শিরোনামঃ
এবার চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় জ্বালানি তেল যাবে পাইপ লাইনে কাতারের আমির আসছেন সোমবার রাজস্ব ফাঁকি ঠেকাতে ক্যাশলেস পদ্ধতিতে যাচ্ছে এনবিআর বাংলাদেশে দূতাবাস খুলছে গ্রিস বঙ্গবন্ধু টানেলে পুলিশ-নৌবাহিনী-ফায়ার সার্ভিসের জরুরি যানবাহনের টোল মওকুফ সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীতে আসছেন আরও ৪ লাখ মানুষ ৫০ বছরে দেশের সাফল্য চোখে পড়ার মতো চালের বস্তায় জাত, দাম উৎপাদনের তারিখ লিখতেই হবে মন্ত্রী-এমপির প্রার্থীদের সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ প্রাণী ও মৎস্যসম্পদ উন্নয়নে বেসরকারি খাত এগিয়ে আসুক আওয়ামীলীগ থেকে বহিষ্কৃত আরাফাতের নেতৃত্বে থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতার উপর হামলা সিরাজগঞ্জ সদরে প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ ও প্রদর্শনীর শুভ উদ্বোধন অসহায় হাকিম ও আয়শা দম্পতির সহানুভ‚তি নিবাসের উদ্বোধন উল্লাপাড়ায় জামাত নেতার সাথে ছবি ভাইরালের ঘটনায় সংবাদ সম্মেলন ফের আশা জাগাচ্ছে লালদিয়া চর কনটেইনার টার্মিনাল ‘মাই লকারে’ স্মার্টযাত্রা আগামী সপ্তাহে থাইল্যান্ড সফরে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতির ওপর নজর রাখার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর লালমনিরহাটে প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ ও প্রদর্শনী ২০২৪ অনুষ্ঠিত! ব্যাংকের আমানত বেড়েছে ১০.৪৩ শতাংশ

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি

ময়মনসিংহ সিভিল সার্জনের অফিস সহকারীর বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ

কলমের বার্তা / ২০২ বার পড়া হয়েছে।
সময় কাল : রবিবার, ২৬ জুন, ২০২২

ময়মনসিংহ সিভিল সার্জনের অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে নানা দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। বেসরকারী হাসপাতাল ও ডায়াগনোস্টিক সেন্টার মালিকদের কাছ থেকে নতুন লাইসেন্স ও নবায়নের নামে সিভিলসার্জনসহ ডিজি অফিসের এক পরিচালকের নাম ভাঙিয়ে মোটা অঙ্কের অনৈতিক সুবিধা আদায় করার অভিযোগ রয়েছে। এ ব্যাপারে আদালতে মামলা ও সিভিল সার্জনসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন একাদিক ভূক্তভোগী ব্যাক্তি।

অভিযোগে জানা যায়, ময়মনসিংহ সদর উপজেলার চরঈশ^রদিয়া গ্রামের মৃত হাছেন আলী মন্ডলের ছেলে মো: জাকির হোসেন ২৫ সেপ্টেম্বর ১৯৯১ সালে স্বাস্থ্য বিভাগের অধিনে সিকিউরিটি গার্ড হিসেবে ময়মনসিংহ জেলার ধোবাউরা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে যোগদান করেন। পরবর্তিতে ২৪ আগস্ট ৯৭ সালে অফিস সহকারী কাম মুদ্রাক্ষরিক হিসেবে নিয়ম বর্হিভূতভাবে পদন্নতি পেয়ে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে যোগদান করেন। এ সময় তিনি বিভিন্ন ঘটনায় ভর্তিকৃত হতাহতদের বিষয়ে ভূয়া ও জাল সনদ (জখমি সার্টিফিকেট) সরবরাহ করে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেন। এসব ঘটনায় ঢাকার সিআইডি রেশন স্টোরের এসআই শাহাদাৎ হোসেন ও নেত্রকোনা জেলা সিআইডি অফিসার এসআই তাজাম্মোল হক বাদি হয়ে ময়মনসিংহ কতোয়ালী মডেল থানায় পৃথক দু’টি মামলা দায়ের করেন। পরে দু’টি মামলায় সিআইডি তদন্ত করে আদালতে তার বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করেন। বর্তমানে মামলা দু’টি আদালতে বিচারাধিন রয়েছে।

