জিএম কাদেরের বিরুদ্ধে স্বাক্ষর জালিয়াতির মামলার তদন্তে পিবিআই
বিজ্ঞ চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিষ্টেড কোর্ট গাজীপুরে জাপা স্বঘোষিত চেয়ারম্যান জিএম কাদের কো চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে এক স্বাক্ষর জালিয়াতির মামলায় তদন্তভার অর্পন করেন পিবিআইকে। মামলাটি দায়ের করেন জিএম কাদের ঘোষিত গাজীপুর মহানগর কমিটির সদস্য কাজী মনির হোসেন রুবেল। যাহার সি আর মামলা নং ৭৩৭/২০২২। মামলাটি পরিচালনা করেন প্রধান আইনজীবী হিসেবে ছিলেন এড. সোহেল রানা।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ যখন অসুস্থ হয়ে সিএমএইচে চিকিৎসাধীন ঠিক তখনই তার সহোদর ভাই জাপা সকল নেতৃবৃন্দের চোখকে ফাঁকি দিয়ে জাতীয় পার্টির একটি প্যাডে প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের স্বাক্ষর কে নকল করে জিএম কাদের নিজে স্বাক্ষর দিয়ে নিজেকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান প্রতিষ্ঠা করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জাপার কয়েকজন নেতা-কর্মীরা বলেন, ব্যাক্তিস্বার্থ ও অতি উৎসাহী গুটি কয়েক সাঙ্গোপাঙ্গকে সাথে নিয়ে অসুস্থ ভাই পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদকে সিএমএইচে শুয়ে রেখে পার্টির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হওয়ার স্বপ্নে মরিয়া হয়ে উঠেন সহোদর গোলাম মোহাম্মদ কাদের। একটি সংগঠন বেঁচে থাকে শুধুমাত্র তার গঠনতন্ত্রের উপর আর সেই গঠনতন্ত্রকে পদদেলিত করে ব্যাক্তি স্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্যে জাপা প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান এর জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে বিন্দুমাত্র দৈর্ঘ্য ছিলনা তথাকথিত কো-চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের। তারই ধারাবাহিকতায় নয় বছরের সফল রাষ্ট্র নায়ক পুনরায় যখন অসুস্থ হন ঠিক তখনি সুযোগ কে পুজি করে মনগড়া চিঠি লিখে নিজে স্বাক্ষর জালিয়াতির মধ্য দিয়ে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ঘোষণা করেন।
আরও বলেন, জাতীয় পার্টিকে ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচানোর জন্য প্রথমে জাতীয় পার্টির এক সদস্য স্বঘোষিত চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালত হাইকোর্টের আশ্রয় নিয়ে রিট করেন। রিট কার্যধারার সকল দালিলিক প্রমাণাদি দেখে বিজ্ঞ মহামান্য হাইকোর্টের বিচারকমন্ডলি রিটটি আমলে নেন।রীট মোকাদ্দমা নং ১৫০৫১/১৯। রীট পিটশন টি পরিচালনা করেন তৎকালীন সাবেক আইন মন্ত্রী ব্যারিস্টার আব্দুল মতিন খুসরু, এড.যুথি প্রমুখ
ইতিমধ্যে ঢাকা জজ কোর্টে বিজ্ঞ ২য় আদালত, সিনিঃ সহকারী জজ মোঃ জুলফিকার হোসাইন রনি মহোদয়ের আদালতে জাপা কেন্দ্রীয় নেতা নাফিজ মাহবুব দেওয়ানী মামলা দায়ের করেন।
বিজ্ঞ আদালত মামলার সমস্ত দালিলিক প্রমাণাদির আলোকে সন্তুষ্ট হয়ে বিবাদী গনের বিরুদ্ধে সমন জারী করেন। যাহার মামলা নম্বর ১২৩৮/২২।
উক্ত মামলায় জিএম কাদের ছাড়াও জাতীয় পার্টির মহাসচিব, সাংগঠনিক সম্পাদক ও নির্বাচন কমিশন সচিবকে বিবাদী করা হয়েছে।
গাজীপুর জেলার বিজ্ঞ অতিরিক্ত সহকারী জজ আদালত ১৮-৫-২০২২ ই তারিখে স্বঘোষিত চেয়ারম্যান জিএম কাদের গং এর বিরুদ্ধে আদালতের আরেকটি মামলায় আবারও সমন জারি করেন। যাহার দেওয়ানী মোকাদ্দমা নং ৯৯/২০২২ ।উক্ত মোকাদ্দমায় স্বঘোষিত চেয়ারম্যান জিএম কাদের ছাড়াও কেন্দ্রীয় মহাসচিব, সাংগঠনিক সম্পাদক , জিএম কাদের ঘোষিত গাজীপুর মহানগরের সভাপতি এম এম নিয়াজ উদ্দিন, সচিব- প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে সমন জারি করেন।
এছাড়াও বাগেরহাট সদর কোর্টে সাংগঠনিক স্থগিতাদেশ বাগেরহাট জেলার বিজ্ঞ সিনিয়র সহকারী জজ ড.মোঃ আতিকুস সামাদ মহোদয়ের আদালতে ০৬-০৬-২০২২ ইং তারিখে স্বঘোষিত চেয়ারম্যান জিএম কাদের গং এর বিরুদ্ধে দেওয়ানি মোকাদ্দমা দায়ের করেন। দেওয়ানী মোকাদ্দমা নং ১৭৭/২০২২।
এ বিষয়ে জাতীয় পার্টির দপ্তরের দায়িত্বে থাকা দপ্তর সম্পাদক নাফিজ মাহবুব এর সাথে ফোনালাপে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের গঠনতন্ত্রের আলোকে জাতীয় পার্টিকে আমরা পুনর্গঠন করছি। অতি দ্রুতসময়ের মধ্যেই জাতীয় পার্টিকে সুসংগঠিত করে দেশের এ চলমান উন্নয়ন কে আরো এগিয়ে নিয়ে যাবার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। আমরা প্রচলিত আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ও বিশ্বাসী বলেই আশা করছি বিষয়টি দ্রুততম সময়ের মধ্যেই নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে আদালতেই নিষ্পত্তি হবে বলে আমরা আশা ব্যাক্ত করছি।