শুক্রবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৫, ০১:৪৯ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
বর্ণাঢ্য আয়োজনে কুষ্টিয়া সাংবাদিক ফোরাম ঢাকা’র সাধারণ সভা, সংবর্ধনা ও নতুন কমিটির অভিষেক সলঙ্গায় মসজিদ কমিটি নিয়ে ষড়যন্ত্র ও অপপ্রচারের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন কাজিপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় গৃহবধূর মৃত্যু  সলঙ্গায় টিসিবির স্মার্ট ফ্যামলী কার্ড বিতরণে অর্থ নেয়ার অভিযোগ ভাঙ্গুড়ায় কাবিটা ও টিআর প্রকল্পের কাজ ইউএনওর পরিদর্শন ভাঙ্গুড়ায পাঁচ মাদক ব্যবসায়ীকে আটক লালমনিরহাটে ঘুষ বানিজ্যকারী নাজিরকে স্থায়ীভাবে বরখাস্তের দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত কামারখন্দে দরবার শরীফের সম্পদ আত্মসাতের চেষ্টা ও মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ উল্লাপাড়ায় ইয়াবা ট্যাবলেটসহ ২ মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার ভাঙ্গুড়ায় দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে ইউনিয়ন কৃষকদলের আহব্বায়ককে অব্যাহতি

ছন্দপতনে শিক্ষা জীবনে ধস বিবিচিনির শিশু শিক্ষার্থী ফাতিমার

বরগুনা প্রতিনিধি. / ৮৮ বার পড়া হয়েছে।
সময় কাল : মঙ্গলবার, ৪ জুলাই, ২০২৩

ছন্দপতনে ধস নেমেছে শিশু শিক্ষার্থী ফাতিমা আক্তারের শিক্ষা জীবন। সেদিনকার তার প্রতি অমানবিক আচরণ সে কিছুতেই ভুলতে পারছে না। ৬ মাস পরেও এখনো চোখেমুখেও ভীতি আর আতঙ্কের ছাপ। ফ্যাল ফ্যাল করে তাঁকিয়ে থাকে। এমনকি লোক ও লজ্জায় ঢাকায় ভর্তি হতে হয়েছে। আদরের সন্তানের জীবনের এ ছন্দপতনে তাঁর অভিভাবকরাও ক্ষুব্দ ও হতাশ। ঘটনার পর পরই প্রাথমিক ও গন শিক্ষা অধিদপ্তরের ডিজির নিকট অভিযোগ দেওয়া হয়। তবে আজও কোন প্রতিকার মেলেনি বরং প্রতিপক্ষের হুমকি ও চাপের মুখে পরিবার নিরাপতাহীনতায় ভুগছেন।

অভিযোগ বরগুনার বেতাগী উপজেলার পূর্ব দেশান্তরকাঠী নব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসাবে গত ৩০ ডিসেম্বর প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় বেতাগী সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে অংশ গ্রহণ করে (তাঁর রোল নং: ম-৪২)। গ্রাম্য পলিটিক্সের প্রভাবে পরীক্ষা চলার ৪৫ মিনিটের মাথায় ফাতিমা আক্তারকে কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া হয়। শিশু শিক্ষার্থী বাবা পেশায় আব্দুস সালাম মিন্টু একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। মা ইসরাত জাহান বেগম গৃহিণী। মিন্টু-ইসরাত দম্পতির ৩ মেয়ে। মেঝ মেয়ে সায়মা আর ছোট মেয়ে আফসানা।

এ নিয়ে কথা হয় শিশু শিক্ষার্থী ফাতিমা আক্তারের মা ইসরাত জাহান বেগমের সঙ্গে। তিনি অভিযোগ করেন, গত ৩০ ডিসেম্বর কেন্দ্রে প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় কর্তব্যরত পরিদর্শক তার মেয়ের কাছে আচমকা গিয়ে লেখা উত্তর পত্র টেনে নিয়ে তার মুখেপড়া মাস্ক সরিয়ে ফেলে। দমক দিয়ে প্রবেশপত্র ও তাঁর ছবি তোলে। পরীক্ষা কক্ষ থেকে টেনে নিচে নামিয়ে কেন্দ্র গেটে তার হাতে ধরিয়ে দেয়। ভয় দেখিয়ে একই সাথে পরীক্ষাকেন্দ্র থেকে দ্রুত যেতে বাধ্য করেন। মেয়ের বাবাকে ভয় দেখান বেশি বারাবারি করলে মেয়েকে নিয়ে জেলে যেতে হবে। নিরুপায় হয়ে চুপ চাপ থেকেছি, কারণ আমাদের টাকা পয়সা নেই, আমরা গরিব। ছোট অবুঝ মেয়ে ভুল করলে পরীক্ষার পর, খাতা বাতিল করতে পারতেন, এভাবে বৃত্তি পরীক্ষা চলাকালীন অবস্থায় মেয়েটিকে বের করে দেওয়া আইনসম্মত হয়েছে কি?

