লালমনিরহাট সদর হাসপাতালকে ভারতের দেওয়া উপহার হিসেবে বিশেষায়িত এম্বুলেন্সটি আজও পড়ে আছে অযন্তে-অবহেলায়-যেনো দেখার কেউ নেই।
সরকারি হাসপাতাল গুলি যুগের সাথে তাল মিলিয়ে আধুনিক হলেও, লালমনিরহাট সদর হাসপাতালের বেলায় তা যেনো ভিন্ন।
সদর হাসপাতালটি অবকাঠামোগত উন্নয়ন হলেও হাসপাতালের কর্মকর্তা কর্মচারীদের মানসিকতার কোনো পরিবর্তন হয়নি বলে মন্তব্য করছেন জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে সেবা নিতে আসা রোগী ও রোগীর স্বজনেরা ও পার্শ্ববর্তী জেলা কুড়িগ্রাম থেকে আসা অনেক রোগীরাই।
বর্তমানে সদর হাসপাতালের চার তলা ভবনে সিড়ি বেয়ে উঠতে হাতের বামে তাকালে চোখে পড়বে সেই অত্যাধুনিক বিশেষায়িত এম্বুলেন্সটি। এম্বুলেন্সটির দিকে তাকালে বুঝা যাবে কতটি অযন্তে অবহেলায় পড়ে রয়েছে দীর্ঘদিন থেকে। এটি সাধারণ কোন এম্বুলেন্স নয়, এটি প্রতিবেশী দেশ ভারতের জনগণের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের জনগনকে উপহার দেওয়া লাইফ সাপোর্ট সম্পন্ন একটি বিশেষায়িত এম্বুলেন্স। এটির দাম প্রায় ১ কোটি টাকা।
জানা যায়, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ২০২১ সালের ২৬ ও ২৭ মার্চ দুই দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে বাংলাদেশে আসেন। সে সময় স্বাস্থ্য সেবার মান উন্নয়ন ও তৎকালীন সময়ের করোনা পরিস্থিতি যৌথ মোকাবিলায় বাংলাদেশকে ১০৯ টি লাইফ সাপোর্ট অ্যাম্বুলেন্স উপহারের ঘোষণা দিয়েছিলেন। তারি প্রেক্ষিতে ৫ চালানে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার সবকটি অ্যাম্বুলেন্স বাংলাদেশে প্রবেশ করে।
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে লালমনিরহাট পৌরসভাকে সেই অত্যাধুনিক বিশেষায়িত অ্যাম্বুলেন্সটি উপহার দিতে ২০২১ সালের ২২ ডিসেম্বর বিকেল সাড়ে ৪ টায় পৌরসভা চত্বরে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় অ্যাম্বুলেন্সের প্রতীকী চাবি হস্তান্তর করেন ভারতের নিযুক্ত সহকারী হাই কমিশনার সঞ্জীব কুমার ভাট্টি। সে অনুষ্ঠানে পৌর মেয়র রেজাউল করিম স্বপনের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন তৎকালীন জেলা প্রশাসক আবু জাফর, অবসর প্রাপ্ত ক্যাপ্টেন আজিজুল হক বীর প্রতীক, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সার্কেল) মারুফা জামাল প্রমুখ। এছাড়াও সে অনুষ্ঠানে শতাধিক মুক্তিযোদ্ধাও উপস্থিত ছিলেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সদর হাসপাতালের কয়েকজন কর্মচারি বলেন, অ্যাম্বুলেন্সটি অযন্তে পরিত্যাক্ত অবস্হায় থাকার কারনে ভিতরের যন্ত্রপাতি এক শ্রেণির অসাধু কর্মচারিরা খুলে খুলে বিক্রি করেছে।
পৌর মেয়র রেজাউল করিম স্বপন এ বিষয়ে বলেন, এতো দামী একটা অ্যাম্বুলেন্স এ ভাবে অযন্তে অবহেলায় সদর হাসপাতাল কতৃপক্ষ ফেলে রাখবে এটা কাম্য নয়। হাসপাতালে আসা রোগীরা এই অ্যাম্বুলেন্স সেবা থেকে বঞ্চিত হবে এটা মেনে নেওয়া যায় না। তাই আমি হাসপাতাল কতৃপক্ষকে বলবো যত তারাতাড়ি সম্ভব অ্যাম্বুলেন্স সেবা চালু করা হোক।
সচেতন মহল এ বিষয়ে বলেন, অযত্নে থাকা ভারতের মুল্যবান এই উপহারের যথাযথ মর্যাদা দিয়ে লাইফ সাপোর্ট এম্বুলেন্সটির সেবা চালু করা হোক।
এ বিষয়ে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ মোঃ রমজান আলী'র কাছে এম্বুলেন্সটির ভেতরের অংশ দেখতে চাইলে তিনি অপারগতা প্রকাশ করেন এবং আনুষ্ঠানিক ভাবে সংবাদকর্মীদের এ বিষয়ে কিছু না বলে তার কার্যালয় ত্যাগ করেন।
এই নিউজ পোর্টাল এর কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি ও দণ্ডনীয় অপরাধ।