আলোচিত সেই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু!
ঘুষ নেয়ার অভিযোগ তুলে চিকিৎসকের অপসরনের দাবিতে স্থানীয়দের মানববন্ধন ও গনপিটিশনের বিষয়ে তদন্তে নেমেছেন লালমনিরহাট সিভিল সার্জন ডা. নির্মলেন্দু রায়।
মঙ্গলবার(২৬ জুলাই) দিনভর আদিতমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বিভিন্ন বিষয় তদন্ত ও অভিযোগকারীদের বক্তব্য গ্রহন করেন তিনি।
এর আগে রোববার(২৪ জুলাই) উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. তৌফিক আহমেদের অপসরন দাবি করে লালমনিরহাট বুড়িমারী মহাসড়কে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের গেটে ঘন্টা ব্যাপী মানববন্ধন করেন সাধারন রোগী ও স্থানীয়রা।
স্থানীয়রা জানান, উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের মানুষের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে ৫০ শয্যার আদিতমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নির্মান করে সরকার। বর্তমান উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. তৌফিক আহমেদ যোগদানের পর থেকে এ হাসপাতালকে দুর্নীতির আখড়ায় পরিনত করেছেন। সরকারী ওষুধ রোগীদের না দিয়ে কালোবাজারে বিক্রি, হাসপাতাল ক্যাম্পাসের ৩০টি বড় বড় জীবন্ত মেহগনি গাছ কেটে বিক্রি করে আত্নসাৎ করেন ডা. তৌফিক আহমেদ। এতেই শেষ নয়, টাকা ছাড়া কোন ফাইলে স্বাক্ষর করেন না। ঘুষ না পেয়ে দুইজন কর্মচারীর বেতন ভাতা ৮/১০ মাস বন্ধ রাখেন। যার প্রতিবাদ করায় হয়রানী ও অশ্লীন আচরন করেন। এ কারনে সাম্প্রতি সময় হাসপাতালের ৭জন কর্মচারী গণবদলির আবেদন করেন।
স্থানীয়রা জানান, দুই বছর পুর্বে নিয়োগকৃত ঠিকাদার দিয়ে চলছে রোগীদের নিম্নমানের পথ্য সরবরাহ। ভুয়া রোগী দেখিয়ে পথ্য ও ওষুধের বিল উত্তোলন করে আত্নসাৎ করেন। সরকারী কোয়াটারে বসবাস করা কর্মচারীদের বেতনে কোন বাসাভাড়া কর্তন না করে নিজে আত্নসাৎ করেন। কোটেশন দরপত্রের কাজে নিজের এলাকার বন্ধুদের দিয়ে এ হাসপাতালে কাজের নামে ডা. তৌফিক আহমেদ লাখ লাখ টাকা আত্নসাৎ করেছেন বলে স্থানীয়রা দাবি করেন।
চিকিৎসা সেবার মত একটি গুরুত্বপুর্ন নাগরিক অধিকার বঞ্চিত হয়ে পড়ায় স্থানীয়রা ইতিপুর্বে গনপিটিশন দায়ের করেন যার প্রেক্ষিতে ডা.তৌফিক আহমেদকে কিশোরগঞ্জে বদলির আদেশ আসে। যা অর্থ আর ক্ষমতার বিনিময়ে বাতিল করে সপদে বহাল রয়েছেন। এতে আরও ভুষে উঠে সাধারন রোগী আর এলাকাবাসী।
ডা.তৌফিকের নানান অনিয়ম আর দুর্নীতির রুখতে ভুক্তভোগী সাধারন রোগী ও স্থানীয়রা স্বাস্থ্যমন্ত্রী বরাবরে দ্বিতীয় বারের মত গনপিটিশন দায়ের করেন। একই সাথে ডা.তৌফিকের দ্রুত অপসরন দাবি করে রোববার(২৪ জুলাই) হাসপাতালে গেটে ঘন্টা ব্যাপী মানববন্ধন করেন সাধারন রোগী ও এলাকাবাসী।
কর্মস্থাল অনিরাপদ দাবি করে হাসপাতালে কর্মরত কর্মচারীদের একটি অংশ গনবদলির আবেদন করায় প্রতিষ্ঠানটির পরিবেশ অস্থিতিশীল হয়ে উঠে। কর্মকর্তা কর্মচারীরা প্রকাশ্যে দুইটি গ্রুপে পরিনত হয়। ফলে ভেঙে পড়ে স্বাস্থ্য সেবার মত গুরুত্বপুর্ন নাগরিক সেবা।
এসব উদ্বুদ্ধ পরিস্থিতে স্বাস্থ্য সেবার মান ফেরাতে এবং ঘটে যাওয়া সকল ঘটনার তদন্তে মঙ্গরবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত সরেজমিনে তদন্ত করেন লালমনিরহাট সিভিল সার্জন ডা. নির্মলেন্দু রায়।
তদন্ত শেষে সিভিল সার্জন ডা. নির্মলেন্দু রায় সাংবাদিকদের বলেন, গনপিটিশন ও গনবদলিসহ সকল বিষয়ে তদন্ত চলছে। গনবদলির আবেদনকারীদের ৭জন এবং গনপিটিশনের ৫জনের লিখিত বক্তব্য নেয়া হয়েছে। এছাড়াও সকল বিষয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। কিছু অসংঙ্গতি রয়েছে। যা দ্রুত সমাধান করতে বলা হয়েছে। তদন্ত শেষে তদন্ত প্রতিবেদন ঊর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে পাঠানো হবে।