তখন ঐ প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক আব্দুস সোবাহান ও অন্যান্য দায়িত্বরত শিক্ষক ছিলেন তারা বলেন, কেউ কিছু জিজ্ঞাসা করলে বলবেন অসুস্থ তাই নিয়ে যাচ্ছি। এতে তাঁর কোমলমতি শিশু সেই থেকে মানসিকভাবে ভেঙে পরে ভাঙা মনে নিয়ে দিন পার করছে। শারীরিক সমস্যায় ভুগছে। ভালভাবে খাওয়া-দাওয়া করেনা। চোখেমুখে এখনো ভীতি ও আতঙ্ক বিরাজ করে। তার অবস্থা এমন হয়েছে, কখনো কখনো রাতে ঘুমের ঘোরে হঠাৎ চিৎকার করে উঠে। একই সময় কথা হয় শিক্ষার্থী ফাতিমা আক্তারের সঙ্গে।

ফাতিমা বলেন,‘ওই দিনের কথা আমি আর মনে করতে চাইনা।’ ফাতিমার বাবা আব্দুস সালাম মিন্টু বলেন, ফাতিমাকে নিয়ে অনেক স্বপ্ন ছিলো। তা আজ সব ধুলিসাৎত হয়ে গেলো। এ কষ্টের কথা কাউকে প্রকাশ করতে পারছিনা। আমার মেয়ের প্রবেশপত্র সঠিক ছিলো। ঐ প্রতিষ্ঠানের প্রশংসাপত্রও আমার হাতে রয়েছে। তার পরেও একটি শিশু কেন এ অমানবিকতা ও নিষ্ঠুরতার শিকার হলো? পরিবারের আর্থিক দৈনতার মাঝেও তাঁকে সান্তনা দেওয়ার জন্য ঢাকায় ভর্তি করাতে বাধ্য হয়েছি। যে মেয়ে আগে যেখানে সকালে ঘুম থেকে উঠেই স্কুলে যাওয়ার জন্য উদগ্রীব থাকতো। সেই মেয়ের মনে এখন কোন আগ্রহ নেই। নেই পড়ার আনন্দই। শুধু বিষাদের ছাঁয়া। এসব বলে আর লাভ কি? আদরের সন্তানের এ অসহায়ত্ব এখন মুখ বুঝে সহ্য করতে হয়। মনে হয় পরিবার ছেড়ে কোথাও পালিয়ে যাই?

নাম প্রকাশে অনেচ্ছুক স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি জানিয়েছেন, শিশুটি গ্রাম্য পলিটিক্সের শিকার। জমি-জমা নিয়ে তার পরিবারের সাথে বিরোধের জেরে একে-বেঁকে গেল তার শিক্ষা জীবন। কারন এর পেছনে প্রতিপক্ষের হাত রয়েছে। তাদের প্রশ্ন সভ্য সমাজে এটা কিভাবে হতে পারে?’

অবশ্য কেন্দ্র সুপার ও চর ছোপখালী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো: গোলাম সরোয়ার বলেন, শিশু শিক্ষার্থী ফাতিমা অসুস্থতার কারনে পরীক্ষা না দিয়ে কেন্দ্র থেকে চলে যান। তবে রহস্যজনক হলেও সত্য পরীক্ষা কর্তৃপক্ষ কেন্দ্র থেকে শিশু শিক্ষার্থী ফাতিমা আক্তারের চলে যাওয়ার পেছনে অসুস্থতার অজুহাত তুললেও কেন্দ্রের কর্তব্যরত চিকিৎসক জানিয়েছেন, শিশু শিক্ষার্থী ফাতিমা আক্তারের অসুস্থতার বিষয় তারা কিছুই জানেন না। ফতিমার পরিবারের অভিযোগ সবকিছু জেনেও কর্তৃপক্ষ না জানার ভান করছেন।

নাম প্রকাশে অনেচ্ছুক বেতাগী উপজেলার এক অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষা কর্মকর্তা বলেন, শিক্ষার্থী ফাতিমা আক্তারের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ থাকলেও প্রবেশ পত্র ইস্যু থেকে শুরু করে তাকে কেন পরীক্ষায় অংশ গ্রহণের সূযোগ দেওয়া হলো? যখন সূযোগই দেওয়া হলো। তখন অবৈধ বলে ওইভাবে কেন্দ্র থেকে তাকে বের করে দেওয়ার কোন যৌক্তকতা নেই। অবৈধ হলে আইনের আশ্রয় নেওয়া যেত। তানা হলে মানুষের মাঝে কোন প্রশ্নের সৃষ্টি হতোনা। এমনিতেই করোণায় ঝড়ে পড়া শিক্ষার্থীরা এখনো বিদ্যালয়মুখি হয়নি। সেখানে সংখ্যায় একটি হলেও শিশুটিকে অনিশ্চয়তার পথে ঠেলে দেওয়ার যৌক্তিকতা কতটুকু ? তবে রহস্যজণক বিষয় হচ্ছে ফাতিমা আক্তার যে প্রতিষ্ঠানের পরীক্ষার্থী। সেই প্রতিষ্ঠান তালগাছিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুস সোবাহান কারা তার শিক্ষার্থীকে কেন্দ্র থেকে বের করে দিয়েছে ঘটনার দীর্ঘদিন হলেও তা জানার চেষ্টা করেননি। তিনি জানান, কারা, কিভাবে ফাতিমাকে কেন্দ্র থেকে বের করে দেয় তার কিছুই আমি জানিনা। তবে এমন কাউকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছেনা এবং কেউ এর দায় নিতে চায়না।

ঐ সময়ে কেন্দ্র সচিবের দায়িত্বে ছিলেন বেতাগী সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো: গোলাম কবির। তিনি বলেন, বিষয়টি তারও জানা ছিলোনা। যদি উদ্দেশ্য প্রনোদিতভাবে তাকে বের করা হয়ে থাকে সেটা অত্যন্ত দু:খ জনক।

এ বিষয় বেতাগী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো: মিজানুর রহমান খানও দাবি করেন, এটি ঠিক হয়নি। তবে ঘটনার সময় তিনি সেখানে ছিলাম না। এ নিয়ে ইতোমধ্যে সংশ্লিস্ট প্রধান শিক্ষককে শোকজ করা হলেও পরবর্তী আর কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। আশার কথা অভিযোগের প্রেক্ষিতে প্রাথমিক ও গন শিক্ষা অধ


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
এক ক্লিকে বিভাগের খবর