উজানের পাহাড়ি ঢল ও টানা কয়েক দিনের বৃষ্টিতে লালমনিরহাটের তিস্তার নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ১৫ সেন্টিমিটারের উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
শুক্রবার (২ সেপ্টেম্বর) সকালে তিস্তার ডালিয়া পয়েন্টে এ পানিপ্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে। রাত থেকেই তিস্তার পানি কিছুটা বৃদ্ধি পেতে থাকলেও শুক্রবার বিকেল ৩টায় বিপৎসীমার ২৮ সে.মি. নিচ দিয়ে পানি প্রবাহ হচ্ছে বলে রেকর্ড করা হয়। তিস্তার পানি বৃদ্ধি পায় আবার কমে যায়। তবে আগামী ২৪ ঘন্টায় ভয়াবহ বন্যার পূর্বাভাস দিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড লালমনিরহাট।
বুধবার (৩১ আগষ্ট) বিপদসীমার ৪০ সে.মি. নিচে পানি প্রবাহিত হয়েছিল। বৃহস্পতিবার সকালে বিপদসীমার ৩৩ সে.মিটারের নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হলেও বিকেলের দিকে পানি বৃদ্ধি পেতে থাকে।
বৃহস্পতিবার (১ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৩টায় ১০ সে. মি. ওপরে রেকর্ড করা হয়েছে। ফলে ভাটি এলাকায় ধীরে ধীরে পানি বৃদ্ধি পেয়ে নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে শুরু করেছে। ইতো মধ্যেই জেলায় প্রায় ১ হাজার পরিবার পানি বন্দী হয়েছে। এদিকে পানি বৃদ্ধির কারনে নদী পারের মানুষগুলো বন্যা মোকাবেলায় নিজেদের সবটুকু গুছিয়ে নিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন নদী পাড়ের পরিবার গুলো।
এ বছরের পঞ্চম দফা বন্যায় জেলার পাটগ্রাম, হাতিবান্ধা, কালীগঞ্জ, আদিতমারী ও সদর উপজেলার তিস্তা নদীর তীরবর্তী অঞ্চলে লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী হওয়ার পূবাভাস পাওয়া যাচ্ছে।
তিস্তার নদীর পানি বৃদ্ধিতে জেলার পাটগ্রামের দহগ্রাম, হাতীবান্ধার গড্ডিমারী,দোয়ানী,ছয়আনী, সানিয়াজান ইউনিয়নের নিজ শেখ সুন্দর, বাঘের চর, ফকিরপাড়া ইউপির রমনীগঞ্জ, সিঙ্গামারি ইউনিয়নের ধুবনী, সিন্দুর্না ইউপির পাটিকাপাড়া,হলদিবাড়ী, ডাউয়াবাড়ী, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, শৈইলমারী, নোহালী, চর বৈরাতি,আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা, কালমাটি, পলাশী ও সদর উপজেলার ফলিমারীর চর, খুনিয়াগাছ, কুলাঘাট, মোগলহাট, রাজপুর, গোকুণ্ডা ইউনিয়নের তিস্তা এলাকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এছাড়াও ভাটি এলাকায় রাত নাগাদ পানির প্রবাহ চলে আসবে। ফলে নির্ঘুম রাত কাটাতে হবে তাদের।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র আগামী ২৪ ঘন্টায় তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমা অতিক্রম করা এবং লালমনিরহাট ও নীলফামারী জেলার নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে পারে বলে জানানো হয়েছে।
লালমনিরহাট জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান জানান, তিস্তার পানি বিপদসীমার ওপরে প্রবাহিত হয়ে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। আগামী ২৪ ঘন্টায় পানি আরও বাড়তে পারে বলেও জানান তিনি। জরুরি পরিস্থিতি মোকাবেলায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের সব রকম প্রস্তুতি রয়েছে বলে তিনি নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে (শুক্রবার ২ সেপ্টেম্বর) লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক মোঃ আবু জাফর সকাল ১০ টা থেকে বিকেল ৪ টা পর্যন্ত লালমনিরহাট সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় পানি বন্দী ৩০০ পরিবারের মাঝে শুকনো খাবার বিতরণ করেছেন। জেলা ত্রাণ অফিস এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এই নিউজ পোর্টাল এর কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি ও দণ্ডনীয় অপরাধ।