সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার তারাকান্দি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠানের অর্থ চুরি, নিয়োগ বাণিজ্য এবং ছাত্র হোস্টেলের নামে অতিরিক্ত অর্থ আদায় ও আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে।
অভিযোগ তদন্তে ৩ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি করেছে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি। এই কাজে সহযোগিতার প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়ায় খন্ডকালীন শিক্ষক ওমর ফারুকে বরখাস্ত করা হয়েছে। গত ১৭ আগষ্ট বৃহস্পতিবার বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত পরিচালনা কমিটির বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
বৈঠকে উপস্থিত একাধিক সদস্য জানান প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম এবং খন্ডকালীন শিক্ষক ওমর ফারুকের বিরুদ্ধে সম্প্রতি চতুর্থ শ্রেণী কর্মচারী অফিস সহায়ক ১ জন, নিরাপত্তা কর্মী ১ জন, আয়া ১জন এবং আইসিটি ল্যাব সহকারী ১ জন নিয়োগের ক্ষেত্রে অবৈধভাবে ২০ লক্ষ টাকা বাণিজ্য, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের অফিসের তালা ভেঙে ৪লক্ষ ৭০ হাজার টাকা চুরির সাজানো ঘটনা, এবং হোস্টেলের ছাত্রদের থেকে বিধিবহির্ভূতভাবে সিট ভাড়া ৫শ ও বিদ্যুৎ বিল বাবদ প্রতিমাসে ১শ টাকা আদায়ের অভিযোগ ছিলো। অভিযোগ তদন্তে ৩ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি করা হয়েছে, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেবে। অবৈধ কার্যকলাপে সহযোগিতার প্রমাণ পাওয়ায় খন্ডকালীন শিক্ষক ওমর ফারুককের চুক্তি বাতিল এবং বিদ্যালয়ে প্রবেশাধিকারে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। বৈঠকের সকল সিদ্ধান্ত বিদ্যালয়ের রেজুলেশন বইয়ে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে বলে দাবি করেন তারা।
গঠিত অভিযোগ তদন্ত কমিটির প্রধান ও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্য সাজেদুল ইসলাম ১৯ আগষ্ট দুপুরে বলেন, অদ্যবদী তদন্ত কমিটি কার্যক্রম শুরু করার কোনো লিখিত নির্দেশনা পায়নি, সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন করা হবে।
অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, যারা চাকরি পায়নি তারা আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার ও প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছে। লিখিতভাবে কোনো কারণ দর্শানো নোটিশ পাইনি। নিয়োগে কোনো বাণিজ্য হয়নি।
এ বিষয়ে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি জুলফিকার হায়দার তালুকদার বলেন প্রচলিত প্রক্রিয়ায় তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উল্লেখ্য , কাজিপুর উপজেলার প্রথম সারির মাধ্যমিক বিদ্যালয় হিসেবে তারাকান্দি উচ্চ বিদ্যালয়ের স্বীকৃতি রয়েছে, সম্প্রতি নিয়োগ বাণিজ্য, অর্থ চুরি, ছাত্র হোস্টেল থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায় ও আত্মসাতের মাধ্যমে ২৭ লক্ষ টাকা অবৈধ লেনদেনের অভিযোগ উঠে। এ ছাড়াও কোচিং এবং ক্লাস শিক্ষকের নিকট বাধ্যতামূলক প্রাইভেট পড়ানোর অভিযোগ তোলে অভিভাবকগণ। সম্প্রতি বিদ্যালয়ের এসএসসি ফলাফল আশানুরূপ না হওয়ায় অভিযোগের বিষয়গুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন আইডি থেকে প্রকাশ ও ভাইরাল হলে গত ১৭ আগষ্ট বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি জরুরি বৈঠক করে। এতে করে স্বস্তি ফিরেছে জানিয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক অভিভাবক বিদ্যালয়ের ভবিষ্যত নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে জানান, ২০০৮ সাল থেকে থেকে দায়িত্বরত সভাপতি কোনোভাবে দুর্নীতির দায় এড়াতে পারেন না।
এই নিউজ পোর্টাল এর কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি ও দণ্ডনীয় অপরাধ।