যথাযোগ্য মর্যাদা ও আবেগঘন পরিবেশের মধ্য দিয়ে ভাষাশহিদসহ ২৪'র জুলাই বিপ্লবে শহিদদের স্মরণ করে গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (২১শে ফেব্রুয়ারি) ৭৩তম মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত হয়েছে।
দিবসটি সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে পালনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আগে থেকেই ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করে। মহান এ দিবসকে ঘিরে
বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন চত্বরে সকাল ৭টায় জাতীয় পতাকা অর্ধনমিতভাবে উত্তোলন
করা হয়।
সকাল ৯টা ১০ মিনিটে কালো ব্যাজ ধারণ করা হয়। ধারাবাহিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে সাড়ে ৯টায় গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. জিকেএম মোস্তাফিজুর রহমান এর নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সদস্য, শিক্ষক- শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীগণের একটি প্রভাতফেরী প্রশাসনিক চত্বর থেকে বের হয়। প্রভাতফেরীটি যথারীতি বিশ্ববিদ্যালয় পরিভ্রমণ
করে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারের পাদদেশে সমাপ্ত হয়।
পরে পৌনে ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ মিনারে প্রথম পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন উপাচার্য। এরপর ক্রমান্বয়ে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন শিক্ষক সমিতি, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাইমারি ও হাই স্কুলের
শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা, কর্মকর্তাবৃন্দ, প্রভোস্ট সমন্বয়ে হলসমূহের শিক্ষার্থীবৃন্দ এবং কর্মচারীবৃন্দ। পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে মহান মাতৃভাষার তাৎপর্য ও চেতনার উপর এক সংক্ষিপ্ত আলোচনায় বক্তৃতা রাখেন গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. জিকেএম মোস্তাফিজুর রহমান, ট্রেজারার প্রফেসর ড. মোঃ সফিউল ইসলাম আফ্রাদ, শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর ড. আবু আশরাফ খান, পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) প্রফেসর ড. মোঃ গোলাম রসুল এবং রেজিস্ট্রার মোঃ আবদুল্লাহ্ মৃধা।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদীয় ডিন, পরিচালক, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মচারী ও কর্মকর্তাবৃন্দ। এ সময় উপাচার্য প্রফেসর ড. মোস্তাফিজুর রহমান ২১শে ফ্রেব্রুয়ারিকে প্রেরণা ও সংগ্রামের উৎস অ্যাখ্যা দিয়ে বক্তৃতা শুরু করেন।
বক্তৃতায় উপাচার্য বলেন, ‘৫২'র মহান চেতনাকে ধারণ করেই আজ অবধি আমরা বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্বাদ গ্রহণ করছি। কিন্তু দেশমাতৃকার এ স্বাধীনতা বারবার ভূলুণ্ঠিত হয়েছে কতিপয় স্বৈরাচার ও তাদের দোসরদের সহযোগে।
উপাচার্য আরো বলেন, “শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে যে বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন তাও লুণ্ঠিত হয় ৯০ এর দশকে”।
১৯৭৫ সালে সিপাহী-জনতার আন্দোলনের মাধ্যমে জাতি একতাবদ্ধ হয়ে যেমন দেশকে রক্ষা করেছিলেন একইভাবে ২৪'র ছাত্র-জনতার জুলাই আন্দোলনে বিগত ১৭ বছরের অসহনীয় শোষণ বঞ্চনাকে উপেক্ষা করে যারা এ দ্বিতীয় স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন তাদেরও শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন উপাচার্য। তবে দেশ গঠনে যেকোনো অপশক্তিকে মোকাবেলা করতে দল-মত নির্বিশেষে সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান উপাচার্য।
উল্লেখ্য,আজ বাদ জুম্মা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে ভাষা শহিদদের আত্মার মাগফিরাত এবং দেশ ও জাতির সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ দোয়ার আয়োজন করা হয়।
এই নিউজ পোর্টাল এর কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি ও দণ্ডনীয় অপরাধ।