কাজিপুর উপজেলার চরাঞ্চলের চরগিরিশ ইউনিয়নের দক্ষিণ ছালাল গ্ৰামে পরিবারিক জমি সংক্রান্ত পূর্ব শত্রুতার জেরে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে ১০ দিনের ব্যবধানে একাধিক মিথ্যা মামলা দায়েরের অভিযোগ উঠেছে হরমুজ ব্যাপারী ও নুরুল ইসলাম নামের সহদরের বিরুদ্ধে। তারা ছালাল গ্ৰামের মৃত আফজাল শেখের পুত্র।
গত ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ইং তারিখে মোকাম-কাজিপুর থানা আমলী আদালতে হরমুজ ব্যাপারী (৫০) বাদী হয়ে ৬ জনকে আসামি করে রুজুকৃত মামলা সূত্রে জানা যায়, গত (২৪ ডিসেম্বর) তারিখে হরমুজের দখলে থাকা ২ একর জমিতে রোপণকৃত ইরি ধানের চারায় বিষ প্রয়োগ করে ২ লক্ষ ৭০ হাজার টাকার ক্ষতি সাধন করে এবং পূর্ব থেকেই বিভিন্নভাবে হুমকি দিয়ে আসছিলো। এ ঘটনায় গত ৮ মার্চ বিবাদী শাহজাহান আলী, বাদশা মিয়া, হোসেন আলীসহ স্থানীয় বয়োজ্যেষ্ঠ জন এবং স্থানীয়রা ধান ক্ষেত পরিদর্শন শেষে মন্তব্য করেন যে, ধানের চারা সতেজ আছে, বিষ প্রয়োগ হলে ধানের চারা বিনষ্ট হয়ে যেতো।
গত ৫ মার্চ ২০২৩ ইং তারিখে একই আদালতে দায়েরকৃত মামলার বাদী নুরুল ইসলাম (৫২), পূর্বের মামলার বাদীর আপন ভাই, পিতা মৃত আফজাল শেখ, গ্ৰাম ছালাল। আসামী ১০জন এবং সাক্ষী ৬ জন। মামলা সূত্রে জানা গেছে, গত ০৪/০৩/২০২৩ ইং তারিখ সকালে বাদীর ভাই ভিকটিম হরমুজ আলী কন্টকী জমির ধানের চারায় সেচ দিতে গেলে আসামীরা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে গরু জবাইয়ের ছুরি, লোহার রডসহ মারাত্মক অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে আক্রমন চালিয়ে হরমুজ আলীর মাথায় ডান পাশে রক্তপড়া কাঁটা জখমসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে মারাত্মক জখম করে। পরবর্তীতে চিকিৎসার জন্য ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব জেনারেল হাসপাতাল সিরাজগঞ্জে চিকিৎসাধীন আছেন। জরুরী বিভাগের মেডিকেল অফিসার ডা: শামীমুল তাকে সেবা দেন।
এই মামলার প্রেক্ষিতে ভুক্তভোগী আসামী দুলাল (৫৫), এজবার (৪০), শাহজাহান (৩০), বাদশাসহ স্থানীয়রা জানান, জমিতে পানি দিতে এসে হরমুজ আলী প্রতিপক্ষের বৌ-ঝিদের সাথে অশালীনভাবে গালিগালাজ করে। পরনের লুঙ্গি উঁচিয়ে মহিলাদের সাথে অশ্লীল আচরণ করে।
্অশালীন কার্যকলাপ ও অশ্লীল কথাবার্তায় ক্ষিপ্ত হয়ে মহিলা ও কিশোররা হরমুজকে গাছের সাথে বেঁধে রাখলে স্থানীয় মুরব্বিদের সহায়তায় সে অক্ষত অবস্থায় ছাড়া পায়। সে সময় আসামিরা কেউ বাড়িতে ছিলোনা। এ মামলায় ২ নং সাক্ষী আহম্মদ আলী (৫৫) এবং ৩ নং সাক্ষী কানু মিয়া বলেন, আমরা হরমুজকে বাঁধন খুলে মুক্ত করি, মুক্ত হবার সময় তার মাথায় কোনো জখমের চিহ্ন দেখিনি। কাঁটা জখম থাকলে রক্তপাত হতো। ভুক্তভোগী আসামিরা আরো জানায়, প্রতিপক্ষ তাদের আত্মীয়, আইন অনুযায়ী পারিবারিক জমি ভাগবাটোয়ারা হয়েছে, এ নিয়ে কারো কোনো অভিযোগ নেই, মালিক অনুযায়ী জমি দখলে আছে, বাদী পক্ষ মামলাবাজ, ইতোপূর্বে তারা হিংসাত্মকভাবে হয়রানি করার উদ্দেশ্যে ৭ ধারায় মামলা করেছিলো, তারা পরাজিত হয়েছে। এ বিষয়ে পার্শ্ববর্তী মনসুর নগর ইউ পি সদস্য আলী আশরাফ জানান প্রতিপক্ষের ক্ষতি ও হয়রানির উদ্দেশ্যে এই মামলাগুলো হচ্ছে। চরগিরিশ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আঃ মালেক জানান, বিষয়টি অবগত আছি, দুপক্ষ রাজি থাকলে সামাজিকভাবে মিমাংসা সম্ভব। চরগিরিশ ইউপি চেয়ারম্যান এস এম জিয়াউল হক জানান, মামলার আগে দুপক্ষ যোগাযোগ করেনি, আদালত যদি ইউনিয়ন পরিষদের উপর দায়িত্বভার দেয় তবে কার্যকরী ব্যবস্থা নেয়া যাবে। এ বিষয়ে মামলার বাদীদের সাথে যোগাযোগ করে বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এই নিউজ পোর্টাল এর কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি ও দণ্ডনীয় অপরাধ।