শিরোনামঃ
গাজীপুরে উদ্ধার ৩৭ ঘোড়ার মধ্যে দুইটি মারা গেছে, বাকিগুলো চিকিৎসাধীন
গাজীপুরে অবৈধভাবে জবাইয়ের উদ্দেশ্যে আটকে রাখা ৩৭টি ঘোড়ার মধ্যে দুইটি মারা গেছে। বাকিগুলো বর্তমানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় চট্টগ্রামের একটি অভয়ারণ্যে রয়েছে।
অভয়ারণ্য অ্যানিমেল ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা রুবাইয়া আহমেদ বলেন,গাজীপুরের জেলা প্রশাসকের অনুরোধে আমরা একটি অবৈধ কসাইখানা থেকে ৩৭টি ঘোড়া উদ্ধার করি। ঘটনাস্থলে পৌঁছে আমরা যা দেখেছি, তা ভুলে থাকা সম্ভব নয়। সেখানে মোট ৩৭টি ঘোড়ার মধ্যে দুইটি ইতিমধ্যে মারা গেছে। পঁয়ত্রিশটি ঘোড়া ছিল একটি ছোট, অস্বাস্থ্যকর স্থানে ঠাসাঠাসি অবস্থায় — মৃত ঘোড়ার দেহে ঘেরা। সাতটি জবাই করা ঘোড়ার মাংস প্রাঙ্গণের মাঝখানে ফেলে রাখা ছিল, যার দুর্গন্ধে বাতাস ভারী হয়ে উঠেছিল।”
তিনি আরও জানান,“বেঁচে থাকা অনেক ঘোড়া ছিল পোকায় আক্রান্ত, কেউ কেউ এতটাই দুর্বল ছিল যে দাঁড়াতে পারছিল না। কারও কারও দেহে পচা ক্ষত, আবার একটির গর্ভপাতের উপক্রম হয়। কর্তৃপক্ষ সময়মতো হস্তক্ষেপ না করলে এই ঘোড়াগুলোও জবাই হয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে গরুর মাংসের ছদ্মবেশে বিক্রি হতো।”
তিনি আরো জানান, এ কে খান পরিবারের পৃষ্ঠপোষকতায় ও অভয়ারণ্য ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে উদ্ধার অভিযানটি পরিচালিত হয়। প্রায় ১২ ঘণ্টার দীর্ঘ যাত্রা শেষে ৩৫টি ঘোড়াই জীবিত অবস্থায় চট্টগ্রামে পৌঁছেছে। বর্তমানে পশুচিকিৎসকদের একটি নিবেদিতপ্রাণ দল তাদের চিকিৎসায় দিনরাত কাজ করে যাচ্ছে।
রুবাইয়া আহমেদ আরও বলেন,আমাদের কাছে মোট ৩৭টি ঘোড়া হস্তান্তর করা হয়েছে। এর মধ্যে দুইটি মারা গেছে। ঘোড়াগুলোকে দীর্ঘদিন ধরে নির্যাতন করা হয়েছে, তাদের পায়ে এখনো শিকলের দাগ দেখা যাচ্ছে। ঘোড়াগুলোকে জবাইয়ের জন্যই প্রস্তুত করা হয়েছিল।
গাজীপুর জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. নারগিস খানম জানান, “গাজীপুর থেকে উদ্ধারকৃত সব ঘোড়া বর্তমানে অভয়ারণ্যে নিরাপদে আছে এবং তাদের চিকিৎসা কার্যক্রম চলছে।”
উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) রাত ১০টার দিকে গাজীপুর জেলা প্রশাসন, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর, র্যাব-১ এবং পুলিশ যৌথভাবে হায়দরাবাদ এলাকায় অভিযান চালায়।
প্রাণিসম্পদ দপ্তর সূত্রে জানা যায়, ওই এলাকায় এক বছর ধরে অবৈধভাবে ঘোড়ার মাংস বিক্রি হচ্ছিল। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর ঘোড়ার মাংস বিক্রি নিষিদ্ধ ঘোষণা করলেও, শফিকুল ইসলাম (৪৫) নামের এক ব্যক্তি গোপনে সেই ব্যবসা চালিয়ে আসছিলেন। অভিযানের সময় শফিকুল ইসলাম ও তার সহযোগীরা পালিয়ে যায়।
গাজীপুরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইশতিয়াক আহমেদ বলেন,ঘোড়া জবাই ও মাংস বিক্রি সম্পূর্ণ অবৈধ এবং দণ্ডনীয় অপরাধ। এর আগে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে তিনবার জরিমানা করা হয়েছিল, তবুও সে কার্যক্রম বন্ধ করেনি। এবার বড় পরিসরে অভিযান চালানো হয়েছে এবং ভবিষ্যতেও এমন অভিযান চলবে।” উদ্ধারকৃত ৩৭টি জীবিত ঘোড়া ও জবাইকৃত মাংস পরদিন বুধবার সকালে গাজীপুর প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছিলো।
আপনার মতামত লিখুন :
Leave a Reply
এই বিভাগের আরো খবর
এক ক্লিকে বিভাগের খবর








