গাজীপুর সিটির ৩০,৩১,ও ৪০ নং ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত কয়েরকটি গ্রাম। এখানে নেই কোন ভাল আবাসন ব্যবস্থা,নেই কোন শিল্প কলকারখানা। ছেলে মেয়েদের লেখা পড়া ও বিদেশ পাঠানো থেকে শুরু করে নিজেদের অন্যান্য প্রয়োজন মেটাতে ধান ক্ষেত ভিটে মাটিসহ আবাদি জমি বিক্রি করতে হচ্ছে অনেকের। অসহায়ত্বের মত জীবন যাপন করছে বেকার যুবক। এরই ধারাবাহিকতায় ও বেকার যুবকদের আত্মকর্মসংস্থানের লক্ষ্যে গ্রামকে শহরে পরিনত করে বর্তমান সরকারের নেওয়া পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ইছালি গ্রামে প্রায় ২৭ বিঘা জমির উপর গড়ে উঠতে চলেছে মেসার্স ইন্টেলিজেন্ট কার্ড কো: লিমিটেড নামক ফ্যাক্টরী। এতে একদিকে যেমন বেকারত্ব দূর হবে অন্য দিকে উন্নয়নের মনি কোঠায় পৌঁছাবে এ গ্রামটি।
অথচ এ চলমান উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে বাধা সৃষ্টি করার পায়তারা করছে বিএনপি-জামায়াতের এজেন্ডা যারা দেশ ও জাতির শত্রু এমনটাই দাবী করেন এলাকাবাসী।
চলমান উন্নয়ন কাজে সৃষ্টিকারীদের চিহ্নিত করে দ্রুত আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছে ইছালি গ্রামের সাধারণ নাগরিক সমাজ। জানা যায়, টঙ্গীর মুদাকা পূর্বপাড়া কাকিল সাতাইশ এলাকার বাসিন্দা মেসার্স ইন্টেলিজেন্ট কার্ড কো: লিমিটেড এর পক্ষে চেয়ারম্যান মঞ্জুরুল হাসান ন্যায্য মূল্যে কৃষকদের কাছ থেকে ২৭ বিঘা তফসিলভুক্ত সম্পত্তি ক্রয় করেন। দীর্ঘ দিন ধরে বিভিন্ন স্বার্থান্বেষী মহল ব্যবসায়িক ও রাজনৈতিক হীন উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের লক্ষ্যে নানাবিধ ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছেন।
এ নিয়ে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেন এলাকাবাসী। বিএনপি-জামায়াতের এজেন্ডা মেসার্স ইন্টেলিজেন্ট কার্ড কো: লিমিটেড এর চলমান উন্নয়ন কাজে বাধা সৃষ্টি করার লক্ষ্যে ভুয়া জমির মালিক সাজিয়ে একের পর এক মানববন্ধন করে এলাকায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির পায়তারা করে বেড়াচ্ছে।
এ বিষয়ে ইছালি গ্রামের ওসমান আলীর ছেলে জমির মালিক আব্দুস সাত্তার সাংবাদিকদের বলেন, আমাদের এখানে একটি কম্পোজিট ফ্যাক্টরী নির্মানের জন্য জমি বিক্রি করেছি। যারা জমি ক্রয় করেছে তাদের সাথে কথা হয়েছে, ফ্যাক্টরী করার স্বার্থে ২০২২ সালে ১ বিঘা জমি বিক্রি করেছি। এলাকার উন্নয়নের স্বার্থে ন্যায্য মূল্যের বেশি দামে জমি বিক্রি করেছি। যারা মানববন্ধন করেছে তারা কারা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যারা মানববন্ধন করেছে তাদের এখানে কোন জমি নেই।
আরেক জমির মালিক ইছালি গ্রামের হাজী সামসুদ্দিন এর ছেলে মো: আলফাজ উদ্দিন বলেন, আমার ছেলে টঙ্গীতে দোকানের জন্য ইন্টেলিজেন্ট কার্ড কোম্পানির কাছে ২৬ শতাংশ জমি বিক্রি করি। জোরপূর্বক ভাবে জমি নেওয়া হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার কাছ থেকে জোরপূর্বক কোন জমি নেওয়া হয় নাই।
টেকিপাড়া গ্রামের হাজী আব্দুল গফুরের ছেলে মো: শাহজাহান বলেন, আমার এক ছেলে ফ্রান্সে থাকে, আরেক ছেলে ফ্রান্সে যাওয়ার জন্য ২২ লাখ টাকা প্রয়োজন পাশাপাশি এলাকার উন্নয়নের জন্য আড়াই বিঘা জমি ন্যায্য মূল্যে ইন্টেলিজেন্ট কার্ড কোম্পানির কাছে বিক্রি করে দেই।
