আলোচনায় প্রাধান্য পাবে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক ও রোহিঙ্গা ইস্যু

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর অ্যান্টনি ব্লিংকেনের উপদেষ্টা ডেরেক শোলে ঢাকায় এসেছেন। গতকাল বিকালে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন তাকে স্বাগত জানান। শোলে বাংলাদেশ সফরে সাত সদস্যের একটি আন্তঃসংস্থা প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
প্রতিনিধি দলে অন্যদের মধ্যে ইউএসএআইডির প্রশাসক সামান্থা পাওয়ারের উপদেষ্টা ক্লিনটন হোয়াইট, পররাষ্ট্র দপ্তরের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক মুখ্য উপসহকারী সচিব এলিজাবেথ হোর্স্ট ও গ্লোবাল ক্রিমিনাল জাস্টিস-বিষয়ক অ্যাম্বাসেডর-অ্যাট-লার্জ বেথ ফন স্কক রয়েছেন।
ডেরেক শোলের এ সফরের উদ্দেশ্য রোহিঙ্গাদের মানবিক প্রতিক্রিয়ার ওপর উচ্চদৃষ্টিসহ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক এবং দুই দেশের সম্পর্ক জোরদার করা। সফরকালে মার্কিন প্রতিনিধি দল প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে।
আজ পররাষ্ট্র সচিব ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে একটি আলাদা বৈঠক করবেন তিনি। বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস ও দূতাবাস কর্মকর্তারা বৈঠকে প্রতিনিধি দলের সঙ্গে থাকবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য, গণতন্ত্র, মানবাধিকার, নিরাপত্তা ও রোহিঙ্গা সংকটের মতো বিষয়গুলো আলোচনার টেবিলে গুরুত্ব পেতে পারে। পাশাপাশি র্যাব ও এর সাবেক-বর্তমান কর্মকর্তাদের ওপর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিষয়ে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বরাবরের মতোই জোর দেয়া হবে।
এর আগে বাংলাদেশের একটি গণমাধ্যমকে দেয়া সাক্ষাৎকারে ডেরেক শোলে বলেন, ‘বাংলাদেশের ওপর থেকে রোহিঙ্গাদের চাপ কমানোর চেষ্টা করছে যুক্তরাষ্ট্র। এজন্য কিছু রোহিঙ্গা শরণার্থীকে যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে যাওয়ারও চেষ্টা চলছে। মিয়ানমারের পরিস্থিতি আরো খারাপের দিকে যাচ্ছে। এ নিয়ে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।’
ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে বাংলাদেশ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে ডেরেক শোলে বলেন, ‘এ কারণে যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তারা বাংলাদেশ সফর করছেন।’
কোনো গণতন্ত্রই নিখুঁত নয় মন্তব্য করে ডেরেক শোলে বলেন, ‘কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র সবসময় নিজেদের ভালো করার চেষ্টা করে এবং ভুল স্বীকার করে উন্নতি করার চেষ্টা করে। অংশীদারি ও বন্ধুত্বের চেতনা থেকেই সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন, নাগরিক সমাজের কথা বলে যুক্তরাষ্ট্র।’
এ সফরের বিষয়ে এর আগে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সেহেলী সাবরীন বলেছিলেন, ‘ডেরেক শোলের এ সফরের উদ্দেশ্য হচ্ছে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র দুই দেশের মধ্যে যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক, এটাকে আরো জোরদার করা। দুই সরকারের মধ্যে যে সম্পর্কটা আছে, সেটাকে আরো শক্তিশালী করা।’
তিনি আরো বলেন, ‘উনি বিশেষত আমাদের বাংলাদেশে যে রোহিঙ্গা সংকট, রোহিঙ্গাদের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের যে অবস্থান, আমরা যে মানবিক সাহায্য দিয়েছি সে বিষয়ে সরজমিনে দেখতে এবং আলোচনা করতে আসছেন। বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কটা সেই আগের মতোই আছে। আমরা একযোগে কাজ করছি সব সমস্যা সমাধানের জন্য।’