লালমনিরহাট সদর উপজেলার উমাপতি হরনারায়ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা মাঞ্জুমা আক্তারের বিরুদ্ধে নানান অভিযোগ উঠেছে।
বিদ্যালয়ে অফিস কক্ষে নেই বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি, বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতিকে অবমুল্যায়ণ- সহ শিক্ষিকা মাঞ্জুমা আক্তার ও সহকারী শিক্ষক খায়রুল ইসলাম সবুজের অবৈধ পন্থায় সার্টিফিকেট জালিয়াতি অভিযোগ প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী, সচিব এবং জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের কার্যালয়- সহ বিভিন্ন দপ্তরে ২দফা লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ওই বিদ্যালয়ের সভাপতি মাসুদ রানা পারভেজ। যা ইতিমধ্যে তদন্ত শুরু করেছে জেলা শিক্ষা বিভাগ।
অভিযোগ সুত্রে জানা গেছে, সদর উপজেলার পঞ্চগ্রাম ইউনিয়নের উমাপতি হরনারায়ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিতলগ্ন থেকে বেশ সুনামের সাথে
চলছিল। কিন্তু ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা হিসেবে মাঞ্জুমা আক্তার যোগদানের পর থেকে বিদ্যালয়টিতে রাহুলগ্রাসী অনিয়ম ও দুর্নীতি শুরু হয়েছে। তিনি একই বিদ্যালয়ে
একটানা ১১ বছর ধরে কর্মরত আছেন। উক্ত মাঞ্জুমা আক্তারের পিতা তায়েব আলী।
তিনি পাটগ্রাম উপজেলার জামায়াতের প্রভাবশালী নেতা এবং তার স্বামী রফিকুল ইসলাম পাটোয়ারী (যুবরাজ) পঞ্চগ্রাম ইউনিয়ন বিএনপির প্রভাবশালী নেতা হওয়ায় বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষে জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি লাগাননি।
এমনকি বিদ্যালয়ের উন্নয়নমূলক কাজের অর্থ লোপাট, বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মাসুদ রানা পারভেজকে অবমুল্যায়ণ, নিয়ম বর্হিভূত ভাবে বিদ্যালয় পরিত্যাগ, স্থানীয় ক্ষমতার দাপট, অন্যান্য সহকারী শিক্ষকদের সাথে খারাপ আচরণ, একক আধিপত্য বিস্তার করার ফলে ভেঙ্গে পড়েছে ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষা ব্যবস্থা।
এদিকে ওই ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা মাঞ্জুমা আক্তার ও বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক খায়রুল ইসলাম সবুজের
সার্টিফিকেট জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে। যা ইতিমধ্যে তদন্ত শুরু হয়েছে। উক্ত বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি মাসুদ রানা পারভেজ বলেন, বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা মাঞ্জুমা আক্তার বরাবরেই সভাপতিকে অবমুল্যায়ণ করে চলেন।
তার বাবা জামায়াতের নেতা ও স্বামী বিএনপির নেতা হওয়ার সুবাদে বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি বিদ্যালয়ে অফিস কক্ষে লাগান না। তাদের ছবি অফিস কক্ষে লাগানোর তাগাদা দিলে সভাপতিকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি-ধামকি দেন এবং ওই শিক্ষিকা বলেন,আমি বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনাকে মানি না। বেশি বারাবাড়ি করলে, আমি মহিলা তোমার নামে মানহানী মামলা করে জেলে ভরে রাখবো।
ওই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক খায়রুল ইসলাম সবুজের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন ধরেননি।
এ বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা মাঞ্জুমা আক্তার বলেন, আমি ২০১১ সাল থেকে একই বিদ্যালয়ে একটানা ১১ বছর ধরে সুনামের সাথে কর্মরত আছি। আমার বাবা জামায়াতের কোন দল করেন না, তিনি একজন চাকরি-জীবী। আমার বিরুদ্ধে জাল সার্টিফিকেটসহ যে-সব অভিযোগ করা হয়েছে তা মিথ্যা। কর্তৃপক্ষ তদন্ত শুরু করেছে, যা তদন্ত শেষে সত্য-মিথ্যার প্রমান পাওয়া যাবে।
এ ব্যাপারে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার গোলাম নবী বলেন, ওই বিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে ২টি অভিযোগ পেয়েছি। ইতিমধ্যে অভিযোগ গুলো তদন্তের নির্দেশ দিয়েছি। তদন্ত রিপোর্ট পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
এই নিউজ পোর্টাল এর কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি ও দণ্ডনীয় অপরাধ।