মঙ্গলবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০২:০৫ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ
নাটোরের বড়াইগ্রামে বিএসটিআইয়ের অভিযানে দুই বেকারি কারখানাকে জরিমানা লালমনিরহাটে কলেজের অধ্যক্ষ পদ নিয়ে সংঘর্ষ; যুবলীগ নেতা আটক! লালমনিরহাটে ডাকাত দল গ্রেফতার! কাজিপুরে ডেইরি ফার্মে দুর্ধর্ষ ডাকাতি; পুলিশের গড়িমসিতে ভিন্নখাতে প্রবাহিত হওয়ার শংকা সলঙ্গায় খড়ের পালায় আগুন থানায় অভিযোগ ভাষা শহিদদের স্মরণে বেনাপোল বিনামূল্যে রক্তের গ্রুপ নির্ণয় কর্মসূচি যশোরের নাভারন থেকে ১ কোটি ৫৭ লাখ টাকার ভারতীয় রুপার অলংকারসহ আটক-০২ প্রান্তিক পর্যায়ের পঞ্চাশ হাজার অসহায় মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে কাজ করে ভয়েস অব কাজিপুর  কাঁঠালবাড়িতে প্রতিবন্ধী শিশুদের সহায়তার জন্য কার্যকর সমাধান নিয়ে সংলাপ অনুষ্ঠিত ৫ আগস্ট না হলে শিক্ষা ব্যবস্থা ও দেশ ধ্বংস হয়ে যেত রফিকুল ইসলাম বাচ্চু

দেড় হাজার শয্যা সংস্থানে নতুন ১০ তলা ভবন নির্মাণের সিদ্ধান্ত

রিপোর্টারের নাম : / ১০৫ বার পড়া হয়েছে।
সময় কাল : রবিবার, ৪ জুন, ২০২৩

বৃহত্তর চট্টগ্রামের বিশাল সংখ্যক দরিদ্র মানুষের চিকিৎসায় একমাত্র ভরসাস্থল হিসেবে পরিচিত চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল। অনুমোদিত ১৩১৩ শয্যা থেকে হাসপাতালটি সম্প্রতি ২২’শ শয্যায় উন্নীত হয়েছে।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তথ্যমতে– এতদিন প্রশাসনিকভাবে অনুমোদিত ১৩১৩ শয্যার স্থলে সবমিলিয়ে ৮০০ শয্যার সংস্থান ছিল হাসপাতালে। প্রতিষ্ঠাকালীন নির্মিত ৬ তলা বিশিষ্ট মূল হাসপাতাল ভবনে সবমিলিয়ে ৫০০ শয্যার সংস্থান রয়েছে। পরবর্তীতে দশতলা বিশিষ্ট এনসিলারি ভবন ও কার্ডিয়াক সার্জারি ভবন মিলিয়ে আরো কয়েকশ রোগী সংস্থানের সুযোগ হয়েছে। সবমিলিয়ে বর্তমানে ৮০০ শয্যা সংস্থানের ব্যবস্থা রয়েছে হাসপাতালে। সম্প্রতি ১৩১৩ শয্যা থেকে এ হাসপাতাল ২২’শ শয্যায় প্রশাসনিক অনুমোদন পেলেও সংস্থান রয়েছে ৮’শ শয্যারই। তবে ৮০০ শয্যার ব্যবস্থায় দৈনিক ভর্তি রোগীর সংখ্যা প্রায় তিন হাজার। অর্থাৎ দৈনিক প্রায় তিন হাজার রোগী হাসপাতালের আন্তঃবিভাগের ভর্তি থেকে চিকিৎসা সেবা নেন। প্রতিদিন আউটডোরে সেবা গ্রহণকারী রোগীর সংখ্যাও তিন হাজারের কম নয়।

ফলে হাসপাতালের ফ্লোর (মেঝে) থেকে শুরু করে ওয়ার্ডের বাইরের বারান্দা জুড়েও বিছানা পেতে থাকতে হয় রোগীদের। অনেক রোগীর জায়গা হয় বাথরুমের পাশে। অনেকটা বাধ্য হয়েই গরীব–অসহায় রোগীদের এভাবে সরকারি সেবা নিতে হয় এ হাসপাতালে। রোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকায় দিন দিন পরিস্থিতি আরো নাজুক হচ্ছে। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে অতিরিক্ত দেড় হাজার শয্যা সংস্থানের নিমিত্ত চমেক হাসপাতালে দশ তলা ভিত বিশিষ্ট নতুন দশ তলা ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহন করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। দেশের ৮টি বিভাগীয় সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শয্যা সংখ্যা বৃদ্ধি সংক্রান্ত এক সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। গত ২ মে স্বাস্থ্য মন্ত্রী জাহিদ মালেকের সভাপতিত্বে মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব, চমেক হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শামীম আহসানসহ ৮টি বিভাগীয় সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ও মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা সভায় অংশ নেন। সভায় দেশের ৮টি বিভাগীয় সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অতিরিক্ত শয্যা সংস্থানের নিমিত্ত নতুন ভবন বা অবকাঠামো নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। নতুন দশ তলা ভবন নির্মাণে মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তের তথ্য নিশ্চিত করে সভায় অংশ নেয়া চমেক হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শামীম আহসান আজাদীকে বলেন, আমরা হাসপাতালের শয্যা সংকটসহ সার্বিকভাবে নাজুক পরিস্থিতি তুলে ধরেছিলাম। মাননীয় মন্ত্রী মনোযোগ সহকারে আমাদের কথা শুনেছেন। পরে দেড় হাজার শয্যা সংস্থান হয় মতো দশতলা ভিত বিশিষ্ট নতুন দশতলা ভবন নির্মাণের সিদ্ধান্ত হয়েছে সভায়।

বর্তমানে হাসপাতালে ৮’শ শয্যার সংস্থান রয়েছে উল্লেখ করে হাসপাতাল পরিচালক বলেন, নতুন করে দেড় হাজার শয্যা সংস্থানের ব্যবস্থা হলে সবমিলিয়ে ২২০০–২৩০০ শয্যার সংস্থান হবে। এতে করে তিন হাজার রোগী রাখা অনেকটাই সহনীয় অবস্থায় আসবে। তাছাড়া হাসপাতালে নির্মাণাধীন ১৫ তলা ক্যান্সার ভবনে সাড়ে চারশ শয্যা এবং বিশেষায়িত বার্ন ইউনিটে দেড়শ শয্যার সংস্থান হচ্ছে। বর্তমানে ৮’শ শয্যার সংস্থানের স্থলে প্রায় তিন হাজার রোগী থাকায় হাসপাতালের পরিস্থিতি খুবই নাজুক বলে মনে করেন হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শামীম আহসান। তবে ২২০০/২৩০০ শয্যার সংস্থান হলে হাসপাতালে তিন হাজার বা আরো বেশি সংখ্যক রোগী রাখা ততটা কঠিন হবেনা।

এদিকে, এর আগে চমেক হাসপাতালে বিশ তলা বিশিষ্ট ভবন স্থাপনের একটি প্রকল্প হাতে নেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। প্রকল্পটি অনেকদূর এগিয়েও যায়। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের পুরণো প্রশাসনিক ভবনের স্থলে নতুন ২০ তলা এ ভবন নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। তবে করোনা পরিস্থিতিতে কার্যক্রম থমকে গেলে পরবর্তীতে প্রকল্পটির অগ্রগতি আর জানা যায়নি। এখন দেড় হাজার শয্যা সংস্থানে নতুন করে দশ তলা ভবন নির্মাণের সিদ্ধান্তের কথা জানাল স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

চমেক হাসপাতাল প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, শুরুতে আড়াইশ শয্যার মাধ্যমে চিকিৎসা সেবা চালু হয় চমেক হাসপাতালে। পরবর্তীতে প্রশাসনিক ভাবে শয্যা সংখ্যা ৫০০ এবং এরপরে এক হাজারে উন্নীত করা হয়। ২০০৩ সালের ৩১ জুলাই হাসপাতালের শয্যা সংখ্যা এক হাজার হতে ১ হাজার ১০টিতে উন্নীত করা হয়। এর প্রায় দশ বছরের মাথায় (২০১২ সালের ৩০ আগষ্ট) হাসপাতালের শয্যা সংখ্যা ৩০৩টি বৃদ্ধি করে ১৩১৩ শয্যার প্রশাসনিক অনুমোদন দেয় মন্ত্রণালয়। প্রশাসনিক অনুমোদিত ১৩১৩ শয্যাতেই চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছিল চমেক হাসপাতাল। যদিও অনুমোদিত ১৩১৩ শয্যার বিপরীতে দৈনিক প্রায় ৩ হাজার রোগী ভর্তি থাকে এ হাসপাতালে। এর বাইরে আউটডোরে চিকিৎসা সেবা নেয় আরো প্রায় তিন হাজার রোগী। তবে দশ বছরের মাথায় গত বছর (২০২২ সালে) ফের শয্যা সংখ্যা বাড়ানো হয় চমেক হাসপাতালে। যদিও এবার এক লাফে ৯’শ শয্যা বেড়ে ১৩১৩ হতে মোট শয্যা ২২’শ শয্যায় উন্নীত হয়েছে। চমেক হাসপাতাল ২২’শ শয্যায় উন্নীতকরণ ও বর্ধিত শয্যায় সেবা চালুকরণে গতবছরের (২০২২ সালের) ২৫ মে অনুমোদন দেয় অর্থ মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের উপসচিব মোহাম্মদ শওকত উল্লাহ স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ তথ্য জানানো হয়। পরবর্তীতে (২০২২ সালের) ১৪ জুন ২২’শ শয্যায় উন্নীতকরণে প্রশাসনিক অনুমোদনের বিষয়টি চিঠির মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক ভাবে জানায় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সরকারি স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা–১ শাখার উপসচিব উম্মে হাবিবা কর্তৃক স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে আনুষ্ঠানিক ভাবে এ তথ্য জানানো হয়।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর

এক ক্লিকে বিভাগের খবর