উজানের পানিতে তিস্তা নদী এখন ভরপুর। গত পাঁচ বছরের তুলনায় এ বছর শুষ্ক মৌসুমে রেকর্ড পরিমাণে পানি ছিল তিস্তা নদীতে। তিস্তা ব্যারাজ এলাকায় নদীর গভীরতা বেশি থাকায় গত পাঁচ বছর পর আবারও তিস্তা নদীতে ধরা পড়ছে ইলিশ। ইলিশ পেয়ে তিস্তাপারের জেলেরা আনন্দিত। তিস্তার তরতাজা ইলিশ কিনতে হুমড়ি খেয়ে পড়ছে লোকজন।
মঙ্গলবার (১০ মে) সকালে লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার দেশের সর্ববৃহৎ তিস্তা ব্যারাজের ভাটিতে জেলেদের জালে উঠছে তাজা ইলিশ। এমন দৃশ্য নজর কাড়ছে ব্যারাজে ঘুরতে আসা ভ্রমণপিয়াসীদের। ইলিশ মাছ দেখতে ভিড় জমাচ্ছেন তিস্তাপারের। জানা গেছে, তিস্তায় ইলিশ মাছ পাওয়া জেলেদের স্বপ্নের মত। তারাও কোনদিন কল্পণা করতে পারেনি তিস্তায় ইলিশ পাওয়া যাবে। গত ২০১৭ সালে তিস্তার প্রথম ইলিশ মাছ ধরা পড়ে। এর ৫ বছর পর গত এক মাস থেকে নদীতে প্রতিদিন ৫ থেকে ৬টি ইলিশ মাছ
জেলেদের জালে ধরা পড়ছে। ধরা পড়া ইলিশের পরিমাণ ৩ শত গ্রাম থেকে ৫ শত গ্রাম।তিস্তা পাড়ে মুহূর্তেই বিক্রি হয়ে যাচ্ছে ইলিশ। প্রতি কেজি ৮ শত থেকে এক হাজার টাকা দরে।তিস্তা পাড়ের জেলেরা জানান, শুষ্ক মৌসুমে কয়েক দফায় তিস্তায় পানি থাকায় যমুনা থেকে ইলিশ মাছ ভেসে তিস্তা এসেছে। প্রতিবছর তিস্তায় ইলিশ পেলে আমরা জেলেরা লাভবান হব।
বর্তমানে তিস্তায় ইলিশসহ ধরা পড়ছে বৈরালি, বোয়াল, আইড়, চিতল,গুলশা টেংরা, কালবাউশসহ নানা প্রজাতির মাছ। এসব মাছ তিস্তা নদীর পাড়েই মুহূর্তেই বিক্রি হচ্ছে।
গড্ডিমারী ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য আইনুল হক (৫০)বলেন, ৮৮ সালের বন্যায় তিস্তা নদীতে ইলিশ মাছ দেখেছি। আজ ৩০ থেকে ৩৫ বছর পর আবারও তিস্তা নদীতে ইলিশমাছ ধরা পড়েছে।
ইলিশ মাছ পাওয়ায় তিস্তাপারের বাসিন্দাও খুশি। তিস্তা পাড়ের জেলে রহমত আলী(৫৫) বলেন,তিস্তা নদীতে ইলিশ পেয়ে আমরা খুশি। তিস্তায় ইলিশ পাওয়ায় আমাদের ভাগ্যের বিষয়। আমরা আশা করি প্রতি বছর যেন ইলিশ মাছ পাওয়া যায়। সীমান্ত বাজার এলাকার লাল মিয়া (৬০) বলেন,আমার ঠেলা জালে দুইটি ইলিশ ধরা পড়েছে। আমি খুবই খুশি। এই ইলিশ মাছ দুটি বিক্রি না করে বাড়িতে খাওযার জন্য নিয়ে যাব। এ বিষয়ে হাতীবান্ধা দোয়ানী পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বরত এসআই সিদ্দিক বলেন, তিস্তা নদীতে ইলিশ মাছ ধরা পড়েছে জেলেদের কাছ থেকে জেনেছি। তিস্তায় ইলিশ মাছ পাওয়া গেলে জেলেদের ভাগ্য খুলবে।
এই নিউজ পোর্টাল এর কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি ও দণ্ডনীয় অপরাধ।