং হয়, যেখানে বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার কমডোর সাদিকুর রহমান চৌধুরীসহ
ঊর্ধ্বতনরা উপস্থিত ছিলেন। থার্ড টার্মিনাল অক্টোবর মাসে উদ্বোধন করা ও অন্যান্য বিষয়ে আলোচনা হয়। থার্ড টার্মিনালের জন্য দ্রুত ১৫০ কোটি টাকা দিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। চলতি সপ্তাহেই পুরো অর্থ পাবে টার্মিনাল কর্তৃপক্ষ। গত ৫ এপ্রিল টার্মিনালের কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। ৬ এপ্রিল ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এভিয়েশন ঢাকা কনসোর্টিয়ামের (এডিসি) কাছ থেকে টার্মিনাল বুঝে নেওয়ার কথা থাকলেও তা নিতে পারেনি বেবিচক।
বেবিচক সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালের ২৪ অক্টোবর শাহজালাল বিমানবন্দর সম্প্রসারণ প্রকল্পের অনুমোদন দেয় একনেক। নির্মাণকাজে অর্থায়ন করছে জাইকা।
বেবিচকের ঊর্ধ্বতন আরেক কর্মকর্তা বলেন, থার্ড টার্মিনালকে সামনে রেখে ১২টি নতুন এয়ারলাইন্স ফ্লাইট পরিচালনার জন্য আবেদন করেছে। টার্মিলালের জন্য বাংলাদেশ সরকার দিচ্ছে ৫ হাজার ২৫৮ কোটি ৩ লাখ ৮৮ হাজার টাকা। বাকি ১৬ হাজার ১৪১ কোটি ২ লাখ ৪৫ হাজার টাকা ঋণ হিসেবে দিচ্ছে জাইকা। এরই মধ্যে টাকা ঘাটতি দেখা দিয়েছে। ১৫০ কোটি টাকা পেলে টার্মিনালের নির্মাণকাজ নির্দিষ্ট সময়ে শেষ করা সম্ভব হবে আশা করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, গত ৭ জুলাই ‘অর্থ সংকটে থমকে গেছে থার্ড টার্মিনালের কাজের গতি’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় দৈনিক আমাদের সময়ে। এরপর এ পদক্ষেপ নিল কর্তৃপক্ষ।
এই নিউজ পোর্টাল এর কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি ও দণ্ডনীয় অপরাধ।