আশরাফুল হক, লালমনিরহাট: লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলায় গৃহবধূ জুই খাতুনের হত্যাকারী স্বামী আলী হোসেনকে গ্রেফতারের দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছেন স্থানীয়রা।
ঘটনাস্থলে পুলিশ আসলে স্থানীয়দের সাথে ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে। পরে ইউএনও এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন।
বৃহস্পতিবার (০৬ ফেব্রুয়ারী) সকাল সাড়ে দশটায় উপজেলা পরিষদ গেটে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন শুরু হয়। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার আশ্বাসে দুপুর ২টায় সড়ক অবরোধ তুলে নেন বিক্ষোভকারীরা। এরআগে গত ৩০ ডিসেম্বর উপজেলার সানিয়াজান ইউনিয়নের নিজ শেখ সুন্দর গ্রামে স্বামী আলী হোসেনের বাড়ি থেকে জুই খাতুনের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
জানা গেছে, তিন বছর আগে আলী হোসেনের সাথে বিয়ে হয় উপজেলার সিংগীমারী এলাকার জাহিদুল ইসলামের মেয়ে জুইয়ের সাথে। বিয়ের পর থেকে যৌতুকের টাকার জন্য আলী ও জুইয়ের ঝগড়া বিবাদ লেগে থাকতো। এমন অবস্থায় গত ৩০ ডিসেম্বর স্বামী আলী হোসেনের বাড়ি থেকে জুই খাতুনের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তবে জুইয়ের স্বামী ও তার পরিবারের লোকজনের দাবি জুই আত্মহত্মা করেছে। কিন্ত জুইয়ের বাবা-মার দাবী জুইকে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় জুইয়ের বাবা বাদী হয়ে হাতীবান্ধা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিতে গেলে পুলিশ অভিযোগ নিতে গড়িমসি করেন। আর তাই বাধ্য হয়ে আজ বৃহস্পতিবার (০৬ ফেব্রুয়ারী) জুইয়ের আত্মীয় স্বজন ও গ্রামের লোকজন জুইয়ের স্বামী আলীর বিরুদ্ধে অভিযোগ নিতে ও দ্রুত গেপ্তার করে বিচারের দাবীতে মানববন্ধন ও সড়ক অবরোধ করেন।
এ সময় খবর পেয়ে পুলিশ উপজেলা পরিষদ গেটে আসলে অবরোধকারীদের সাথে ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকরী কমিশনার উপস্থিত হয়ে অবরোধকারীদের সাথে কথা বলে আশ্বাস দিলে তারা সড়ক অবরোধ তুলে নেন।
এ বিষয়ে জুই এর বাবা জাহিদুল বলেন, আমার মেয়েকে হত্যা করে আত্মহত্মা বলে চালিয়ে দিতে চেয়েছে আলী ও তার পরিবার। আমি এ নিয়ে অভিযোগ দিতে গেলে পুলিশ অভিযোগ নেয়না। আমার মেয়ের হত্যা কারীর বিরুদ্ধে কেন অভিযোগ নেয়া হবে না? কেন তাকে গেপ্তার করা হবে না? বলেই কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন তিনি।
এ বিষয়ে জুইর মামাতো ভাই শাহিন বলেন, জুই হত্যার ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে আলীর পরিবার ও পুলিশ প্রসাশন আতাত করেছে। তারা কেন অভিযোগ নিবে না। যদি ২৪ ঘন্টার মধ্যে আলীর বিরুদ্ধে অভিযোগ নেয়া না হয় ও তাকে গ্রেপ্তার করা নয় তা হলে কঠোর কর্মসূচী নেয়া হবে।
এ বিষয়ে হাতীবান্ধা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুন্নবী বলেন, ঘটনার পর পর প্রাথমিক ভাবে পুলিশের পক্ষ থেকে একটি ইউডি মামলা করা হয়েছে। এছাড়া ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পেলেই আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে হাতীবান্ধা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শামীম মিঞা বলেন, আমি থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সাথে কথা বলেছি। তিনি অভিযোগ নিবেন। আর জুই হত্যায় জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে। এছাড়া জেলা প্রশাসকের সাথে কথা বলে পুলিশের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে বলা হবে।
এ বিষয়ে জেলা পুলিশ সুপার তরিকুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় অভিযোগের প্রেক্ষিতে সঠিক তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে ওসিকে বলা হয়েছে।
এই নিউজ পোর্টাল এর কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি ও দণ্ডনীয় অপরাধ।