মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বলেছেন, দুই দেশের পারস্পরিক স্বার্থকে এগিয়ে নিতে আগামী দিনগুলোতে আরও নিবিড়ভাবে কাজ করার প্রতীক্ষায় আছি। বাণিজ্য, জলবায়ু পরিবর্তন এবং রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের নতুন সরকারের সঙ্গে ওয়াশিংটন ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবে। বুধবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের সঙ্গে প্রথম সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের সঙ্গে ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস সাক্ষাৎ করেন। সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের পিটার হাস বলেন, আপনাদের নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পেয়েছি। তাকে আমি আগের দায়িত্ব থেকে চিনি। যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশ সম্পর্কের ভবিষ্যৎ, জলবায়ু এবং বাণিজ্যের সুযোগ সম্প্রসারণের মতো বিষয় নিয়ে এবং রোহিঙ্গা সংকটের মতো পারস্পরিক গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে কীভাবে আমরা একসঙ্গে কাজ করতে পারি তা নিয়ে আলোচনা করেছি। নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা সহযোগিতা নিয়েও আলোচনা হয়েছে।
বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ করার লক্ষ্যে বাণিজ্য সম্প্রসারণ, জঙ্গি দমন ও ‘ফ্যানাটিজম’ মোকাবিলাসহ সব ক্ষেত্রে একসঙ্গে কাজ করার বিষয়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে ফলপ্রসূ আলোচনার কথা জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, আমাদের ৫২ বছরের পথচলায় যুক্তরাষ্ট্রের বড় উন্নয়ন সহযোগীর ভূমিকার জন্য রাষ্ট্রদূতকে ধন্যবাদ জানিয়েছি। বাণিজ্য খাতেও তারা আমাদের বড় অংশীদার। আমাদের ‘বিজনেস বাস্কেট’ আরও সমৃদ্ধ করা ও যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি বিনিয়োগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে আলোচনা হয়েছে। আমাদের নতুন সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার অভিপ্রায় ব্যক্ত করেছেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত।
নানা বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, জঙ্গি দমনে এবং বিশ্বব্যাপী ‘ফ্যানাটিজম’ মোকাবিলায় আমরা দীর্ঘদিন একসঙ্গে কাজ করছি, ভবিষ্যতেও কাজ করব-সেই আশাবাদ ব্যক্ত করেছি। রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়েও আলোচনা হয়েছে। রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর জন্য আমরা সব সময় তাদের সহযোগিতা চেয়ে এসেছি। আবারও তা পুনর্ব্যক্ত করেছি। একযোগে কাজ করার বিষয়ে আমরা ঐকমত্য হয়েছি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও জানান, গত নির্বাচনে মার্কিন পর্যবেক্ষকদের পাঠানোর জন্য ধন্যবাদ দিয়ে রাষ্ট্রদূত সুষ্ঠু, সুন্দর, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের কথা জানিয়েছিল। শীত ও কুয়াশা সত্ত্বেও প্রায় ৪২ শতাংশ ভোট পড়েছে। এটি একটি ভালো ভোটার টার্ন-আউট।
৭ জানুয়ারির নির্বাচন নিয়ে বিদেশি পর্যবেক্ষকদের একাংশ সন্তোষ প্রকাশ করলেও যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য ভোট ‘সুষ্ঠু হয়নি’ বলে বিবৃতি দেয়। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার এক বিবৃতিতে বলেন, বাংলাদেশে বিরোধী রাজনৈতিক দলের হাজার হাজার সদস্যের গ্রেফতার ও নির্বাচনের অনিয়মের খবরে যুক্তরাষ্ট্র উদ্বিগ্ন। অন্য পর্যবেক্ষকদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র একমত-নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়নি। এতে সব দল অংশ না নেওয়ায় আমরা হতাশ।
এই নিউজ পোর্টাল এর কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি ও দণ্ডনীয় অপরাধ।