প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যতদিন ক্ষমতা ক্যান্টনমেন্টে বন্দি ছিল, ততদিন দেশের উন্নতি হয়নি। উন্নতি তখনই হয়েছে, যখন গণতান্ত্রিক সরকার ক্ষমতায় এসেছে। গতকাল রবিবার গণভবনে জাতীয় প্রশিক্ষণ কাউন্সিলের (এনটিসি) সভায় তিনি এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যাতে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বাংলাদেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে পারে, সেদিকে দৃষ্টি দেওয়া প্রয়োজন।’
শেখ হাসিনা মনে করেন, মুক্তিযুদ্ধকে সমর্থন না করা দলগুলোর বৈরী মনোভাবের কারণে বাধা-বিপত্তি আসবে। সেসব অতিক্রম করে এগিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন তিনি। শেখ হাসিনা বলেন, ‘প্রশাসন পরিচালনায় আমরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও নীতি-আদর্শ ধরে রেখে কাজ করেছি। এরই ফলস্বরূপ দেশ আজ এগিয়ে যাচ্ছে। উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ ঘটেছে আমাদের। এ ধারা অব্যাহত রাখতে হবে।’
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০৪১ সালের মধ্যে দেশকে স্মার্ট বাংলাদেশে রূপান্তর করতে প্রশিক্ষিত জনসংখ্যার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন এবং প্রযুক্তিগত অগ্রগতি বজায় রেখে প্রশিক্ষণ পাঠ্যক্রমকে যুগোপযোগী এবং সময়োপযোগী করার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রী জানান, একটি জাতির উন্নয়নের জন্য শুধু প্রশিক্ষণের প্রয়োজন। বিশ্ব পরিবর্তনশীল। এই সময়টি প্রযুক্তির যুগ। প্রযুক্তিগত অগ্রগতির সঙ্গে মোকাবিলা করে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রযুক্তিগত প্রশিক্ষণ দিয়ে আমরা একটি স্মার্ট জনশক্তি গড়ে তুলব। আমাদের অর্থনীতি হবে প্রযুক্তিভিত্তিক স্মার্ট অর্থনীতি।
শেখ হাসিনা বলেন, এনসিটিকে প্রশিক্ষণ নীতিমালা প্রণয়নের পাশাপাশি পর্যালোচনা ও মূল্যায়ন এবং সময় উপযোগী করে তোলার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, আমাদের পর্যায়ক্রমে এগিয়ে যেতে হবে। আমরা সমগ্র জনসংখ্যাকে সম্পৃক্ত করে উন্নতি করতে চাই। কেউ পিছিয়ে থাকবে না এবং আমরা সবাইকে নিয়ে সমৃদ্ধির দিকে পা বাড়াব। প্রধানমন্ত্রী বিশ্বাস করেন, বাংলাদেশ অদম্য গতিতে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের দিকে অগ্রসর হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকারের অক্লান্ত পরিশ্রমে বাংলাদেশ একটি মর্যাদাপূর্ণ অবস্থানে পৌঁছেছে। কারণ বিশ্ব বর্তমানে বাংলাদেশকে সম্মান দেখাচ্ছে। এটি আমাদের জন্য সবচেয়ে বড় অর্জন। তিনি বলেন, তার সরকার জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে দেশ পরিচালনা করায় বাংলাদেশ এত মর্যাদাপূর্ণ অবস্থানে পৌঁছেছে।
শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতার দারিদ্র্য ও ক্ষুধামুক্ত সোনার বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্নের অনেকটাই বাস্তবায়ন হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, যখনই রাজনৈতিক নেতারা ক্ষমতায় ছিলেন, বাংলাদেশ ব্যবসা-বাণিজ্য, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও প্রযুক্তির মতো প্রতিটি খাতে অলৌকিক উন্নয়ন প্রত্যক্ষ করেছে। রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত ও ব্যবস্থাপনা ছাড়া কোনো দেশই উন্নতি করতে পারে না।
বাংলাদেশ কখনোই প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সামরিক স্বৈরশাসনের অধীনে এমন অগ্রগতি প্রত্যক্ষ করেনি উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘দেশবাসীর এটা উপলব্ধি করা উচিত। আমি দাবি করতে পারি, ২০০৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত যে অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে, তা হয়েছে রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের মাধ্যমে।’
এই নিউজ পোর্টাল এর কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি ও দণ্ডনীয় অপরাধ।