২০১৪ সালে জাকির হোসেন জেলা সিভিল সার্জন অফিসে একই পদে যোগদান করার পর ময়মনসিংহ সদরসহ বিভিন্ন উপজেলায় অবস্থিত বেসরকারী হাসপাতাল ও ডায়াগনোস্টিক সেন্টার মালিকরা তার কাছে জিম্মি হয়ে পড়েন। মালিকদের কাছ থেকে লাইসেন্স নবায়ন ও নতুন লাইসেন্স করে দেয়ার কথা বলে সিভিলসার্জন ও ডিজির এক পরিচালকের নাম ভাঙিয়ে মোটা অঙ্কের অনৈতিক সুবিধা নিয়েও কাজ না করার একাধিক অভিযোগ রয়েছে। এছাড়াও তিনি লাইসেন্স করতে পরিবেশ, ফায়ার সার্ভিস ও নারকোট্রিক লাইসেন্স সংগ্রহের কথা বলেও মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেন। কিন্তু টাকা নিয়ে কাজ না করায় এ ব্যাপারে ভালুকা উপজেলার হবিরবাড়ি ইউনিয়নের আউলাতলি গ্রামে অবস্থিত ফাদার তনিনো মোমোরিয়াল হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনোস্টিক সেন্টারের মালিক সি: লুসি গোমেজ (সুলেখা), ময়মনসিংহ সদরে অবস্থিত আল হেরা প্রাইভেট হাসপাতালের মালিক মো: মিলন, ভাটিকাশর কবরখানার প্রস্তাবিত প্রতিশ্রæতি হাসপাতালের মালিক সফিকুল ইসলাম, ভ্রাম্যপল্লীর টুম্পা নাসিং হোমের মালিক সাহজাহান খানসহ একাধিক ব্যক্তি সিভিল সার্জনসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
জাকির হোসেন সিভিল সার্জন অফিসে যোগদানের পর থেকে তিনি ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে চলেছেন। কেউ তার বিরুদ্ধে কোন কথা বলতে পারেন না। তার রয়েছে নিজস্ব বাহিনী। অদৃশ্য শক্তি বলে যা ইচ্ছে তাই করে যাচ্ছেন। বিশাল আকারের মাছের খামার, নির্মানাধিন বহুতল ভবনসহ নামে বেনামে বর্তমানে কয়েক কোটি টাকার সম্পদের মালিক তিনি।

ময়মনসিংহ সিভিল সার্জন অফিসের ২০১৪-১৫ ব্যয়িত হিসাব নিরিক্ষাকালে দেখা যায় যে, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রনালয়ের কর্মচারী নিয়োগ বিধি ১৯৮৫ (ঘড়.ঝ.জ.ঙ.৩৬৬-খ/৮৫ উধঃব ১৫/০৮/১৯৮৫) এর ব্যত্যয় ঘটিয়ে দুইজন সিকিউরিটি গার্ড মোঃ মোকলেছুর রহমান ও মোঃ জারিক হোসেন অফিস সহকারী কাম মুদ্রাক্ষরিক পদোন্নতি প্রদান হয়েছে। উল্লেখ্য, নিয়োগবিধি মোতাবেক (ক্রমিক নং ৯৩) অফিস সহকারী কাম মুদ্রাক্ষারিক পদ সিকিউরিটি গার্ড পদোন্নতি মাধ্যমে পূরণ করার সুযোগ নেই। কাজেই পদোন্নতির তারিখ হতে প্রাপ্ত পদোন্নাতির মেধা, টাইম স্কেল ও বেতনাদি আদায় যোগ্য। তাই স্থানীয় ও রাজস্ব অডিট অধিদপ্তর অডিট এন্ড একাউন্টস অফিসার মোঃ রফিকুল ইসলাম ১০/০৯/২০১৫ সালে তাদেরকে পূর্বের পদে বহাল ও অতিরিক্ত টাকা ফেরত দেয়ার নিদের্শ প্রদান করেন। কিন্তু রহস্যজনক কারণে তা আজও বাস্তবায়িত হয়নি।

অভিযোগ রয়েছে, এসব বিভিন্ন ঘটনার অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত কমিটি করা হলেও জাকির হোসেনের বাহিনীর হুমকী ও দাপটের কারণে ওইসব তদন্ত কমিটি আলোর মুখ দেখেনি।এদিকে দুর্নীতিবাজ জাকির হোসেন ও তার স্ত্রী আইনুন নাহার শিল্পীসহ চারজনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ এনে তার মা মোছা: সালেহা খাতুন আদালতে মামলা দায়ের করেছেন। জোরপূর্বক ও ভয়ভীতি দেখিয়ে জমি লিখে নেয়া, বসতবাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা, স্বর্ণালঙ্কার ও টাকা ছিনিয়ে নেয়ার অভিযোগে ময়মনসিংহ বিজ্ঞ অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ওই মামলাটি (নম্বর-০৮/২২) দায়ের করেন।

তাছাড়া মোমেনশাহী মহিলা মানবিক কলেজের অধ্যক্ষ ফারজানা নাসরিন বাদি হয়ে বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিট্রেটের জেলা সদর আদালতে জাকির হোসেন, তার স্ত্রী আইনুন নাহার শিল্পী ও তাদের দুই ছেলে শাকিল হোসেন নাঈম ও নাদিম হোসেনকে আসামী করে অপর একটি মামলা (নম্বর-৬৩২/২১) দায়ের করেন।

এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত জাকির হোসেনের মোবাইলে (০১৭১২-৬৬৩১২৬) বার বার চেষ্টা করলেও রিসিভ না করায় তার বক্তব্য দেয়া সম্ভব হয়নি।

ময়মনসিংহ জেলা সিভিলসার্জন ডাক্তার নজরুল ইসলাম জানান, বিভিন্ন উপজেলায় অবস্থিত বেসরকারী ক্লিনিক ও ডায়াগনোস্টিক সেন্টারের মালিকদের কাছ থেকে লাইসেন্স নবায়ন ও নতুন লাইসেন্স করে দেয়ার কথা বলে অনৈতিক সুবিধা নেয়ার বিষয়ে জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি।

এ ব্যাপারে ফুলপুল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার জায়েদ মাহবুব খানকে প্রধান করে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এক প্রশ্নে তিনি বলেন, নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে অডিট কমিটির নির্দেশ না মানায় অভিযুক্ত জাকির হোসেনের বিষয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে।

93


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর