কাজিপুর উপজেলার সোনামুখী সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসায় নিয়োগ পরীক্ষার ফলাফল জালিয়াতি ও ডিজির প্রতিনিধি সাজিয়ে অধ্যক্ষ নিয়োগের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের অর্থ শাখা ২ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। নিয়োগ পরীক্ষা হয়েছে রেস্টুরেন্টে, বেতন বন্ধ।
মাদ্রাসা সূত্রে জানা যায়, সাবেক অধ্যক্ষ আব্দুর রহমানের অবসর জনিত কারণে অধ্যক্ষ পদটি শূন্য হয়। বিধি মোতাবেক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে আবেদনকৃতদের গত ৪/৯/২০২২ ইং তারিখে নিয়োগ পরীক্ষা সম্পন্ন হয় এবং সহকারী অধ্যক্ষ শামছুল আল আমিনকে অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ দেয় কমিটি। সেই সময় ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ও নিয়োগ কমিটির প্রধান ছিলেন সহকারী অধ্যাপক হেলাল উদ্দিন । নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ৫ সদস্যদের কমিটির মধ্যে উপস্থিত ছিলেন না ডিজি প্রতিনিধি ও আরবি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি।
সরেজমিনে মাদ্রাসায় গিয়ে জানা যায়, অধ্যক্ষ নিয়োগ পরীক্ষা কোথায়, কখন কিভাবে সম্পন্ন হয়েছে মাদ্রাসার শিক্ষকগণ জানেন না। নিয়োগ বোর্ডের শিক্ষক প্রতিনিধি জাহাঙ্গীর আলম বলেন, নিয়োগ বোর্ড যখন গঠন ও নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন করে তখন আমি ৪০ দিনের চিল্লায় তাবলীগ জামায়াতে বেলকুচি উপজেলায় ছিলাম, এই বিষয়ে কিছুই জানিনা। পরে নিয়োগপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জানিয়েছেন সিরাজগঞ্জ মুক্তা প্লাজায় রেস্টুরেন্টে ৪ সেপ্টেম্বর ২০২২ নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ও নিয়োগ কমিটির প্রধান হেলাল উদ্দিন বলেন, নিয়োগ কমিটি গঠনকালে আমি করোনায় আক্রান্ত ছিলাম, পরীক্ষা সংক্রান্ত কোন কিছুই জানিনা। পরবর্তীতে এমপিও শিট দেখে জানতে পারি নিয়োগ সম্পন্ন হয়েছে। আমি বগুড়া থেকে এসে চাকরি করছি, অনেক কিছুই বলতে পারিনা।
তৎকালীন ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নিয়োগ বোর্ডের সদস্য ও সোনামুখী ইউপি চেয়ারম্যান শাজাহান আলী বলেন, নিয়োগ পরীক্ষার সময় ডিজি প্রতিনিধি হিসেবে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিদর্শক বাদশা মিয়া উপস্থিত ছিলেন, তিনি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধির দায়িত্ব নিয়েছিলেন। এই বিষয়ে নিয়োগ প্রাপ্ত বর্তমান অধ্যক্ষ শামসুল আলামীনের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
গত ২৬ জুন ২০২৩ তারিখে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (প্রশাসন) মোঃ জাকির হোসেন এবং সহকারী পরিচালক (অর্থ) মোঃ লুৎফর রহমান স্বাক্ষরিত নিয়োগ পরীক্ষায় ডিজি প্রতিনিধি অনুপস্থিত মর্মে নিয়োগ জালিয়াতি ধরা পরার পরিপ্রেক্ষিতে সরেজমিনে তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য কমিটি গঠন করেন। গঠিত তদন্ত কমিটি অদ্যাবধি সরেজমিনে তদন্ত শুরু করে নাই, তবে ইতিমধ্যে অধ্যক্ষ ও সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের গত জুন মাস থেকে বেতন সাময়িক ভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে।
এই নিউজ পোর্টাল এর কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি ও দণ্ডনীয় অপরাধ।