কাজিপুরে সুবিধাবঞ্চিত নারীদের লিগ্যাল এইড নিশ্চিত করতে অ্যাডভোকেসি মিটিং
সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার চরাঞ্চলের নাটুয়ারপাড়া ও তেকানি ইউনিয়নের সুবিধাবঞ্চিত নারীদের আইন সহায়তা এবং আয় বৃদ্ধিমূলক সেবা প্রাপ্তির জন্য অ্যাডভোকেসি মিটিং অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার ২জুলাই উপজেলা পরিষদ হলরুমে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা শার্প কর্তৃক আয়োজিত মিটিংয়ে সভাপতিত্ব করেন ইউএনও দেওয়ান আকরামুল হক। চরাঞ্চলের সুবিধাবঞ্চিত নারী, সাংবাদিক, সরকারি কর্মকর্তারা ছাড়াও আয়োজক সংস্থার কর্তাব্যক্তিরা মিটিংয়ে অংশ নেন।
মিটিংয়ে জানা যায়, সুইস এজেন্সি ফর ডেভেলপমেন্ট এন্ড কোঅপারেশন (এসডিসি) ও গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স কানাডা (জিএসসি) যৌথ অর্থায়নে এবং জিএফএ কনসালটেন্সি গ্রুপের টেকনিক্যাল সহায়তায় সিরাজগঞ্জে “এনহ্যানসিং জেন্ডার ইকুয়ালিটি প্রজেক্ট (জিইপি) বাস্তবায়ন করছে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা শার্প। প্রাথমিক পর্যায়ে এই প্রকল্পের আওতায় উপজেলার চরাঞ্চলের নাটুয়ারপাড়া এবং তেকানি ইউনিয়নের সুবিধাবঞ্চিত নারীদের আইন সহায়তা এবং আয় বৃদ্ধিমূলক সেবা প্রদান করা হবে।
চরাঞ্চলের সুবিধা বঞ্চিত ও বিপদাপন্ন নারীর প্রতি বৈষম্য, দারিদ্রতা ও সামাজিক বাধার কারণে আইন সহায়তা প্রাপ্তির বাঁধা দূর করা। নারীর আইনগত অধিকার, সুরক্ষা ও ন্যায় বিচার সেবা ও সেবা প্রাপ্তির নিয়ম সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করাস্থানীয় পর্যায়ে প্রশিক্ষণ ও আইনগত পরামর্শ সেবা সহজপ্রাপ্য করার জন্য উদ্যোগ গ্রহণে সহায়তা করা। দক্ষতা উন্নয়ন ও আয় বৃদ্ধি, আর্থিক সহায়তা প্রাপ্তির সুযোগ, স্বনির্ভর দল গঠন ও সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সাথে সংযুক্ত করা। নারীদের আত্মবিশ্বাসী, স্বাবলম্বী এবং তাদের জীবনমানের ইতিবাচক পরিবর্তনে ভূমিকা রাখা প্রকল্পের উদ্দেশ্য হিসেবে রাখা হয়েছে। চরাঞ্চলে চলমান পরিস্থিতিতে নারীদের আয়ের উৎস ও সুযোগ খুবই সীমিত। নির্যাতন, শোষণ ও বঞ্চনা।
নারী, শিশু, প্রতিবন্ধীদের বৈষম্য, সহিংসতার শিকার ও সিদ্ধান্ত গ্ৰহণে অনুপস্থিতি। সম্পদের মালিকানা ও অধিকার নেই। সরকারি সেবা প্রাপ্তিতে বাঁধা। সরকারি বেসরকারি সহায়তা বা উন্নয়ন কর্মসূচি চরাঞ্চলে সমাহারে না পৌঁছানোয় তারা উন্নয়নের মূল ধারার বাইরে থেকে যায়। প্রাকৃতিক দুর্যোগের বিপদাপন্নতা ও নিরাপত্তাহীনতা। বন্যা, নদী ভাঙ্গন, খরা ও ঘূর্ণিঝড়ের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে বসতবাড়ি, জমি ও জীবিকা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া দুর্যোগ সহনশীল অবকাঠামোর অভাব। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, রাস্তা, বিদ্যুৎ ও বিশুদ্ধ পানির মতো মৌলিক সুবিধাগুলোর ঘাটতি। কর্মসংস্থানের সংকট ও আয়ের উৎসের সীমাবদ্ধতার জন্য দারিদ্রতা সমস্যা হিসেবে উল্লেখ করে সমাধান ও উন্নয়নের জন্য সুনির্দিষ্ট কিছু প্রস্তাবনা রয়েছে। এর মধ্যে, লিগ্যাল এইড কমিটির কার্যক্রম সম্পর্কে প্রত্যন্ত এলাকায় নিয়মিত প্রচারণা করা।
লিগ্যাল এইড ক্যাম্প, প্রশিক্ষণ ও অধিকর বিষয়ে সচেতনতা কার্যক্রম পরিচালনা করা। লিগ্যাল এইড সেবা প্রাপ্তির জন্য ভুক্তভোগী বা সংক্ষুব্ধ ব্যক্তির প্রবেশগম্যতা নিশ্চিত করা। চরাঞ্চলের জন্য ডিজিটাল তথ্যকেন্দ্র, মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে তথ্য ও সেবা সহজ প্রাপ্য করা। নারী নেতৃত্ব গঠনে প্রশিক্ষণ ও উৎসাহ প্রদান করতে হবে যাতে তারা পরিবার, সমাজ ও স্থানীয় সরকারের সিদ্ধান্ত গ্রহণে অংশ নিতে পারে।
নারীর আয় বৃদ্ধির জন্য দক্ষতা উন্নয়ন, সেলাই, হাঁস মুরগি পালন ইত্যাদি ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা উন্নয়নের সহায়তা।
চরাঞ্চল ভিত্তিক বিশেষ উন্নয়নীতি গ্রহণ এবং ইউনিয়ন পরিষদ, এনজিও ও সেবা দানকারী সংস্থার মধ্যে কার্যকর সমন্বয় নিশ্চিত করা। মিটিংয়ে নারীর জীবনমাণের উন্নয়ন ও সেবা প্রাপ্তির বিষয়ে অধিকার সচেতন করতে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করে বক্তব্য রাখেন উপজেলা কৃষি অফিসার শরিফুল ইসলাম, কাজিপুর থানার অফিসার ইন চার্জ নূরে আলম, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ শাহনাজ পারভীন, মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা চিত্রা রানী সাহা। অন্যদের মধ্যে সংস্থাটির উপ পরিচালক গোলাম কিবরিয়া, কো অর্ডিনেটর রেজাউল করিম, সাংবাদিক আবদুল জলিল, শফিকুল ইসলাম, গোলাম কিবরিয়া বক্তব্য রাখেন।








