মাসুদ রানা, পটুয়াখালীঃ ২০ থেকে ৪০ ফুট লম্বা এক একটি জাল। প্রতি এক ফুট পর পর মাছ প্রবেশের দুয়ার বা পথ রযেছে। এ দুয়ার দিয়ে কোনো মাছ প্রবেশ করলে আর বের হতে পারে না। রেনু পোনা থেকে বড় মাছ ও জলজপ্রাণি সবই আটকে যায়। বিশেষভাবে তৈরি এ জালের নাম ‘চায়না দুয়ারি’। সরকারিভাবে নিষিদ্ধ হলেও উপজেলার সব খাল-বিল, নদী-নালা এখন সয়লাব। অধিকলাভের আশায় একদিকে অসাধু ব্যবসায়ীরা এসব জাল অবাধে বিক্রি করছেন। অপরদিকে মানুষ এগুলো ব্যবহার করছেন। এতে বিলুপ্ত হওয়ার ঝুঁকিতে থাকা দেশি প্রজাতির মাছের বংশবিস্তারে সংকট দেখা দিয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, কয়েক বছর ধরে উপজেলার খাল-বিল, ডোবা-নালা ও নদীতে চায়না দুয়ারি জাল দিয়ে মাছ শিকার করা হচ্ছে। ঘন প্লাষ্টিকের তৈরি এক একটি জালের দাম ৩ থেকে ৫ হাজার টাকা। উপজেলার কালাইয়া, কালিশুরী ও বগা বন্দরসহ ছোট বড় বিভিন্ন বাজারে জাল- সুতার দোকানে এ জাল পাওয়া যায়। তবে এ জালের প্রধান বিক্রয় কেন্দ্র ‘কালাইয়া বন্দর’। এখানে পাইকারি ও খুচরা বিক্রয় হয়। এ জাল নিষিদ্ধ হলেও প্রশাসনের নজরদারি না থাকায় অনেকটা প্রকাশ্যই বিক্রি হয়।
উপজেলার প্রায় সব এলাকায় এ জাল দিয়ে মাছ ধরা হলেও কালাইয়া, চন্দ্রদ্বীপ, নাজিরপুর, ধুলিয়া ও কেশবপুর ইউনিয়নের চরাঞ্চলে এ জালের ব্যবহার সবচেয়ে বেশি বলে জানা যায়।
উপজেলার কালাইয়া এলাকার স্কুল শিক্ষক মো. মিজানুর রহমান বলেন,‘ চায়না দুয়ারি জাল মারাত্মক ধ্বংসাত্মক। এ জালে মাছের সাথে রেনু পোনাসহ বিভিন্ন প্রজাতির জলজপ্রাণিও মারা পড়ে। এতে দিনদিন দেশীয় প্রজাতির মাছ ও জলজ প্রাণি বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে।
পৌর শহরের মাছ ব্যবসায়ী মো. রুবেল সিকদার ও জালাল আহমেদ জানান, এক সময় বাজারে প্রচুর দেশি মাছ পাওয়া যেত। গত কয়েক বছর ধরে আর আগের মত দেখা যায়। বিভিন্ন নিষিদ্ধ জাল, মাত্রাতিরিক্ত কিটনাশক ও সার ব্যবহার করার কারণে খাল-বিল, ডোনা ও নালার দেশি মাছ মরে যাচ্ছে।
হাটে-বাজারে নিষিদ্ধ এ জাল বিক্রি করা হলেও প্রশাসনের তেমন তৎপরতা নেই বলে অভিযোগ করেছেন অনেকে।
নিষিদ্ধ এ জালের ব্যবহার বন্ধের দাবি জানালে এ বিষয়ে উপজলো মৎস্য কর্মকর্তা মো. মাহবুবুর রহমান বলেন,‘ চায়না দুয়ারি সহ সকল নিষিদ্ধ জালের ব্যবহার বন্ধে মানুষকে সচেতন করা হচ্ছে। একই সাথে অভিযান চালিয়ে এসব জাল পুড়িয়ে ধ্বংস করা হচ্ছে। আগামীতে আরও ব্যাপক ভাবে অভিযান পরিচালনা করা হবে।।
এই নিউজ পোর্টাল এর কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি ও দণ্ডনীয় অপরাধ।