সিরাজগঞ্জের সলঙ্গায় খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ১৫ টাকা মূল্যের ৪৯৬ কার্ডধারীর চাল আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে ধুবিল ইউনিয়নের ডিলার আবু হাসেম ও তার সহকারী আব্দুল আলীমের বিরুদ্ধে। সোমবার এই চাল আত্মসাতের ঘটনায় রায়গঞ্জ উপজেলা পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের মাঠ সহকারী ও ট্যাগ অফিসার সঞ্জিত কুমার বাদী হয়ে সলঙ্গা থানায় মামলা দায়ের করেছেন।
জানাগেছে, রায়গঞ্জ উপজেলার ধুবিল ইউনিয়নের ধুবিল তালতলা এলাকার চালের ডিলার আবুল হাসেম রবিবার (দুপুরে) তার পয়েন্ট থেকে চাল দেওয়ার কথা থাকলে কার্ডধারীরা আসে কিন্তু কোনও চাল দেওয়া হবে না বলে সাফ জানিয়ে দেয় ডিলারের সহকারি আব্দুল আলীম। তখন কার্ডধারীরা ধুবিল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কে জানালে চেয়ারম্যান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে বিষয়টি মুঠোফোনে জানান। পরে ডিলার কে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার চাপ প্রয়োগ করলে মাত্র কয়েক জন র্কাডধারীকে চালের পরিবর্তে ৫০০ টাকা করে হাতে ধরিয়ে দেয়। অনেকেই চাল ও টাকা না পেয়ে খালি হাতে বাড়ি ফিরে যায়।
ভুক্তোভুগি চান বিবি,রমজান আলীসহ প্রায় অর্ধশতাধিক কার্ডধারীরা জানান, আমাদের দুই মাসের চাল দেওয়ার কথা ছিলো গত সপ্তাহে ১ মাসের চাল দেওয়া হয়েছে। আরোও এক মাসের চাল দেওয়ার কথা কিন্তু আমরা চানতে পারি ডিলার মাস্টাররোলে আগামী দুই মাসের ভুয়া স্বাক্ষর নিয়েছে। কিন্তু এক মাসের ৪৯৬ কার্ডধারীর চাল দিয়েছে এবং এক মাসের আত্মসাৎ করেছে ডিলার আবুল হাসেম,সহকারী ,চান্দাইকোন ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুল আলীম ও ফিরোজ খান। চাল না পেয়ে নিরুপয় হয়ে আমরা বিষয়টি আমাদের ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানালে চালের পরিবর্তে ৫০০ করে টাকা দিয়েছে। র্কাডধারীরা আরো জানান, ডিলার আবুল হাসেম চাল না দিয়ে এলাকা থেকে পালিয়ে রয়েছে। কিন্তু তার সহকারী আব্দুল আলীম দলীয় ক্ষমতা দেখিয়ে আমাদের হুমকি দিয়ে মাত্র কয়েক জন কার্ডধারীকে টাকা দেয়। আর অন্যদের মামলার ভয় দেখিয়ে ডিলার পয়েন্ট থেকে তারিয়ে দেয়। প্রশাসনের কাছে ডিলার আবু হাসেম, ডিলারের সহকারি আব্দুল আলিম ও ফিরোজ আহম্মেদের বিরুদ্ধে তদন্ত পূর্বক উপযুক্ত শাস্তি দাবি করেছে ভুৃক্তোভুগি র্কাডধারীরা।
ধুবিল ইউনিয়নের ডিলার আবু হাসেমের সাথে মুঠোফোন বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
ডিলারের সহকারী আব্দুল আলীম জানান, চাল বিতরণ কার্ডের তারিখ ভুল হওয়ায় র্কাডধারী ও ডিলারের লোকজনের সাথে ভুল বোঝাবুঝির কারনে এমন হয়েছিল। তবে কিছু মানুষকে চালের পরির্বতে টাকা দেওয়া হয়েছে।
ধুবিল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান রাসেল তালুকদার বলেন, খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ১৫ টাকা মূল্যের চাল আত্মসাতের বিষয়টি নিয়ে কার্ডধারীরা আমাকে জানালে আমি উপজেলা নির্বাহী অফিসার তৃপ্তি কণা মন্ডল স্যারকে জানিয়েছি।
রায়গঞ্জ উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. নিয়ামুল হক জানান, চাল আত্মসাতের ঘটনায় সলঙ্গা থানায় ডিলার আবুল হাসেমের নামে মামলা দায়ের করা হয়েছে। তদন্ত করে ব্যাবস্থা গ্রহন করা হয়েছে।
সলঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এনামুল হক বলেন, চাল আত্মসাতের ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। তদন্ত চলছে। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
রায়গঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তৃপ্তি কণা মন্ডল বলেন,কার্ডধারীদের চাল না পাওয়ার অভিযোগের তদন্ত চলছে। এবিষয়ে থানায় মামলার দায়ের করা হয়েছে।
এই নিউজ পোর্টাল এর কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি ও দণ্ডনীয় অপরাধ।