মঙ্গলবার, ০৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১০:৫৩ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ

আমরা জনগণের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছি

রিপোর্টারের নাম : / ৫৮ বার পড়া হয়েছে।
সময় কাল : বৃহস্পতিবার, ১১ জানুয়ারি, ২০২৪

দেশের মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘শত বাধা উপেক্ষা করে জনগণ ভোটে অংশ নিয়েছে। আমরা জনগণের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছি। জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোটে অংশ নিয়েছে। বিএনপির জ্বালাও-পোড়াওয়ের মাঝেও তারা নিজের ভোট নিজে দিয়েছে।

’গতকাল বুধবার বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগ আয়োজিত সমাবেশে বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘নির্বাচনে আমরা কোনো হস্তক্ষেপ করিনি। কেউ বলতে পারবে না দিনের ভোট রাতে হয়েছে। আমরা আইন করে নির্বাচন কমিশনকে স্বাধীন করেছি।

আজ রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করব। কাল নতুন সরকার গঠন করব।’ তিনি বলেন, ‘১৯৭৫ সালে জাতির পিতাকে হত্যার পর যারা ক্ষমতায় এসেছে, তারা ভোটের অধিকার কেড়ে নেয়। আমি ফিরে আসি এমন একটি দেশে, যখন একদিকে খুনি আরেক দিকে যুদ্ধাপরাধীরা ক্ষমতায় বসে আছে।

আজকের বাংলাদেশ বদলে যাওয়া বাংলাদেশ। আমরা দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে কাজ করে যাচ্ছি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে আমরা জনগণের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করেছি। মিলিটারিরা যখন নির্বাচন করে, তখন আমাদের গণতন্ত্র নিয়ে, আমাদের নির্বাচন নিয়ে, অধিকার নিয়ে কেউ কথা বলে না। আর যখন আমরা গণতন্ত্রকে সংগঠিত করেছি, তখন তারা নির্বাচন নিয়ে কথা বলে।

তিনি বলেন, ‘আজকে গণতন্ত্র আছে বলে দারিদ্র্য কমেছে, মানুষের আয় বৃদ্ধি পেয়েছে। আমরা খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছি। সব দিক থেকে যখন বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, সারা বিশ্ব যেখানে বলে বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল, তখন তাদের চোখে কিছুই ভালো লাগে না। মনে হয়, একটা অগণতান্ত্রিক সরকার এলে তারা খুশি।’

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘২০০৮ সালের নির্বাচনের আগে আমাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তখন সাধারণ মানুষ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের কারণে আমাকে মুক্ত করা হয়েছিল। ভোটে জনগণ বিএনপিকে প্রত্যাখ্যান করেছিল। বিএনপি গণতন্ত্রের পথে আসেনি। তার পর থেকে প্রতিটি নির্বাচনে জনগণ আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়েছে।’

শেখ হাসিনা বলেন, বাঙালি জাতির ভাগ্য গড়তে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাঁর পুরো জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। দেশের মানুষের কোনো কিছু ছিল না। থাকার ঘর ছিল না, বাড়ি ছিল না, শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত ছিল দেশের মানুষ। সেই জাতির জন্য, নিজের জীবন উৎসর্গ করেন জাতির পিতা। অনেক সংগ্রাম ও ত্যাগের মধ্য দিয়ে এই দেশ স্বাধীন করেন।

বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, পাকিস্তানি কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে তিনি ফিরে এসেছিলেন এই বাংলাদেশে, সবার আগে ছুটে এসেছিলেন ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে, যেখানে তিনি ভাষণ দিয়েছিলেন।

দীর্ঘ ৯ মাস বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কারাগারে বন্দি ছিলেন উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, সেখানে তাঁকে ঠিকমতো খাবারও দেওয়া হতো না। সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্নভাবে রাখা হয়েছিল তাঁকে। এমনকি একটি পত্রিকাও তাঁর জন্য রাখা হয়নি। তাঁর ফাঁসির হুকুম হয়ে গিয়েছিল। সেই অবস্থা থেকে বেরিয়ে লন্ডন হয়ে বাংলাদেশে পৌঁছেছিলেন তিনি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশে পা রেখেই বাংলার জনগণের কাছে ছুটে গিয়েছিলেন মন্তব্য করে তাঁর কন্যা বলেন, ১০ জানুয়ারি এখানেই তিনি ভাষণ দেন। সেই ভাষণে একটি দেশের ভবিষ্যৎ, উন্নয়ন, সব পরিকল্পনা, দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর পরিকল্পনা, মহান মুক্তিযুদ্ধের যে আদর্শ, সেটাই তিনি তুলে ধরেছিলেন।

সদ্যঃস্বাধীন বাংলাদেশের অবস্থা বর্ণনা করতে গিয়ে তিনি বলেন, এ দেশে অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষার কোনো কিছু ছিল না। ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ মানুষই দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করত। এক বেলা খাবার পেত না, দিনের পর দিন না খেয়ে তাদের জীবন কাটাতে হয়েছে। সেই মানুষদের মুক্তির জন্য অনেক ত্যাগ স্বীকার করতে হয়েছিল তাঁকে।

গতকাল দুপুর আড়াইটায় সমাবেশ শুরু হয়। এর আগেই মিছিল, স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে গোটা সোহরাওয়ার্দী উদ্যান এলাকা। ঢাকার বিভিন্ন থানা ও ওয়ার্ডের নেতাকর্মীরা দলে দলে মিছিল নিয়ে আসেন। মিছিলে জয় বাংলাসহ সরকারের উন্নয়ন নিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দেওয়া হতে থাকে। মঞ্চে তখন দলের কেন্দ্রীয় নেতারা বক্তৃতা দিচ্ছেন।

সমাবেশে নির্বাচনের খেলা শেষ এখন রাজনীতির খেলা শুরু হবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ফাইনাল হয়ে গেছে। ৭ জানুয়ারি ফাইনাল হয়ে গেছে। বিএনপি একটি ভুয়া দল। ওদের নেতা তারেক ভুয়া। তাদের এক দফা ভুয়া। তাদের আর কোনো ভবিষ্যৎ নেই। শুধু অন্ধকার। খেলা এখন নতুন খেলা।

ওবায়দুল কাদের বলেন, এখন খেলা হবে দুর্নীতির বিরুদ্ধে, লুটপাটের বিরুদ্ধে। খেলা হবে অগ্নিসন্ত্রাসের বিরুদ্ধে। তিনি বলেন, ‘আজ ঐতিহাসিক ১০ জানুয়ারি। যত দিন লাল-সবুজের পতাকা উড়বে, যত দিন বাংলার পাখিরা গান গাইবে তত দিন বঙ্গবন্ধু তুমিও থাকবে।’


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর

এক ক্লিকে বিভাগের খবর