বিদ্যুৎকেন্দ্রের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, গত বছর ২৪ ডিসেম্বর থেকে দ্বিতীয় ইউনিটের পরীক্ষামূলক বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হলেও প্রথম ইউনিটের বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হয়েছে একই মাসের ২৬ তারিখ থেকে।
বিদ্যুৎকেন্দ্রের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, গত বছর ২৪ ডিসেম্বর থেকে দ্বিতীয় ইউনিটের পরীক্ষামূলক বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হলেও প্রথম ইউনিটের বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হয়েছে একই মাসের ২৬ তারিখ থেকে।
প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, এক হাজার ২০০ মেগাওয়াট সক্ষমতার দুই ইউনিটের বিদ্যুৎকেন্দ্রটি উৎপাদন ও সরবরাহের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত। কিন্তু উপকেন্দ্র ও সঞ্চালন লাইন এখনো পুরোপুরি প্রস্তুত হয়নি। ফলে বিদ্যুৎকেন্দ্রটির উৎপাদিত বিদ্যুতের অর্ধেক চট্টগ্রামের মদুনাঘাট উপকেন্দ্র এবং বাকিটা নারায়ণগঞ্জের মেঘনাঘাট উপকেন্দ্রে সরবরাহ করা হচ্ছে। পায়রা, রামপালসহ দেশে কয়লাভিত্তিক অন্য বিদ্যুৎকেন্দ্রের তুলনায় মাতারবাড়ী বিদ্যুৎকেন্দ্রের ইউনিটপ্রতি বিদ্যুৎ উৎপাদন খরচ কম। অন্য কেন্দ্রে ইউনিটপ্রতি বিদ্যুৎ উৎপাদন খরচ ১০ টাকার বেশি হলেও এই কেন্দ্রটিতে ইউনিটপ্রতি খরচ হচ্ছে আট টাকা।
বর্তমানে কেন্দ্রটির জন্য ইন্দোনেশিয়া থেকে কয়লা আমদানি করা হচ্ছে। পরিবেশ দূষণ রোধে কয়েক স্তরের পিউরিফিকেশনের ব্যবস্থা থাকায় বিদ্যুৎকেন্দ্রটি পরিবেশের কোনো ক্ষতি করছে না বলেও জানান কর্মকর্তারা।
প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪ সালের ১৬ জুন বাংলাদেশ সরকার ও জাইকার মধ্যে একটি ঋণচুক্তি হয়। ২০১৩-১৪ অর্থবছরে মাতারবাড়ী প্রকল্প বাস্তবায়নের শুরুতে এর ব্যয় ধরা হয়েছিল ৩৫ হাজার ৯৮৪ কোটি টাকা। পরে তা বাড়িয়ে ৫১ হাজার ৮৫৪ কোটি ৮৮ লাখ টাকা করা হয়। জমি অধিগ্রহণ ও বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ ছাড়াও এই টাকার মধ্যে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণকাজের আওতায় ১৪.৩ কিলোমিটার দীর্ঘ, ৩৫০ মিটার প্রস্থ ও ১৮.৫ মিটার গভীর চ্যানেল, সি-ওয়ালসহ আনুষঙ্গিক ফ্যাসিলিটিস নির্মাণকাজ করা হয়েছে।
মাতারবাড়ী দ্বিতীয় বিদ্যুৎকেন্দ্র নিজস্ব অর্থে করার পরিকল্পনা
পরিবেশ বিবেচনায় মাতারবাড়ী দ্বিতীয় কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রকল্পে অর্থায়ন থেকে জাপান সরে আসায় সরকার নিজস্ব অর্থে দ্বিতীয় বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মাণের পরিকল্পনা করছে।
প্রকল্প সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার অংশ হিসেবে মাতারবাড়ীতে ৬০০ মেগাওয়াট সক্ষমতার চার ইউনিটের দুটি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। সেই বিবেচনায় বাড়তি জমি অধিগ্রহণের পাশাপাশি সীমানাপ্রাচীর, ভবন ও কয়লা আমদানির জেটি নির্মাণসহ শেষ হয়েছে আনুষঙ্গিক কাজ। দ্বিতীয় প্রকল্পে এখন শুধু বিদ্যুৎকেন্দ্রের যন্ত্রপাতি বসানো হলেই বাড়তি আরো এক হাজার ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাবে। ফলে এক জায়গাতেই দুই হাজার ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব। এতে বিদ্যুতের উৎপাদন ব্যয়ও তুলনামূলক কমে আসবে।
প্রকল্প বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান সিপিজিসিবিএলের এমডি আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘দ্বিতীয় বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য মেশিন বা ইউনিট স্থাপন ছাড়া অন্য কাজ শেষ। এই মেশিন স্থাপন করতে ১৫ থেকে ২০ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হবে। অর্থের সংস্থান হলে দ্বিতীয় প্রকল্পের কাজ শুরু করা হবে।’
এই নিউজ পোর্টাল এর কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি ও দণ্ডনীয় অপরাধ।