বাংলাদেশ প্রবীণ হিতৈষী সংঘ সিরাজগঞ্জ জেলা শাখার ঢাকা কেন্দ্রীয় পরিদর্শন টিমের সাথে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনের ইডিপি ট্রেনিং এন্ড কনভেনশন সেন্টারে উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্যে রাখেন যুদ্ধাহত বীরমুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব আমীর হোসেন মোল্লা। এতে সভাপতিত্ব করেন,বাংলাদেশ প্রবীণ হিতৈষী সংঘ সিরাজগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি মোঃ আরশাদ হোসেন।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ প্রবীণ হিতৈষী সংঘের সাংগঠনিক সম্পাদক বীরমুক্তিযোদ্ধা আক্তার হোসেন, কোষাধ্যক্ষ (দায়িত্ব প্রাপ্ত), সমাজ কল্যাণ কর্মকর্তা আব্দুর রহমান সুমন, কার্যনির্বাহী সদস্য যুদ্ধাহত বীরমুক্তিযোদ্ধা মোঃ আব্দুল লতিফ, আজীবন সদস্য এম এ মাজেদ প্রমুখ।
এসময় মতবিনিময় অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ প্রবীণ হিতৈষী সংঘ সিরাজগঞ্জ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল ফারুক, বীরমুক্তিযোদ্ধা আছির উদ্দিন মিলন বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনা করেন মোঃ তাজুল ইসলাম তাজ।
মতবিনিময় সভায় বক্তারা জানান যে, আগামী ১ অক্টোবর- ২০২২ আন্তর্জাতিক প্রবীণ দিবস উদযাপন উপলক্ষে সারাদেশ ব্যাপী কর্মসূচির পালন করার লক্ষ্য এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত।
জানা যায় যে,প্রবীণ হিতৈষী সংঘ। নাম শুনলেই মনে হয়, প্রতিষ্ঠানটি প্রবীণদের সেবার জন্য। কিন্তু ভেতরের অবস্থা বলছে, সেবার ঘাটতি যেন সব সীমাকে অতিক্রম করেছে। বাংলাদেশ প্রবীণ হিতৈষী সংঘ ও জরাবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে প্রবীণদের অবস্থা বেহাল। এখানে যে হাসপাতাল আছে, তা কেবল নামেমাত্র। জালিয়াত চক্রের হাতে জিম্মি হয়ে আছে পুরো ব্যবস্থাপনা। সর্বত্র জালিয়াতির নিদর্শন। এখানে চলছে নিয়মনীতিবহির্ভূতভাবে সদস্য হওয়ার প্রতিযোগিতা।
ক্ষমতার অপব্যবহার যেন নৈমিত্তিক ঘটনা। দর্শনার্থীদের সঙ্গে চরমতম অসৌজন্যমূলক আচরণ যেন এখানকার সংস্কৃতি। আর এ হযবরল অবস্থাকে পুঁজি করে চলছে সুবিধাবাদী চক্রের রমরমা অনৈতিক বাণিজ্য অভিযোগের শেষ নেই। আর এই অভিযোগ শুধু বর্তমান কমিটিকে নিয়েই নয়। সাবেক কমিটিগুলোর বিরুদ্ধেও বিস্তর অভিযোগ।
অবস্থাদৃষ্টে মনে হয়, লুটপাটের এক অভয়ারণ্য হিসেবে যেন গড়ে উঠেছে এই প্রতিষ্ঠান। তাই সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে প্রবীণদের জন্য একটি গ্রহণযোগ্য নীতিমালার দাবি করেছেন সেখানে অবস্থানরত প্রবীণরা। তারা বলেছেন, গঠনতন্ত্রের সংশোধনসহ অবৈধ সদস্যদের বহিষ্কার করতে হবে।
সূত্রমতে, ১৯৬০ সালে ডা. এ কে এম আবদুল ওহায়েদ ধানমন্ডির নিজস্ব বাড়িতে প্রবীণ হিতৈষী সংঘ প্রতিষ্ঠা করেন। পরে ১৯৮৫ সালে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে প্রতিষ্ঠানটি আগারগাঁওয়ে চলে আসে। ১৯৯৮ সালে ৫০ শয্যার হাসপাতালের উদ্বোধন হয়। সমাজসেবা অধিদফতরের পৃষ্ঠপোষকতায় সমাজকল্যাণ ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অনুদানসহ বিভিন্ন অনুদান ও নিজস্ব আয়ে প্রতিষ্ঠানটি চলছে।
এদিকে, ১৯৮১ সালে গণপূর্ত ও নগর উন্নয়ন মন্ত্রণালয় প্রায় এক একর জমি ইনস্টিটিউট অব জেরিয়াট্রিক মেডিসিনকে (বাইগাম) বরাদ্দ দেয়। কিন্তু প্রতিষ্ঠার প্রায় ৫০ বছর পার হয়ে গেলেও জমি এখনো বাইগামের নামে রেজিস্ট্রি হয়নি। প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা ডা. এ কে এম আব্দুল ওহায়েদের তনয়া তৈয়বা খাতুনের অভিযোগ, সম্ভাবনার বাইগাম এখন পঙ্গু ও জরাজীর্ণ প্রতিষ্ঠান। যে উদ্দেশ্য নিয়ে প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তোলা, সেই উদ্দেশ্য এখন অদৃশ্য। এমতাবস্থায় কাউকে না কাউকে নতুন করে এর হাল ধরতে হবে।
তিনি আশা প্রকাশ করে বলেছেন, সরকার চাইলে প্রতিষ্ঠানটি তার মহৎ উদ্দেশ্য এবং সৎ চিন্তার প্রতিফলন ঘটাতে সক্ষম হবে। ওহায়েদ তনয়ার চিন্তার সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে আমরাও বলতে চাই, সরকার নিশ্চয়ই বিষয়টির প্রতি নজর রেখে ইতিবাচক সমাধানে এগিয়ে আসবে।
এই নিউজ পোর্টাল এর কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি ও দণ্ডনীয় অপরাধ।