ধীরাশ্রম গ্রামের আদম আলী মোল্লার ছেলে আবু সাঈদ বলেন, আমি এখানে পূর্বে জমি কিনেছিলাম, এখন শুনতে পারলাম এখানে ইন্টেলিজেন্ট কার্ড কোম্পানি নামের একটি ফ্যাক্টরী হবে। এজন্য এলাকা বাসীর স্বার্থে, এলাকার উন্নয়নের জন্য স্বেচ্ছায় আমি সোয়া ৫৩ শতাংশ উক্ত কোম্পানির কাছে বিক্রি। এ এলাকা যেন উন্নত হয়, এটাই আমাদের একমাত্র কামনা। শুনলাম এখানে উন্নয়নে বাধাগ্রস্থ করতে কয়েকজন মিলে মানববন্ধন করেছে আমার জানামতে তাদের এখানে কোন সম্পত্তি নাই। তারা অহেতুক ভাবে এ কাজকে বিঘ্ন ঘটানোর জন্য তারা চেষ্টা করতাছে। এখানে একটা কোম্পানি হবে, এটা আমরা চাই।
স্থানীয় মৃত নূর মোহাম্মদ এর ছেলে সাইফুল ইসলাম বলেন, আমি পৈত্রিক ওয়ারিশ সূত্রে জমির মালিক ইন্টেলিজেন্ট কার্ড কোম্পানির কাছে ১৪ শতাংশ সম্পত্তি বিক্রি করেছি। এখানে মূল্য ছিল প্রায় ১৮ লাখ টাকা বিঘা, কোম্পানি আমাকে ৬০ টাকা বিঘা জমির মূল্য দিয়েছে পাশাপাশি তাদের প্রয়োজনে এলাকার উন্নয়নের জন্য স্বার্থে আমিও আমার জমি বিক্রি করেছি। ফ্যাক্টরীর দ্বারা যাতে এলাকার উন্নয়ন হয় সেজন্য আমিও আমার জমি করেছি। যারা মানববন্ধন করেছে আসলে তাদের এখানে জমি নাই। তারা কেন এ উন্নয়ন কাজে বাধা দিচ্ছে এটার আমার বোধগম্য নেই এবং আমার চাচা আবুল কালাম আজাদ টঙ্গী কলেজের প্রফেসর তিনিও এলাকার উন্নয়নের স্বার্থে ইন্টেলিজেন্ট কার্ড কোম্পানির কাছে ৩বিঘা জমি স্বেচ্ছায় বিক্রি করে।
মেসার্স ইন্টেলিজেন্ট কার্ড কো: লিমিটেড এর পক্ষে শেখ রাসেল জাতীয় শিশু কিশোর পরিষদ গাজীপুর সদর মেট্রোথানার সাবেক সভাপতি মো: জাহাঙ্গীর আলম জিকু বলেন, ১৯৮৫ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত গাজীপুর সিটির ৩০, ৩১ ও ৪০ নং ওয়ার্ডে কোন উন্নয়নের ছোঁয়া নাই। উন্নয়ন বলতে, এ এলাকায় উন্নয়নের জন্য মিল ফ্যাক্টরী প্রয়োজন। তাই আমি ২০০১ সালে থেকে চিন্তা করলাম যে বাহির থেকে পরিচিত শিল্প মালিকদের এনে মিল ফ্যাক্টরী করলে এলাকার যুব সমাজদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হবে এবং শ্রমজীবী সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের চাকরির ব্যবস্থা হবে। আপনারা জেনে অত্যান্ত খুশি হবেন যে ৩১ নং ওয়ার্ড আমার বাড়ির পাশে সুখিনগরে দুইটা ফ্যাক্টরীর নির্মান কাজ শেষ হয়ে গেছে। সেখানে একটা ফ্যাক্টরীতে প্রায় ১৫শত লোক নিবে আরেকটা ফ্যাাক্টরীতে ৫০০ শ্রমিক নেওয়া হবে। তিনি আরো বলেন, ইছালি গ্রামটা হলো একটি অবহেলিত গ্রাম , এখান মানুষ প্রতি বছরই জমি বিক্রি নিজেদের প্রয়োজন মিটায়। এখানে মিল ফ্যাক্টরী হইলে তাদের আর জমি বিক্রি করতে হবে না। এলাকার বেকারত্বত্তের সমস্যার সমাধান হবে। চিন্তাভাবনা করেই এই ইছালি গ্রামে ফ্যাক্টরী করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এখানে কাজ চলমান, আর এলাকার কিছু কুচুক্রি লোক বিএনপি-জামায়াতের এজেন্ডা যারা দেশের শত্রু, জাতির শত্রু তারা এ চলমান উন্নয়ন কাজে বাধা সৃষ্টি করছে।
রবিবার বিকেলে মেসার্স ইন্টেলিজেন্ট কার্ড কো: লিমিটেডসহ এলাকার বিভিন্ন উন্নয়ন কার্যক্রমের তথ্য তুলে ধরে সব ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থানের কথা জানান এলাকাবাসী।
এই নিউজ পোর্টাল এর কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি ও দণ্ডনীয় অপরাধ।