নুপুর কুমার রায়,শাহজাদপুর (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি: সিরাজগঞ্জ শাহজাদপুরে একটি সড়ক নির্মাণের মাস যেতে না যেতেই প্রায় ৭০ শতাংশ স্থানে ধসে পড়েছে। ৮৫০ মিটার সড়কের একাধিক স্থান দেবে গেছে, সৃষ্টি হয়েছে ছোট-বড় অসংখ্য গর্তের। দুর্ঘটনা এড়াতে সম্প্রতি ওই সড়ক দিয়ে যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় ব্যক্তিদের অভিযোগ, নিম্নমানের উপকরণ ও দায়িত্বরত উপ-সহকারী প্রকৌশলী কর্মকর্তার যোগসাজশে নিয়ম নীতিকে তোয়াক্কা না করেই সড়কটির কাজ করায় মাস না পেরুতেই সড়কটি ধসে গেছে।
এমনই অবস্থা উপজেলার বেলতৈল ইউনিয়নের মালতিভাঙ্গা পূর্বপাড়া সড়কের। উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) কর্মকর্তারা বলছেন, ঠিকাদারি সংস্থার জামানতের টাকা আটকে দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয় এলজিইডি কার্যালয় সূত্র জানায়, ২০২১-২২ অর্থবছরে মালতিভাঙ্গা পূর্বপাড়া হাই স্কুল হইতে বেলকুচি ধুকুরিয়া বেড়া হাট ভায়া আইকবেড়া পর্যন্ত ৮৫০ মিটার সড়কটি মাটি ভরাট ও হেরিং বোন বন্ড (এইচবিবি) সড়ক নির্মাণের কাজটি পায় মেসার্স আল ফরিদ এন্ড সব্দ সানিলা। এ প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয় প্রায় ৮৩ লাখ ১৩ হাজার ১শ’ ৫২ টাকা। ২০২২ সালে কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ২০২৩ সালের গত জুন মাসের এসে কাজটি শেষ করে।
অভিযোগ রয়েছে, এলাকাবাসী ঠিকাদারি সংস্থা ও দায়িত্বরত কর্মকর্তা উপ-সহকারী প্রকৌশলী এ.কে.এম ফজলুল করিমকে সিডিউল মোতাবেক কাজটি সুন্দর করে করার জন্য অনুরোধ করলে সে কথায় কর্ণপাত না করে উল্টো তারা এলাকাবাসীকে ভয়ভীতি দেখিয়েছে।
সরেজমিন দেখা যায়, সড়কটি চলাচলের অযোগ্য হয়ে পরেছে বন্ধ হয়ে গেছে রিক্সা ভ্যান চলাচল। এমনকি কিছু জায়গায় বাইসাইকেল চালিয়েও যাওয়া যায় না।
মালতিভাঙ্গা পূর্বপাড়া হাই স্কুলের সভাপতি আনিছুর রহমান, আনছার আলী, ওমর ফারুক, সাইফুল ইসলাম ও ভ্যান চালক বিপুল ইসলাম জানান, নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করে কাজ করায় কয়েক দফায় প্রতিবাদ করেও কোন কাজ হয়নি উল্টো উপ-সহকারী প্রকৌশলী এ.কে.এম ফজলুল করিম ও ঠিকাদারি সংস্থা নিন্মমানের সামগ্রী ব্যবহার করে দায়সাড়া ভাবে কোনো রকমে কাজটি শেষ করেন। এই সড়কটি নির্মাণে ঠিকাদার খরচ কমাতে মাটির পরিবর্তে বালু ব্যবহার করেছেন। সড়কের দুই পাশে (শোল্ডারে) ২ ফুট মাটি ধরা থাকলেও সেখানে ১ ফুটও মাটি দেওয়া হয়নি। সড়কে বালু-মাটি দিয়ে ভরাটের পর সড়কটি মজবুত করতে রোলার দিয়ে পেটানোর নিয়ম রয়েছে। কিন্তু তা না করেই ওই ঠিকাদারি সংস্থা নিয়মের তোয়াক্কা না করে সড়ক নির্মানের কাজ শেষ করে।
এব্যাপারে মেসার্স আল ফরিদ এন্ড সব্দ সানিলার কর্ণধার মেহেদী এলাকাবাসীর অসহযোগীতার কথা উল্লেখ করে বলেন, সড়ক নির্মাণে কোন অনিয়ম হয়নি। একটা ইটও খারাপ নেই। তবে সড়কটি যে ভেঙ্গে গেছে বিষয়টি স্বীকার করেন মেহেদী।
এদিকে সব অভিযোগ অস্বীকার করে উপ-সহকারী প্রকৌশলী এ.কে.এম ফজলুল করিম বলেন, আমার বিপক্ষে যে কথাগুলো বলেছে তা ভিত্তিহীন। অপরদিকে এবিষয়ে কোন বক্তব্য দিতে রাজি হননি শাহজাদপুর উপজেলা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী নুর নবী।
এই নিউজ পোর্টাল এর কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি ও দণ্ডনীয় অপরাধ।