আশরাফুল হক, লালমনিরহাটঃ
লালমনিরহাটে বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে এক ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যের দোকান ঘর ভাংচুর করে জমি দখলে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। রোববার (৬ এপ্রিল) দুপুরে লালমনিরহাট সদর উপজেলার মোগলহাট ইউনিয়নের ফুলগাছ বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ওই ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ড সদস্য আব্দুল মালেকের মালিকানাধিন জ্বালানি খড়ির দোকান ভাংচুর করা হয়। 

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, লালমনিরহাট মোগলহাট রেলওয়ের দুই পাশের পরিত্যাক্ত জমি লিজ নিয়ে ব্যবসা ও বাসা বাড়ি করে আসছে স্থানীয়রা। স্থানীয়দের মত মোগলহাট ইউপি সদস্য আব্দুল মালেক একটি স'মিল গড়ে তুলেন। সেই স'মিলের পাশে একটি জ্বালানি খড়ির দোকান ঘর করে দীর্ঘ প্রায় ২০ বছর ধরে ব্যবসা করে আসছেন। গত ৫ আগস্টের পরে বিএনপি'র কতিপয় নেতাকর্মী সেই দোকান ঘর ভেঙে দখলের চেষ্টা করলে স্থানীয়দের বাঁধায় রক্ষা পায়। গত কয়েক দিন আগে সেই দোকানের চার দিকে খুঁটি পুতে রাখেন ওই ওয়ার্ড বিএনপি'র সভাপতি মতিউল ইসলাম লিটন। রোববার ইউপি সদস্য আব্দুল মালেক ব্যবসায়ীক কাজে শহরে অবস্থান করার সুযোগে বিএনপি'র নেতা মতিউল ইসলাম লিটন দলবল নিয়ে ইউপি সদস্যের দোকান ঘরটি ভাংচুর করে অধিকাংশ টিন ও কাঠসহ মালমত্র নিয়ে চলে যায় তারা। জায়গাটা পুরো ফাকা দখলে নেয়ার চেষ্টা করে। খবর পেয়ে থানা পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। এরই মধ্যে তার খড়ির দোকানের সকল বেড়া ও ঘর ভাংচুর করে হামলাকারীরা। 

স্থানীয় দোকানদার রমজান আলী জানান, কয়েকদিন আগে মালেক মেম্বারের এই জায়গাটুকু দখল করার জন্য খুঁটি পুঁতে রাখা হয়। আজকে সেটি প্রভাব খাটিয়ে আফজাল ও লিটন দোকানটি ভেঙ্গে দখল নেয়। দখলকারীরা সকলেই বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত।

ভুক্তভোগী ইউপি সদস্য আব্দুল মালেক বলেন, রেলওয়ে থেকে লিজ নিয়ে ওই জায়গায় দীর্ঘ ২০ বছর যাবত ব্যবসা করে আসছি। বিধিমত রেলওয়েকে খাজনাও পরিশোধ করে আসছি। আওয়ামীলীগের পতনের পরদিন বিএনপি নেতা লিটন, আফজাল ও শফিকুল প্রভাব খাটিয়ে আমার দোকান আংশিক ভেঙে দখলের চেষ্টা করলে স্থানীয়দের বাঁধায় পারেনি। ভাঙ্গা দোকান মেরামত করে পুনরায় ব্যবসা চালু করেছি। সেই দোকানও তারা ভেঙ্গে দিয়েছে। বৈধ জায়গায় আমার বৈধ দোকান তারা ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে ভেঙ্গে দিয়েছে। আমি এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করব। 

মোগলহাট ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ড বিএনপি'র সভাপতি মতিউল ইসলাম লিটন বলেন, রেলওয়ের ওই জমিতে আগে আমাদের 'দুর্বার ক্লাব' ছিল। সেটি আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসার পরে ভেঙ্গে দিয়ে মালেক মেম্বর দোকান করেছে। পাসে স'মিল করেছে। যে স'মিল উদ্বোধন করেছিলেন জেলা আওয়ামীলীগের সম্পাদক অ্যাডভোকেট মতিয়ার রহমান। স'মিলের পাশে থাকা আমাদের জমিও দখলে করেছিল মালেক মেম্বর। আমরা এসব বিষয় নিয়ে সমন্বয়কদের লিখিত অভিযোগ দিয়েছি তারা ব্যবস্থা নিবেন। আমরা তার দোকান ভাংচুর করব কেন?  আমি কোন ধরনের ভাংচুর করি নি। 

লালমনিরহাট সদর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরনবী বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে অফিসার পাঠানো হয়েছিল। এখন পর্যন্ত লিখিত কোন অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।